মানুষের যুক্তির অসারতায় আমি এখনও বিস্মিত হই। হয়তো মানুষের বিবেচনাবোধ সামান্য উন্নত হবে নিয়ত চর্চায় এই আশা এখনও গোপনে মাথায় রাখি বলেই হয়তো এমন বিস্মিত হওয়া। তবে আবু মুস্তাফিজের মন্তব্যটা এখন ঝুলিয়ে রাখি পটভূমিতে। ভুদাই বড় হইলেও ভুদাই হওন ছাড়ে না।
ছোটো বেলায় কিছু হইলেই শুনতাম" ভালো মানুষের বাপ আঁটকুরা।"
আঁটুকুরা শব্দের অর্থ জানলাম পরে, যার সন্তান জন্ম দেওয়ার সামর্থ্য নাই সেই আঁটকুরা হয়। দ্্বিমুখী ছুড়ি এটা। অর্থ হয় এমন- ভালো মানুষ জন্মায় না, কারন এমন কোনো মানুষ নেই যারা ভালো মানুষের জন্ম দিতে পারে। অন্য অর্থটা হলো ভালো মানুষেরা সব বেজন্মা হয়।
তবে ভালো মানুষের বাপ আঁটকুরা শব্দটার সাথে সবচেয়ে বেশী মিল পাই আমি যীশুর। বেচারা ভালো মানুষ ছিলো এটা সবাই স্ব ীকার করে নেয়। মানুষের মাঝে প্রেম বিলাইতে নিতাই আসছিলো নদীয়ায় সেটাও 1500 সালের দিকের ঘটনা। এর আগে মানে 1500 বছর আগে যীশু এসেছিলো বিশ্বে প্রেম বিলাইতে। বিলাইবো প্রেম জনে জনে- এমন একটা ধারনাও তৈরি করেছিলো সে। কতটা সত্য এ ধারনা জানি না। তবে আমার যে কয়জন ধর্মানুরাগী বন্ধু আছে তাদের কাছে শুনে এমনটাই ধারনা হয়েছে আমার।
অন্য একটা প্রবাদ মনে পড়ছে এখন- প্রবাদ না ঠিক বাস্তবতা- কাকের বাসায় কোকিলের ছা- যারা কখনই আপন হয় না। কোকিল বেচারা চাল্লু জিনিষ বলতে হবে, কাউয়ার বাসায় গিয়া ডিম পাইড়া আসে, কাউয়া নিজের সন্তানের মতো পাইলা পুইষ্যা বড় করে এর পর একদিন কোকিল বেচারা কুহু কুহু করতে করতে উড়াল দেয়- স্বজাতির স্বভাব ছাড়ে না তবে স্বজন বিরোধীও কওয়া যায় তাদের।
আবু আলিবের কথা মনে পড়ে এসময়ে। বেচারা অনেক কষ্ট কইরা মুহাম্মদরে পালছিলো। অনেক পরিশ্রম করছে, শেষ পর্যন্ত বংশের দোহাই দিয়া মুহাম্মদরে রক্ষা করছে- কিন্তু মোহাম্মদ ঠিকই তাই পোলারে বিপথগামী করলো। স্বজাতির বিরুদ্ধে লড়তে বাধ্য করলো ধর্মের দোহাই দিয়া।
বেচারার কপালে বেহশত নসীবও হইলো না। মুহাম্মদ বেহেশতের ঠিকাদারি নিছিলো এইটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। যারে তারে বেহেশতের টিকেট দিয়া দিতো, হাতে ক্ষমতা থাকলে আমিও দিতাম, যে চাইতো তারেই দিতাম, এত ঝামেলায় রাখতাম না , সবাইরেই বেহেশতে পাঠাইতাম। জীবনটা কষ্টে সৃষ্টে কাটাইতাছে। তাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন করতে পারি নাই কিন্তু তাদের মৃতু্যপরবর্তি সময়ে একটা ভালো জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দিতে পারতাম।
এই কোকিল ছানা মুহাম্মদকে আবু তালিবকে গছিয়ে দিলো কে? তার মাতা? তার দাদা? তার জন্মের পূর্বে মরে যাওয়া বাবার প্রতি মুত্তালিবের স্নেহ? ভাতৃসন্তানের প্রতি প্রেম না কি সেই সময়ে হিব্রু ভাষীদের ভেতরে প্রচলিত ট্যাবু? ভাইয়ের মৃতু্যর পর সন্তানের দেখভাল করা- এই সেমেটিক ধারনা- যে ভাইয়ের মৃতু্যর পর তার বৌকে দেখে রাখা দায়িত্ব ভাইদের। বাইবেলে নিশ্চিত ভাবেই এদের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষিত- যারা তাদের ভাইয়ের বিধবাকে বিয়ে করে সন্তান উৎপাদন না করে তাদের প্রতি ফেরেশতাদের লানত বর্ষিত হয়। সেই রকম কোনো সূত্রে হয়তো আবু তালিবের মুহাম্মদের প্রতি স্নেহ ভাব জাগরুক হইছিলো।
আমরা সামাজিক প্রথার দাসত্ব করি। এমন সেমেটিক প্রথার উত্তরাধিকারি কুরাইশ বংশ। তারা বনিঈ ইসরাঈল। ইব্রাহিমএর উত্তর পুরুষ। সেই বনিঈ ইসরাঈল গোত্রের মধ্যে এইসব বিবাহবিষয়ক সামাজিক প্রথা বিদ্যমান ছিলো। এইসব প্রথা না পালন করার জন্য সামাজিক ভাবে হেয় করার উদাহরনও প্রচলিত ছিলো।
তবে যাই হোক ভাইয়ের ছেলে কিংবা সামাজিক প্রথা অনুযায়ি তার হবু স্ত্র ীর সন্তানের প্রতি স্নেহটা আজীবন বহাল ছিলো এমনটাই ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।
তবে পর কখনও আপন হয় না। যম জামাই ভাগনা তিন নয় আপনা প্রবাদের বাইরেও আরও একটা প্রবাদের জন্ম হয়ে উঠতে পারে
ভালো মানুষের বাপ আঁটকুরা, যীশু ভালো জানে লোকে
কাকের বাসায় কোকিলের ছানা- কুহু কুহু সুরে ডাকে
স্বজন বিরোধি, সমস্যা কি?
আমরা এমন কোকিলের অনুসরন করি অন্ধ ভাবেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



