somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৭ কলেজের শিক্ষার্থী, রোহিঙ্গা ও অপু বিশ্বাস এই তিনটিই এখন অবহেলিত

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লেখাটি সাংবাদিক ‍আহমেদ ফেরদাউস খানের ফেসবুক থেকে নেয়।



ফেব্রয়ারির ১৬ তারিখ ঢাবির অধিভুক্ত হওয়া ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা, বার্মার রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা ও চিত্র নায়িকা অপু বিশ্বাস এ বছর (২০০৭ সালে) সবথেকে বেশি আলোচনায় ছিলো এবং এখনো আছে।

দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য এই তিনটির মধ্যে বাস্তবে তেমন মিল না থাকলেও ‘আবহেলা’ নামের মৌলিক একটা মিল রয়েছে। অপু বিশ্বাস শাকিব খান কর্তৃক রোহিঙ্গারা বার্মার সেনাবাহিনী ও সরকার কর্তৃক ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির ও সরকার কর্তৃক।

অপু বিষয়টা মোটামুটি মিল হলেও রোহিঙ্গারা এবং ৭ কলেজ এখনও অবহেলায় পড়ে আছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের ইতিহাস তো আমরা কম বেশি সবাই জানি। তাদের উপর এমন নির্যাতন না হলে হয়ত রোহিঙ্গাদের আমরা এতো পড়তাম না, জানতামও না। তারা নিজ দেশেও পরদেশী হয়ে বাস করছে অনেক বছর যাবত। এবার বার্মার সরকার ও সেনাবাহিনী রোহিঙ্গারা যে মানুষ তা ভুলে গেছে। দেশটির পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে রোহিঙ্গা নিধন। এমন কোন খারাপ কাজ নেই যা করেনি দেশটি। কোন উপায় না পেয়ে জীবন বাঁচাতে কষ্ট করে বাংলাদেশে ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা এক মাসেই আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশ আশ্রয় দিলেও এ কথা সত্য যে তাদের এ দেশ নয়। এটা তারাও ভালো করে জানে।

তবে, এখানে তাদের অসহায়ত্ব চরমভাবে ফুটে উঠেছে। এক কথায় রোহিঙ্গাদের দেশ থেকেও নেই। এখানে রোহিঙ্গারা তাদের দেশ কর্তৃক চরম অবহেলা ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তেমনি ভাবে রাজধানীর সরকারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরাও নিপীড়ন, চরম অবহেলা ও অপমানের শিকার হচ্ছেন। হয়ত অনেকে বলবে নিপীড়ন কোথায় হলো-? তাদের জন্য উত্তর হলো দুটি চোখ কেড়ে নেয়া এর থেকে কম কিসে। হয়ত রোহিঙ্গাদের মতো জীবন শেষ হচ্ছে না। তবে শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে এই ৭ কলেজ।

ঢাবির সাবেক ভিসি আ. আ. ম. স. আরেফিন সিদ্দিকির পিড়াপিড়িতে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করে সরকার। ঢাবির অধিভুক্ত করতে ঢাবিই সবথেকে বেশি ভূমিকা পালন করছে। আর্থিক লাভবান হবে বলে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিংহভাগ আয় করত এই ৭ কলেজ থেকে। সেখানেই লোভ লেগেছিলো আরেফিন সিদ্দিকীর। সাবেক কলিক এতো আয় করছে, দেখি আমিও কিছুটা আয় করতে পারি কিনা-? সেই জায়গা থেকেই সরকারকে পিড়াপিড়ি করেছেন তিনি।

৭ কলজের কোন শিক্ষার্থী বা শিক্ষক কখনো বলেনি আমরা ঢাবির অধিভুক্ত হতে ইচ্ছুক। তারপরও সরকার ঢাবির পিড়াপিড়িতে অধিভুক্ত করেছে। কিন্তু অধিভুক্ত হওয়ার পর শুরু হয়েছে নানা ধরনের হয়রানি, অবহেলা ও নিপীড়নের। নিজেদের ইচ্ছায় অধিভুক্ত করার পরও শুরু কয়েছে বিমাতাসূলভ আচরণ। ব্যাপারটা এমন যে ‘ভালোবেসে বিয়ে করে বাচ্চা জন্মদানের পর বাচ্চার দায়িত্ব নিলেও বাচ্চার মায়ের দায়িত্ব না নেয়ার মতো’। মোটা অঙ্ক আয় করতে চাইছে, অথচ তাদের মৌলিক অধিকারটুকু না দিয়ে অবহেলা ও নিপীড়ন চালাচ্ছে।

অধিভুক্ত হওয়ার ৮/৯ মাস পার হলেও দিচ্ছে না রেজাল্ট। ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে গুলি করে অন্ধ করে দেয়াসহ নানা বিমাতা সূলভ আচরণ করছে ঢাবি প্রশাসন। মিডিয়ার সমালোচনায় মাস্টার্সের পরীক্ষা নিলেও পরে শিক্ষার সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখ অনার্স ৩য় বর্ষের পরীক্ষা হবার কথা থাকলেও এখনো রুটিন প্রকাশিত হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা আশঙ্কায় আছে পরীক্ষা আদৌ হবে কিনা। ২য় ও ৪র্থ বর্ষের রেজাল্টের কথা তো তারা ভুলেই গেছে। জাবির উপর দোষ চাপিয়ে পাড়ে পেতে চাচ্ছে ঢাবি। এক শিক্ষার্থীকে অন্ধ করা পুলিশও পাড় পেয়ে যাচ্ছে স্ব-গৌরবে। এখন জাতি অপেক্ষায় আছে গুলি করা পুলিশের প্রোমোশন হবে কবে সেদিনের। সেই প্রোমোশন দেয়ার অনুষ্ঠানটা যেন একটু ঝাঁকঝমকপূর্ণ হয়, সে দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে।

ঢাবির ভিসি চেঞ্চ হলে ৭ কলেজের শিক্ষার্থী একটু আশার আলো দেখছিলো। তারা ভাবছিলো এই চেঞ্চ হয়ত তাদের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসছে। কিন্তু শেষমেষ সে আশায় গুড়েবালি। তার কথায় শুনে সবাই আশাহত হয়েছে। তার অফ রেকর্ডের কথাগুলো সেখানে থাকা ছাত্রদের অবাক করেছে। যদিও তা গণমধ্যমে আসেনি। এছাড়া রেকর্ডে তিনি রেজাল্ট দেয়ার কোন সময় বলতে পারেন নি। তিনি বলেছেন ৭ কলেজ এখন তাদের মাথার ব্যাথা হয়ে দাড়িয়েছে।
এছাড়াও নানা ভাবে এই ৭ কলেজের শিক্ষার্থিদের নানাভাবে অপমান করছে ঢাবি। এটা করতে পারবে না, ওটা করতে পারবে না, সেটা করতে পারবে না।

৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের একবার হঠাৎ করে ঢাবির মাঠ ব্যবহার অনুমতি দিয়ে বসলেন। এরপর তা বাতিল করলেন। ব্যাপার এমন যে এই ৭ কলেজের অনুরোধে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। যা অপমানের শামিল। এখন কথা হলো ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা কি ঢাবির মাঠে খেলতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে ? তাছাড়া তারা তো মাঠে খেলার অনুমতিই চাইনি। তাহলে নিজেরা দিয়ে, আবার ব্যবহার করতে পারবে না বলে কেন অপমান করছে তারা-? এই ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা তো মাঠ নয়, পড়াশুনা করতে চায়। মাঠে খেলতে চাচ্ছে না তো স্যার।

এই ৮/৯ মাসে স্থবির হয়ে পড়েছে ৭ কলেজের পড়ালেখা। কোটি কোটি টাকা আয় কিভাবে করতে হবে সে চিন্তায় ব্যস্ত ঢাবি। কয়েকদিন আগে ঢাবি ৩য় বর্ষের মানউন্নয়নের ফরম ফিলাম করেছে। সেখানে বাড়তি টাকা নিচ্ছে ঢাবি। যা জাবি থেকে অনেক বেশি। এই ইয়ারের পরীক্ষা নেয়ার কথা আছে ১৬ অক্টোবর। কিন্তু আজ ২ অক্টোবর পর্যন্ত কোন রুটিন প্রকাশ করেনি। এভাবে প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে। এবার ‘৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির শিক্ষার্থী নয়’ বিতর্ক নিয়ে শেষ করছি। ঢাবির শিক্ষার্থীরা বলছে ‘৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির শিক্ষার্থী নয়’ এর উত্তরে বলবো ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা কখনো ঢাবির শিক্ষার্থী হতে চায় না। তবে ঢাবির শিক্ষার্থীদের বলব ‘Affiliate’ শব্দটি যেন ভালো করে শিখে নেয়। ধন্যবাদ সকলকে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৪২
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×