ব্রেইন হ্যামোরেজ দুই ভাবে হতে পারে। প্রথমত- তাৎক্ষনিকভাবে ব্রেইন স্ট্রোক হওয়া এবং ২য় হলো- মস্তিকের রক্তনালী শুকিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ধিরেধিরে ব্রেইন স্টোক হতে পারে। এই ধরণের রোগী ক্রমেই বেড়ে চলছে। বলতে গেলে মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এই ধরণের রোগীর পরিমান আনুপাতিক হারে বেশী। এতে করে সামাজীকভাবে মানুষ ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে। যে পরিবারে উপার্জনক্ষম মানুষটি ব্রেইন স্টোক করলো সে পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। হঠাৎ করে স্ট্রোক করা রোগীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা দেশে রয়েছে।
তেমনি আস্তে আস্তে যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জন্যও চিকিৎসার য়েছে। এক্ষেত্রে রোগি বুঝতে পারেন যে তিনি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ সময়ে শরীরের একপাশ বিশেষকরে বাম অংশ আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই অবস্থা থেকে পর্যায়ক্রমে পুরোপুরি অবস হয়ে যায়। রোগী যতো দ্রুত ডাক্তারের নিকট আসবে ততোই তাদের চিকিৎসা সহজ হবে। এ সময়ে রোগীর প্রচুর বমি হয় এবং জ্বর এর সাথে শরীরে খিচুনীও হতে পারে। মস্তিকের রক্ত নালী ছিড়ে যেতে পারে এবং রোগী ব্রেইন স্টোক করে কোমায় চলে যেতে পারে এমনকি মারাও যেতে পারে।
আমরা চেষ্টা করি যেন রোগী পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। যেভাবে আক্রান্ত হওয়ার আগে সে সচল ছিল। তবে এই প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ এক থেকে দু’মাসের মধ্যে সঠিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলে সুস্থ্য অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। আমরা এই রকম অসংখ্য রোগীকে পূণর্বাসন করেছি।
হেমোরেজ এর কারণে রোগীর স্মৃতি শক্তি হারিয়ে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ডায়াগনসিস করা জরুরী। আমরা সাধারণত সিটি স্ক্যান করে থাকি। কম খরচে এই টেস্ট এর মধ্য দিয়ে ব্রেইনের সমস্যা চিহ্নিত করা হয় এবং আমরা সে মোতাবেক চিকিৎসা দিয়ে থাকি।
একটি কথা না বললেই নয়- মানুষ মনে করতো প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়া এক ধরনের অভিশাপ আর এই কারণের রোগীকে সামাজিকভাবে হেয় করা হতো। তারা মানসিকভাবে আক্রান্ত হয়তো। আসলে এই ধারণা সম্পূর্ণ অজ্ঞানতা এবং কুসংস্কার। কেউ আক্রান্ত হলে তাকে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নিকট আসতে হবে। আমরা পূর্ণবাসনের প্রত্যাশায় সব ধরণের ব্রেইন স্টোক এবং ফিজিওথেরাপির চিকিৎসা দিচ্ছি। যে কোন বয়সের রোগী এখানে সেবা পাচ্ছেন। আমরা প্রথমেই চেষ্টা করি যেন রোগী নিজের চলা ফেরা, নিজের খাওয়া দাওয়া, কাপড় পরাসহ প্রাথমিক কাজগুলো করতে পারেন।
@ ডা. সফিউল্যাহ প্রধান
(সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩৬