মৃনালীনিকে শোক সইবার ক্ষমতা দাও ইশ্বর...
স্বামী হারানোর ১০দিনের মাথায় ঘাতক পিকআপ চালক মৃনালীনির পাঁচ সন্তানকে হত্যা করেছে। দুর্ঘটনায় আহত আরো তিন সন্তান হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। সেই মায়ের বুকজুড়ে এখন কষ্টের পাহাড়। চোখের সামনে অমানিশার অন্ধকার।
এর চেয়েও বড় কষ্ট হলো বৃদ্ধা শাশুরীকে আমৃত্যু পাঁচ পুত্রবধূর সাদা শাড়ির বিধবার বেশ দেখে যেতে হবে। তাদের কারো হাতে শাঁখা নেই, কপালে সিঁদুর নেই, ঘরজুড়ে বিষাদের ঢেউ, হাহাকার আর শুণ্যতা!

সবকিছুই চোখের সামনে মুছে নিয়ে গেছে নিয়তি।
অসহায় পাঁচজন পুত্রবধূর হৃদয়জুড়ে আর্ত্মনাদ বারবার শাশুড়িকেও ছুয়ে যাবে।
শিশু অর্ক, আয়ুষ্মান ও অভি কি হারিয়েছে, তা উপলব্ধি করার বয়স হয়নি। তবুও মাথা মুড়িয়ে অবুঝ শিশুদের বাবার আত্মার শান্তি কামনায় শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। ওরা তো আর কোনদিন বাবা ডাকতে পারবে না। পৃথিবী থেকে বাবা শব্দটি এখন ওদের কাছে অতীত। একজন শিশুর জন্য বিষয়টি কতোটা কঠিন, নির্মম নতুন করে বলে বোঝাবার নয়।
বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়ে হাহাকার, শূণ্যতা, অপূর্ণতা তো থেকেই যাবে। বাবার অভাবে সব আবদারগুলো এখন থেকে জমা থাকবে অভিমানের খাতায়। হয়ত বারবার ডুকরে কেঁদে ওঠবে ওরা। নাতি-নাতনির কান্নার শব্দে নিঃশব্দে অশ্রু ঝড়াবেন ‘মৃনালীনি’।
তার তো সবই গেছে। স্বামীর মৃনালিনী বলে ডাক, সন্তানদের মা ডাকার নিষ্পাপ উচ্চারণ সবই কেড়ে নিয়েছে ভাগ্য। হয়ত সবার মুখের দিকে তাকিয়ে মা মৃনালীনি আরো পাথর হবেন। সন্তানদের হত্যার বিচার চেয়ে পথে পথে ঘুরতে হবে তাকে।
কি এমন ভালোর জন্য মৃনালীনির এতকিছু কেড়ে নিলে ইশ্বর। বলা হয় ইশ্বর যা কিছু করেন তা ভালোর জন্যই। স্বামী আর সন্তানদের কেড়ে নিয়ে তুমি যতো ভালোই দাও তা মৃনালীনি চান না, চান না তার পাঁচ পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের কেইউ। জীবনের এমন কঠিন পরীক্ষায় আর কাউকে ফেলো না।
ইশ্বর তাকে শোক সইবার ক্ষমতা দাও। মৃনালিনীর মানসিক শক্তিতে যেন পুরো পরিবারটি টিকে থাকতে পারে, ঘুরে দাঁড়িয়ে আলোকিত যেন হয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন।
(এই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া লেখাটা লিখেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য্য, আমি যতসামান্য ছোট করে শেয়ার করেছি)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



