somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনৈতিক দেউলিয়াপনাঃ দেশপ্রেম এবং উত্তোরণ

১২ ই মে, ২০২২ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
দেশপ্রেম ও নীতিবিবর্জিত রাজনীতি আমাদের প্রচণ্ড রকমে গ্রাস করেছে। সরকারী আর বিরোধী দলই বলুন তাদের কজনের মাঝে দেশপ্রেম, নীতিবোধ রয়েছে?


শ্রীলঙ্কাকে দেখে আজকাল কিছু বিরোধী দলীয় রাজনীতিক স্বপ্ন দেখছেন, অচিরেই বাংলাদেশের এমন অবস্থা হোক, যেন তারা সরকার পতন করে ক্ষমতার মসনদের অধিকারী হতে পারেন। ক্ষমতার লোভ আমাদের সকল রাজনীতিকদের অন্ধ করে রেখেছে, একই সাথে সম্পদের লোভ। আর ক্ষমতা পেলে যে অতি অল্প সময়ে অগাধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া যায়, তা তো বর্তমান সরকারের বহু নেতা কর্মী চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন। চাল চূলাবিহীন অনেক কর্মীও আজ অবৈধভাবে আঢেল সম্পদের মালিক। বিগত সরকারগুলোর সময়েও একই ঘটনা ঘটেছে, এর যথেষ্ট উদাহরণও রয়েছে।
সকল কালেই এ দেশ বহু সমস্যায় জর্জরিত। স্বাধীনতার আগে যেমন ছিল, পরেও রয়ে গেছে তেমনই সমস্যা। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা কর্মী নিজেদের আখের গোছানোর ধান্ধা করেছে সব সময়, অল্প কজন ব্যাতিক্রমী ত্যাগী নেতা ছাড়া। এখনো অনেক সমস্যা রয়ে গেছে, এগুলো সাধারণ জনগণের সমস্যা, এদিকে কারোরই ভ্রুক্ষেপ নেই। কোভিডএর প্রভাবে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। অনেকের আয় রোজগার অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেকে চাকুরী হারিয়েছেন। নতুন কর্মসংস্থানের সংকট যেন বেকার সমস্যার আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। এর মাঝে সরকার জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে চরম সংকট ঘটিয়েছেন। এর সাথে তাল মিলিয়ে সকল প্রকার দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ঘটিয়ে জীবন যাপন দুর্বিসহ করে তুলেছেন। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ভোজ্য তেলের কৃত্রিম সংকট। এ নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতাদের কোন বিকার নেই। তারা স্বপ্ন দেখছেন কোন একদিন যদি হেফাজতি বা জেহাদী নেতারা শোরগোল তুলে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে পারে সেই সুবাদে ক্ষমতার সুযোগ হয়। সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে তলে তলে সেই উস্কানীও চলছে। নিদেন পক্ষে শ্রীলঙ্কার মতো যদি দেউলিয়া হয়ে সরকার অচল হয়, সুযোগ তখন নিশ্চয়ই হবে ক্ষমতায় যাবার। যারা দেশকে দেউলিয়া বানিয়ে ক্ষমতায় আরোহনের স্বপ্ন দেখেন, তারা আর যাই হোক, দেশপ্রমিক নন। দেশপ্রেম বিবর্জিত রাজনীতিক সকল সময় সকল দেশের শত্রু। এই শত্রুদের বোঝা কাঁধে বয়ে চলছে আমাদের বাংলাদেশ।
সরকারী দলে দেশপ্রেম বিবর্জিত দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক বেড়ে চলেছে হু হু করে। তাদের কারণেই আজ দেশের এই সংকট। দূর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহারে দেশ আকণ্ঠ নিমজ্জিত। সরকার কোন দপ্তরে দূর্নীতি নেই? স্বয়ং দূর্নীতি দমন কমিশনই আজ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সেখানে সৎ ও নিবেদিত কর্মকর্তারা নাজেহাল হচ্ছেন। দুর্নীতি করে সরকারী দলের ছোট বড় সব শ্রেনির নেতাকর্মী অগাধ সম্পদের মালিক হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেকেই বিভিন্ন দেশে জায়গাজমি কিনেছে, বাড়িঘর কিনেছে। কেউ কেউ পরিবারকেও পাঠিয়ে দিয়েছে। এদের আয়ের উৎস কোথায়? দায়িত্বশীল কেউ কি কখনো খোঁজ করেছে? কার বা কাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এসব হচ্ছে? এ বিষয়ে সরকারপ্রধানের কোন দুশ্চিন্তা আছে বলেও মনে হয় না। বিরোধীদলগুলোও কোন উচ্যবাচ্য করে না। করবেও না। কারণ তাদের ইতিহাসও ভাল না। আর ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলেও ওসব দুর্নীতি ছাড়বে না। তাই যতসব উটকো বিষয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়ে হম্বি তম্বি করছে। জনগণের স্বার্থে ওরা নেই। যারা সাধারণ জনগণ নিয়ে ভাববে না, জনস্বার্থে কথা বলবে না, তাদের পাশে জনগণকে প্রত্যাশা করবে কিভাবে?


অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে, কতটুকু সুখভোগ করা যায়? সামনের মানুষ সালাম জানালেও পশ্চাতে কেউ তাদের ভাল বলে না। দুর্নাম কোনভাবেই মোচন হয় না। মানুষ তাকে চোর, বাটপার, দুর্নীতবাজ হিসেবেই আখ্যায়িত করে। রাজনীতি হচ্ছে জনসেবার একটি স্বাধীন ও প্রত্যক্ষ মাধ্যম। নীতিহীন ব্যবসায়ী, আমলা আর চোর বাটপাররা রাজনীতিতে ঢুকে একে কলুষিত করেছে। এদের প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবী। অন্তরে দেশপ্রেম ও জনদরদ নিয়ে রাজনীতি করুন। জনগণের পাশে থাকুন, তাদের সুখ সুবিধার কথা ভাবুন, কল্যাণে কাজ করুন। অন্যায়-অত্যাচার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। লোভ ও দম্ভ সংবরণ করুন। এদেশে রাজনীতি করে পরদেশে আশ্রয় বা আবাস গড়তে হবে না। নিজের দেশই স্বর্গ হয়ে ধরা দিবে। নিজের পরিবারকে নৈতিক ও মানবিক শিক্ষার আওতায় আনুন। সম্পদের পাহাড় গড়ার জন্য ভিক্ষুকের মতো হন্যে হয়ে ছুটতে হবে না। আপনার ঘরে যে মানব সম্পদ রয়েছে এঁরাই আপনাকে সমৃদ্ধ করবে, সুখী করবে। আপনার দেশে যে জনগণ রয়েছে তাঁরাই আপনাকে ভালবাসা দিবে, সম্মানিত করবে। আপনার রাজনীতি হবে মহামান্বিত। দেশ হবে সমৃদ্ধ।
(চিত্রঃ নেট থেকে সংগৃহীত ও সম্পাদিত)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০২২ রাত ১০:২২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×