হাউস অফ স্পিরিট......
ট্রমা বলতে বোঝায়, শরীরে বা মনে সৃষ্ট কোন আঘাত। যেমন- পথ দুর্ঘটনা, আগুন লাগা, পুড়ে যাওয়া, হিংস্রতা, নারী, শিশু ও বয়স্কদের প্রতি শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন ইত্যাদি। সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেছিলেন, "ট্রমা মানে disease of Memory....."। আমরা যখন প্রচন্ড আঘাত পাই মস্তিষ্কের মেমরি সেলগুলো তা সহ্য করতে পারে না, কখনও মেমরি লেস হয়, মেমোরি লস হয়, আমরা ঘটনাগুলো বেমালুম ভূলে যাই। কখনো মেমরি সেলগুলোর মধ্য অস্বাভাবিকত্ব ফুঁটে ওঠে। পরবর্তী জীবনে কোন আওয়াজ - সাইরেন বা কাঁচ ভাঙার শব্দে তাদের গা শিরশির করে ওঠে, লোম খাড়া হয়ে ওঠে বা কেউ কেউ দুই কান চেপে চিৎকার করে ওঠে- আমি নিজেই তেমন একজন ট্রমা আক্রান্ত রোগী বললে ভুল বলা হবেনা.....।
সিগমন্ড ফ্রয়েড সাইকোঅ্যানালাইটিক থিওরিতে বলেছেন- পৃথিবীর তিনজন মেয়ের মধ্যে একজন ছোটবেলায় নিজ পরিবার বা পরিচিত আত্মীয়স্বজনের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয় এবং সেইসব মেয়েদের মধ্যে ট্রমার বিচিত্র রূপ দেখতে পাওয়া যায়।
চিলির লেখিকা ইসাবেলা আলিন্দে এই মুহূর্তে বিশ্বের সম্ভবত শ্রেষ্ট লেখিকা, "হাউস অফ স্পিরিট" বইয়ে এমন এক মেয়ের জীবন নিয়ে লিখেছেন যে ৯ বছর বয়সে চাচা সম্পর্কীয় একজন দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে বোবা হয়ে যায়। নয় বছর কথা বন্ধ হয়ে থাকার পর স্বর ফিরে পায়। অবিভাবকেরা মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেয়েটিকে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর প্রথম রাতে স্বামীর কাছে sexual violence এর সন্মুখীন হয়ে আবার ট্রমার মধ্যে পরে। প্রকৃতি ও প্রেম ও চিলির স্বৈরাচারী শাষকদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তার জীবনে আরগ্য আসে.....পড়তে পড়তে বিভোর হয়ে গেছিলাম, বিশুদ্ধ ভালোবাসা, করুনা থেকে নির্গত প্রেম আর প্রকৃতিই পারে মানুষকে মহাজীবন দিতে।
এই ঘটনা নিয়ে 'হাউস অফ স্পিরিট' নামে সিনেমাও হয়েছিল, যা অনেক বছর আগে দেখেছিলাম। কিশোরী ক্লারা চরিত্রে Grace Gummer আর বয়স্কা ক্লারা চরিত্রে Meryl Streep এর অভিনয় মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু বই পড়ার আমেজের কাছে সিনেমা কিছুই না!