somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইনসেস্ট হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব?

০১ লা জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উডি এলেন এবং তার প্রাক্তন স্ত্রীর পালক কন্যার প্রেম, বিবাহ একটা সময়ে ব্যপক আলোড়ন তুলেছিলো সংবাদপত্রে, যদিও এটা নিষিদ্ধ হওয়ার মতো কোনো সম্পর্ক ছিলো না, বরং পালক পিতা-মাতা সম্পর্কে যে শুদ্ধতার বোধ কাজ করতো মানুষের ভেতরে, সেই শুদ্ধতার বোধকে আহত করেছে।

আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন ১৯৯৭ সাল থেকে সেখানে সংঘটিত ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগের পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে- ১৯৯৭ সনে শতকরা ৩৫ শতাংশ শিশুর যৌন নিপীড়ক ছিলো তার বাবা, ভাই এবং মা।
১৯৯৮ সালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫ শতাংশ, এবং ১৯৯৯ সালে সেটা ৪৫ শতাংশেই স্থির থাকে, সেই পরিসংখ্যান বলছে ডাবলিন শহরে শিশুদের যৌন নিপীড়নের প্রায় অর্ধেকই সংঘটিত হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের হাতে , যাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে এবং শতকরা ৫০ শতাংশ ধর্ষণ করছে আত্মীয় স্বজন। যদি আমরা পরিসংখ্যানটির দিকে তাকাই, তবে একটা ভয়াবহ সত্য উপলব্ধি করবো, শিশুর উপরে যৌন নির্যাতনকারী কিংবা চাইল্ড মোলেস্টর আসলে জঙ্গলে কিংবা অপরিচতি মানুষের ভেতরে থাকে না, বরং নিপীড়িত ৪জন শিশুর ৩ জনই নিপীড়িত হয়েছে তাদের কাছের আত্মীয়দের হাতে।

এসব দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী যৌননিপীড়ন এবং ধর্ষণের কোনোটা কোনোটা এসেছে সংবাদের পাতায়, এটা পড়ে মানুষ শিউড়ে উঠেছে, এবং সংবাদপত্র এবং তার প্রকোপ যেহেতু অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেই, সুতরাং পরিসংখ্যানে যে হার উঠে এসেছে, বাস্তবের পরিস্থিতি তার তুলনায় ভয়াবহ হওয়াটাই স্বাভাবিক।

শিশু কোথাও নিরাপদ নয়, এমন কি নিজস্ব গৃহে, গৃহপরিচারিকা কিংবা গৃহপরিচারক, বাবা, মা, ভাই, মামা, চাচা, কেউই শিশুর রক্ষক নয়- আইওয়া স্টেট আইন করেছে আদালতের দন্ডপ্রাপ্ত কোনো শিশু নিপীড়ক স্কুল, খেলার মাঠ কিংবা বিনোদন পার্কের আশে পাশে ১ মাইলের ভেতরে বসতি গড়তে পারবে না, কিন্তু আইওয়া স্টেট কি প্রতিটা শিশুকে নিজস্ব অনাথাশ্রম কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে পারবে?

তবে কি আমরা শিশুদের জন্মের পর হাসপাতাল থেকে বাসায় না নিয়ে এসে রেখে আসবো রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে, যেখানে অন্তত তারা যৌন নিপীড়নের শিকার হবে না?

ইনসেস্ট বিষয়ে মানুষের একটা ট্যাবু আছে, তারা এই বিষয়টা ভাবতেই শিউড়ে উঠে, আমাদের ইতিহাসের পাতা ২০০০ বছর পিছিয়ে নিলেই দেখা যাবে সে সময়ে এইসব পারিবারিক সম্পর্ক সামাজিক ভাবেই স্বীকৃত ছিলো, বাইবেলের নবী লুত, তার দুই মেয়েকে নিয়ে যখন সোডোম থেকে পালিয়ে আসছেন, পেছনে রেখে এসেছেন অবিশ্বস্ত স্ত্রীকে, সমকামীতার পাপে কিংবা অবৈধ যৌনাচারের পাপে ইশ্বর সে শহরের সকল বাসিন্দাকে হত্যা করেন।

এই দুই মেয়ে, যাদের লুত ক্ষিপ্ত শহরবাসীকে উপহার দিতে চেয়েছিলো, এমন ভাবে, যেনো এই সুন্দরী দুই মেয়ের সাথে শাররীক সম্পর্ক স্থাপন করে হলেও লুতের বাসায় আশ্রয় নিতে আসা অতিথিকে তারা আক্রমন না করে- এই দুই মেয়েই পাহাড়ের গুহায় পিতাকে মাতাল করে তার সাথে সঙ্গমলিপ্ত হয় এবং তাদের ঔরসে লুতের সন্তান জন্মে-

এই প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়ে যায় কিংবা অপ্রচলিত হয়ে যায় ১৮০০ বছর আগেই। এরপর আমরা এইসব ইনসেস্টের যত ঘটনা পড়েছি পত্রিকায় তার কোনোটাই সমাজস্বীকৃত নয়, এমন কি এসব সম্পর্কের সামাজিক বৈধতা না থাকলেও এইসব অঘটন থেমে থাকে নি।

প্রেমের কিংবা মোহের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার মতো সামাজিক পরিবেশ থাকলে কি হতো আমি জানি না, তবে গত ৫ বছরে পত্রিকায় অন্তত ১০০ থেকে ৫০০ সংবাদ পাওয়া যাবে যেখানে পিতা তার কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই অভিযোগ শাস্তি পর্যন্ত গড়িয়েছে।

নৈতিকতার প্রশ্নে এটাকে সামাল দেওয়া হবে কি ভাবে সেটা নিয়ে ভাববার সময় হয়তো এখনও আসে নি, এখনও পারস্পরিক সম্মতিতে এমন সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে না, কিন্তু খুব শীঘ্রই একটা অসস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আমাদের,

উডি এলেনের মতো প্রাক্তন স্ত্রীর পালক কন্যা বুক ফুলিয়ে যেমন বলেছিলো আমি তাকে ভালোবাসি এবং তার সাথে আমি সচেতন ভাবে সংসার করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, হয়তো কোনো এক দিন আমরা কোনো কন্যাকে এমন ভাবে সংবাদ মাধ্যমের সামনে দেখবো বলছে- আমি তাকে ভালোবাসি এবং সচেতন ভাবে তার সাথে সংসার করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সেই সময়ে আমাদের মানসিক বিপর্যয়ের খানিকটা এখনই অনুমাণ করা যাচ্ছে। আদতে কন্যা কিংবা পূত্রকে কেউ এমন যৌন অবকাঠামো চিন্তা করছে না এখনও, তবে এটার ব্যপকতা মানুষের নিজস্ব দর্শন এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলাতে বাধ্য করবে এবং বলা যায় না, তখন লোলপুরুষ নিজের কন্যার শরীর দেখে যৌনউত্তেজিত হবে এবং মেয়ের সাথেও ফ্ল্যার্ট করা শুরু করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৮:৩৭
২৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×