somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রাম্পের বিজয়ে বিশ্বকে কি বার্তা দিল যুক্তরাষ্ট্রের জনগন ?

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লেখতে অনেক দেরী হয়ে গেল। সময় পাচ্ছিলাম না। অবশেষে লিখলাম। কিছুদিন আগে হলেও বিষয়টি আমার কাছে গুরুত্ব মনে হয়েছে তাই লিখলাম।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে গেল গত মঙ্গলবার (০৮/১১/১৬)। এই নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি ছিলো পুরো বিশ্বের। আর আমি বিশ্বের বাইরের কেউ নই। সংগত কারনে সকলের মতো আমিও মোটমুটি খবর রাখার চেষ্টা করেছি এই আলোচিত নির্বাচনের দিকে। এই নির্বাচন ছিলো যুক্তরাষ্টের যে কোন নির্বাচন থেকে আলোচিত। আমেরিকায় ২১৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হতে যাচ্ছে নারী প্রেসিডেন্ট এমনই আভাস দিচ্ছিল সে দেশের সংবাদ মাধ্যম। আর এটাই ছিলো আলোচিত হবার প্রধান কারণ। হিলারি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে থাকে আমেরিকার প্রায় সকল সংবাদ মাধ্যম। আর আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে থাকে বিশ্বের সকল সংবাদ মাধ্যম। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমের তথ্য ভুল প্রমাণিত করে নির্বাচনের ফলাফল হলো উল্টো। সংবাদ মাধ্যম কি একটু বুঝতে সক্ষম হননি যে তারা যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল । তবে তারা ভুল তথ্য দিয়ে যে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে সে কথা বলাই যায় । তবে এই নির্বাচনে যে দুটি দিক ফুটে উঠল বিশ্ববাসীর কাছে সে কথাই বলাই যায়।

আর সে দিকগুলো হলো:

১। মিডিয়ার অবস্থান ও মিডিয়ার উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস।
২। আমেরিকার সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

১। মিডিয়ার অবস্থান ও মিডিয়ার উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস:
মিডিয়ার অবস্থানটা দুই দিক থেকে দেখা যায়।
ক. মিডিয়ার অবস্থান
খ. মিডিয়ার উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বা
ক. মিডিয়ার অবস্থান:
বর্তমান বিশ্বে মিডিয়ার গুরুত্ব অপরীসীম। আমরা এখন যা দেখি তা মিডিয়ার চোখেই দেখি, যা শুনি মিডিয়ার বলা কথাই শুনি। মিডিয়া রাতারাতি অপরাধীকে সাধু বানান আবার সাধুকে অপরাধী বা অপরাধীকে অপরাধী। যাই মিডিয়া বর্তমান বিশ্বে গুত্বের দাবিদার এ কথা বলাই চলে। আমাদের সকাল শুরু হয় মিডিয়ার পানে তাকিয়ে। আবার যখন দিন শেষ করি যত ব্যস্ততাই থাকে না কেন মিডিয়া চেহারা দেখেই দিনটি শেষ করি। মিডিয়া শুধু গনতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে রাখেনি। মিডিয়া মানব জীবনের ব্যক্তিগত জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে রেখেছে।

খ. মিডিয়ার উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস:
এক সময় মিডিয়াকে সাধারণ মানুষ অন্ধের মতো বিশ্বাস করতো। এখন মিডিয়া বিশ্বাস করে তবে আর আগের মতো না। মিডিয়া এখন হলুদ সাংবাদিকতা দিকে ঝুঁকে পড়ায় মিডিয়া থেকে বিশ্বাস কিছুটা হলেও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। এখন আর মিডিয়া যা বলছে তা সবাই বিশ্বাস করছে না। আর এর তাজা প্রমাণ হলো আমেরিকার সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন। মিডিয়া চেয়েছিলো নানা পরিসংখ্যানের মিথ্যা অপপ্রচারে নিলজ্জের মতো হিলারিকে জিতিয়ে দেয়া। কিন্তু মিডিয়া এ ক্ষেত্রে ব্যর্থই হয়েছে বলাই যায়। আমেরিকানরা মিডিয়ায় প্রকাশিত হিলারির জনপ্রিয়তাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ট্রাম্পকে তাদের ৪৫ তম প্রেসিডিন্টকে বেছে নিয়েছে। সে দেশের প্রথম সারির সকল সংবাদ মাধ্যম হিলারিকে প্রেসিডিন্ট বানানোর এজেন্টা নিয়ে কাজ করছে ওপেনেই। আমরা দূরে বসে সেটা বুঝতে অক্ষম হলেও আমেরিকানরা সেটা বুঝতে ভুল করে নি। কারণ এখন আর আগের মতো মিডিয়ার উপর অগাধ বিশ্বাস নেই সাধারণ জনমণে। বাংলাদেশেও হলুদ সাংবাদিকতা আরো প্রকট। আর সারা বিশ্বের মিডিয়া তো মুসলমান বিরুদ্ধে অপপ্রচার সর্বদাই চালাচ্ছে মিডিয়ার উত্থানের পর থেকেই। আর মায়ানমারে মুসলিম নির্যাতন আর তেমন গুরুত্ব পায় না। কিন্তু বিশ্বব্যাপি গুরুত্ব পায় গুলশান হামলা। যেখানে ২৫ থেকে নিহত হয়েছে ৩০ জন। অথচ মায়ানমারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। আর তাতেই শান্তিতে নোবেল পেয়েছে তাদের নেত্রী। কোন হত্যা বা নির্যাতন মেনে নেয়া যায় না। গুলশান হামলার জন্য আমরা জাতি হিসেবে লজ্জিত। এমনটা কখনো আশা করিনি। যাই হোক আলোচ্য বিষয় থেকে দূরে যাবার জন্য দু:খিত। এই নির্বাচনে প্রমাণ হলো মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও তাদের সকল কথা বা পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্য নয়। মিডিয়া হিলারির জনপ্রিয়তা বেশি বলে প্রচার করে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর মার্কেট শোচনীয় ভাবে পরাজিত যে হয়েছে সে কথা বলাই যায়।

২। আমেরিকার সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন:
এই নির্বাচনে মূলত আমেরিকানদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে বলে বলাই যায়। আমেরিকানরা ২১৭ বছরেও তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে পারেনি। সেটার অন্যন্য এক উদাহরণ এই নির্বাচন। তারা তাদের দেশে কোন নারীকে আজ পর্যন্ত ক্ষমতার শীর্ষ আসনে বসান নি। অথচ তারাই বিশ্বকে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে সবক দিয়ে বেড়ান অবিরাম। মনে হয় তারা নারীর ক্ষমতায়নের একমাত্র ঠিকাদার। হয়ত অনেকেই বলবেন দেশে এভাবে ওভাবে নারীর ক্ষমতায়নের ব্যবস্থা আছে। নারীর স্বাধীনতা আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন এমন দেশে নারীর স্বাধীনতার নামে অশ্লীলতা আর নারীকে পণ্য হিসেবেই বেশি ব্যবহার করা হয়। তাদের শীর্ষ স্থান দিতে তারা রাজি নয়। নারী পশ্চিমা বিশ্বের কাছে পণ্য ছাড়া আর কিছু নয়। আর এমন দৃষ্টিভঙ্গি আমেরিকায় প্রকট আকার ধারণ করেছে। ২১৭ বছরে পাল্টায়নি এমন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায় নি। কোটি বছরেও যে পাল্টাবে এমন নিশ্চয়তা দেয়ার কোন যুক্তি আমার কাছে নেই। তবে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আল্লাহ ভালো জানেন।

তাছাড়া বেশির ভাগ আমেরিকানরা এখন বর্ণবাদী প্রথা থেকে বের হতে পারেননি। শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গের যে দ্বন্ধ। সেই দ্বন্ধ থেকে বের হতে পারে নি বিশ্বের ক্ষমতাধারী দেশটি। আর শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গের যে বিরোধ তার প্রভাব পড়েছে এই নির্বাচনে।

(বি:দ্র: এই লেখাটিতে আমেরিকার অধিকাংশকে বোঝানো হয়েছে সকলকে নয়।)




সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×