ব্লগের জগতে ‘সামু’ এর বেশ খ্যাতি ও যশ রয়েছে । একঝাক জ্ঞাণী, কলামিস্ট আর চিন্তাশীল লেখকদের সমন্বয়ে ব্লগটি সকল ব্লগারদের প্রথম চয়েজে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ব্লগটিতে আবির্ভাব হয়েছে কিছু বৈচিত্রময় ব্লগারের। যাদের নাম,বক্তব্য, কমেন্ট, ভাষা আর ব্যবহারের ফলে অতি প্রিয় এই ব্লগটি তার সুনাম-খ্যাতি কিছুটা হলেও হারাতে বসেছে। সেই সব ব্লগারদের একটুখানি পরিচয় সম্মানিত ব্লগারদের সামনে তুলে ধরতেই আজকের এই প্রয়াস।
‘কাউয়া’ সমাজের পরিচয়:
১. অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছেন। বাসার সামনে ফুটপাথে দাড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ মাথার উপর হালকা তরল জাতীয় কোন পদার্থের অস্তিত্ব অনুভব করলেন। মাথা থেকে একটু একটু করে পরিধেয় পোষাকে এসে পড়ছে। আপনার কাজ করার মোডটাই নষ্ট করে দিল।
২. অফিসে যাওয়ার সময় হয়েছে অথচ কোন গাড়ী পাচ্ছেন্না। তাতে কি! সময়মত অফিসে যেতেই হবে। ফুটপাথ দিয়ে হেটেই রওয়ানা করলেন। কিন্তু আপনার এই হেটে চলাটাও কার জানি ভাল লাগেনি! সে আপনার উপর কিছু একটা ত্যাগ করে আপনার মেজাজটাই খারাপ করে দিল।
৩. কোন ডাস্টবিনের পাশে দাড়িয়ে রিক্সা বা সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ দেখলেন আপনার পালিশ করা জুতার উপর ময়লা-আবর্জনার টুকরো এসে পড়ছে।
৪. সিএনজি, বাস কিছুই পাননি। রিক্সাই ভরসা। জ্যামে আটকা পড়ে আপনার অবস্থা কাহিল। এমন সময় আপনার শরীরে সাদা-হলুদ মিশ্রিত কিছু জিনিস আবিস্কার করলেন। উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলেন অনেক গুলো প্রাণী কারেন্টের তারের উপর বসে কা কা করছে।
৫. গ্রামে আমাদের মা বোনেরা আচার বা অন্য কোন জিনিস রোদে শুকাতে উঠানে বা চালের উপর দিলেন। কিন্তু বিকেলে দেখা গেল কে বা কারা জানি সব এলোমেলো করে দিয়েছে।
সম্মানিত পাঠক! এ সব কিছুর জন্য কে দায়ী? কোন ক্ষতি না করলেও কে আপনার সব কিছু এমন অনাকাংখিতভাবে বেরসিকের মত নষ্ট করে দিচ্ছে?? জি , আপনি ঠিকই ধরেছেন। তার নামই ‘কাক’। অনেকে তাকে বলেন ‘কাউয়া’।
আমাদের সমাজেও সর্বত্র এমন অসংখ্য মানবরূপী ‘কাউয়া’র উপদ্রব হয়েছে। যারা কখনোই আপনার ভাল কাজগুলোকে সহ্য করতে পারেনা। আপনি যেখানেই যখন সৃজনশীল কিছু করতে যাবেন, সমাজের বা রাষ্ট্রের কল্যাণের চিন্তায় কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন ঠিক তখনই তারা এসে হাজির। কা কা বা কাউ কাউ করে আপনার কান জ্বালা পালা করে দিবে। কখনও বা সদলবলে আক্রমণ করে আপনার সাজানো সবকিছু নষ্ট করে দিবে। ব্লগে, ক্যাম্পাসে বা সমাজে যেখানেই এদের অস্তিত্ব সেখানেই অশুরের বাণী শোনা যায়। তাই এদের উৎপাত থেকে বাচতে আসুন জেনে নিই কাউয়াদের আসল স্বরূপ।
ব্লগে ‘কাউয়া’ চেনার সেরা দশ রেসিপি:
১.যাদের নামের মাঝে এক ধরণের অসভ্য,অশালীন,অশ্লীল ও অহংকারী ভাব ফুটে উঠে তাদেরকে আপনি কাউয়া বলতে পারেন। যেমন-‘ ছাগু ফাইটার’ ‘ফোরটুয়েন্টি’ ‘খারাপ মাল’ কিংবা ‘জ্ঞানবৃক্ষ’ ইত্যাদী।
২.যাদেও ভাষা, বক্তব্য ও কমেন্ট এত কুরুচিপূর্ন যা থেকে সহজেই আপনি তাদের বংশ পরিচয় নির্ণয় করতে পারেন। যেমন ‘ প্রান্তিক চাষা’ ‘দ্রাবিড় বাঙাল’ প্রমূখ।
৩. আক্রমনাত্মক আচরণ আর গালিগালাজের জন্য নোবেল প্রাইজের ব্যবস্থা থাকত তাহলে নিশ্চিতভাবে সে প্রাইজ তারাই লাভ করত।
৪.যারা যুক্তির চেয়ে শক্তি প্রয়োগে আর খারাপ ভাষায় বকুিন দিয়ে আরাম অনুভব করে।
৫.যারা প্রায়ই ছাগু ছাগু বলে চেচামেচি করে ব্লগারের কান ঝালাপালা করার চেষ্টা করে।
৬.প্রায়ই যারা ‘আল্লাহ, রাসূল (স.) এবং ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শনকে নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেয়ার ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করে।
৭. কোরান ও হাদিসের কোন অংশের অসম্পূর্ণ অর্থ করে তা ব্লগে দিয়ে মুসলমানদের মনে সংশয় তৈরীর অপচেষ্টা করে।
৮.আপনি যদি ইসলামের পক্ষে কথা বলেন, তাদের পোস্টে মাইনাস দেন অথবা ভাল কোন পরামর্শ দেন তাহলে আপনাকে তারা শিবির, রাজাকার, পাকিস্থান প্রেমিক ইত্যাদি উপাধি দান করে। যদিও এদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। যেমন: ‘ বাংলা৭১’ ‘ কমনসেস’ প্রমূখ।
৯.যারা ইসলামী দল ও ইসলামী দলের বিভিন্ন নেতাদের কটাক্ষ করে মিথ্যা, বানোয়াট ও আজগুবি গল্প লিখতে ও তা পোস্ট করে খুব আনন্দ পায়। পারলে তাদেরকে এখনই ফাসি দিয়ে দেয়।
১০. স্বদেশী সংস্কৃতি নয়, পার্শ্ববর্তী একটি দেশের সংস্কৃতিই যাদের কাছে বড় এবং যাদেরকে প্রায়ই সে দেশের সমাজ ব্যবস্থার পক্ষে সাফাই গাইতে দেখা যায়।
সম্মানিত পাঠক, একটা চির সত্য কথা হচ্ছে যে, কোন খারাপ বিষয় থেকে যদি আপনি বাচতে চান, নিজের আত্মা ও মননকে পবিত্র রাখতে চান তাহলে সবার আগে তার পরিচয় আপনাকে ভাল করে জানতে হবে। না হলে সাময়িক ভাবে তাদের খপ্পর থেকে বাচতে পারলেও স্থায়ীভাবে সম্ভব নয়। তাই আসুন এই ‘ কাউয়া’দের নিদর্শন
সম্পর্কে অবগত হই, সমাজ জীবনকে পবিত্র ও কলুষমুক্ত রাখার চেষ্টা করি। অসমাপ্ত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




