আমরা মুসলমান, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি করে নাস্তিক হবে? একটা স্বাভাবিক প্রশ্ন। অথচ সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হওয়ার মতোই বিষয়টি বাস্তব। আমাদের চোখের সামনে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নাস্তিক করা হচ্ছে, আইনগতভাবেই তা করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে কিছু বিষয় আমাদের কাছে খটকা লাগে, তবে তার অন্তর্নিহিত অর্থ এবং দীর্ঘ সময়ের প্রেক্ষাপটে তার ফল কি তা আমরা অনুভব করতে পারি না। এই কথাটি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছে প্রখ্যাত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বিশারদ আলেক্সন্ডার ব্রেজমেনভ। যারা ইংরেজি ভালো বুঝেন তারা তার সাক্ষাৎকারটি শুনে নিতে পারেন। (http:/ww/w.youtube.com/watch?v=IHgYPDvQFU8)
আমাদের জানা প্রয়োজন যে, আমাদের দেশে কিভাবে নাস্তিকতার প্রচার-প্রসার করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবেই তা হচ্ছে; যার যৎসামান্য অংশ আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আপনাদের মধ্যে যারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিশ্বাস নিয়ে চিন্তিত তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। আর যারা ইতোমধ্যেই ইসলামের শত্রুদের মগজধোলাই কার্যক্রমের কারণে তথাকথিত মুক্তচিন্তা, নাস্তিকতা কিংবা ইসলামবিদ্বেষী মানসিকতার অধিকারী বলে নিজেদেরকে ধারণা করেন, তাদের জন্য এই লেখাটির বাকি অংশটুকু না পড়লেও চলবে।
এবার আসুন দেখি! কিভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নাস্তিক বানানো হচ্ছে। ব্রেজমেনভ বলেছে- একটি জাতি কিংবা একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে মগজধোলাইয়ের মাধ্যমে বিশ্বাস/উপলব্ধিগত পরিবর্তনের জন্য এক প্রজন্ম সময়ের প্রয়োজন। অর্থাৎ ছোট একটি বাচ্চার মধ্যে ওই অল্প বয়স থেকেই বিভ্রান্তিপূর্ণ উপলব্ধি প্রবেশ করাতে শুরু করতে হয়। সে যখন সাবালক হয়, তখন সে হয়ে যায় পরিবর্তিত মানসিকতার এক ব্যক্তিত্ব। একটি পর্যায়ে এসে তার বিশ্বাস এবং উপলব্ধি শত্রুর মনস্তাত্ত্বিক বিশারদের লক্ষ্য অনুযায়ী রূপ লাভ করে। এক্ষেত্রে কোনো দেশ বা জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে মগজধোলাইয়ের উর্বর প্রাঙ্গণ। শত্রু দেশ যদি এই প্রাঙ্গণটিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সেক্ষেত্রে ওই জাতির মগজধোলাই হওয়াটা হয়ে যায় সময়ের ব্যাপার মাত্র। যেমন-
১। আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী স¦ঘোষিত নাস্তিক
২। শিক্ষাসচিব অঘোষিত নাস্তিক
৩। উপসচিব হিন্দু
৪। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপতরে প্রবেশ করলে মনে হবে ভারতীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর। শতকরা ৭০ জন কর্মকর্তা হিন্দু, নিজ চোখকে তখন অবিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয়।
৫। ঢাকা বোর্ডেও ওই একই অবস্থা। এনসিটিবি অধিদপ্তর, যারা জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষা কারিকুলাম নির্ধারণ করে, তার ডিজি হচ্ছে একজন হিন্দু। ৯৮ ভাগ মুসলমানদের জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়নের দায়িত্ব বর্তমান সরকার একজন হিন্দুর কাছে অর্পণ করেছে।
৬। ফলশ্রুতিতে কি হয়েছে? স্কুল-কলেজে পাঠ্যপুস্তকসমূহে যত গদ্য/পদ্য আছে তার ৫০ ভাগেরও বেশি লেখক হচ্ছে হিন্দু। আর মুসলমান লেখকদের মধ্যে আছে ইসলামবিদ্বেষী হুমায়ুন আজাদ ও তদীয় মানসিকতার কিছু লেখক/কবি। কবি নজরুল ইসলাম কিংবা তদীয় কিছু লেখক/কবিদের লেখা না দিলেই নয় বলে উনাদেরকে রাখা হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে সিলেবাসভুক্ত নয়।
৭। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী প্রায় সব শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের যৌন শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে শরীর চর্চার পাঠ্যক্রমে। একজন মহিলা শিক্ষিকা ছেলেদের ক্লাস এবং একজন পুরুষ শিক্ষক মেয়েদের ক্লাসে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে তা পড়াতে গিয়ে।
৮। ২০১৩ সালে ৮ম শ্রেণীর ইসলামী শিক্ষা বইতে বেশ কিছু বিভ্রান্তি পরিকল্পিতভাবে প্রবেশ করানো হয়, যা ব্যাপক প্রতিবাদের কারণে এবার পরিবর্তন করা হয়েছে।
৯। ব্লগ এবং ফেসবুক হচ্ছে আগামী প্রজন্মের মুসলমানদের নাস্তিক করার অপর এক বিশাল প্রাঙ্গণ। এ বিষয়ে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করছে নরওয়ের নাগরিক ইহুদী মগজধোলাই বিশেষজ্ঞ অরিল্ড ক্লুগারহোগ, সামহোয়ারইন ব্লগের মালিক। (http:/ww/w.somewhereinblog.net/blog/pri“o_bangla/29926823)
১০। বেশ কিছু ইসলামবিদ্বেষী ব্লগে দুষ্ট বুদ্ধির ব্লগাররা মুসলমানদের নামে ‘নিক’ নিয়ে ইসলাম এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে ন্যক্কারজনকভাবে অপপ্রচার চালায়। সরকার ওই সব নাস্তিক ব্লগারদের শাহবাগ আন্দোলনের সময় পুলিশ গানম্যান দিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
১১। ব্লগে লিখিত ওইসব ইসলামবিদ্বেষী লেখাসমূহকে সঙ্কলন করে তারা ২১-এর বই মেলায় বই বিতরণ করে। আমাদের তথাকথিত বর্তমান মুসলমান গণতান্ত্রিক সরকার এ বিষয়ে মৃত লাশের মতো নিশ্চুপ।
১২। ঢাকা হাইকোর্টের জনৈক জজ সাহেব আইন জারি করে যে, জোর করে কোনো মেয়েকে বোরকা পরানো যাবে না, তবে জোর করে কোনো প্রতিষ্ঠান মেয়েদের বোরকা খুলে ফেললে তার জন্য কোনো অপরাধের কথা উল্লেখ নেই। (http:/ww/w.somewhereinblog.net/blog/Twaher/29926822)
১৩। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রাক্তন স¦রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’ অর্থাৎ হিন্দুদের দুর্গা, কালী কিংবা শিবলিঙ্গের পূজার উৎসবে মুসলমান ছেলেমেয়েরা ‘ধূপের কলি নিয়ে নৃত্য করলে ধর্মীয় কোনো বাধা থাকবে না। কারণ উৎসব সবার।’
১৪। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের ফসল উৎপাদন- দুর্গা গজে চড়ে আসলে বৃদ্ধি পায়।’ (নাঊযুবিল্লাহ)
পাঠক! এবার নিজেরাই বলুন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে নাস্তিক হবে, এতে কি আপনাদের কোনো সন্দেহ আছে? যদি সন্দেহ থাকে তবে সমস্যা নেই। আর যদি না থাকে তবে নিজ স্বার্থে এবং দেশের স্বার্থে দ্রুত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ কর্তৃক চেকআপ করানো প্রয়োজন।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে নাস্তিকতার হুমকি থেকে রক্ষা করুন। (আমীন)। যারা আমাদের দেশে টাকার বিনিময়ে নাস্তিকতা ছড়াচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করুন এবং বাংলাদেশী মুসলমানদেরকে হিফাযত করুন। (আমীন)