অন্যরকম বিশ্বকাপ ফুটবল: জুলে রিমে ট্রফি ....
১৯৫০ সালের ২৪ জুন থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলে যোগ্যতা নির্ধারণ পর্বে এশিয়া থেকে বাছাইপর্বে নিজেদের সরিয়ে নেয় ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া ও বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার)। তাই সরাসরি সুযোগ পায় ভারত। ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া ও বার্মা নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণেই ভারত কোনোও ম্যাচ না খেলেই সরাসরি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবার সুবর্ণসুযোগ লাভ করেছিলো। তখন গোটাবিশ্বের মতো ভারতেরও অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো চলছিলোনা। তাই সরকার আপত্তি তোলে সুদূর ব্রাজিল যাতায়াতের খরচ নিয়ে। ফিফা অর্ধেক মূল্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও, "প্র্যাকটিসের সময় পাওয়া যাবে না", "ভারতীয় খেলোয়াড়দের খালি পায়ে খেলার আবদার" এবং অলিম্পিক ফুটবলকে প্রাধান্য দেওয়ার অজুহাতে ভারতের বিশ্বকাপ যাত্রা বাতিল করা হয়। আসলে খালি পায়ে খেলার আবদার তোলায় ভারতের আর বিশ্বকাপ খেলা হয়নি!

বিশ্বকাপ ১৯৫০: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৩৮ পরবর্তী দুটি ফুটবল বিশ্বকাপ মাঠে গড়াতে পারেনি। ১২ বছর পর ১৯৫০ সালে ব্রাজিলে আয়োজিত হয় চতুর্থ বিশ্বকাপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িত দেশ জার্মানি ও জাপানকে এ বিশ্বকাপে খেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর ইউরোপ থেকে অস্ট্রিয়া ও বেলজিয়াম নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে বাছাইপর্বের ফাইনাল রাউন্ড খেলা ছাড়াই সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক সুযোগ করে নেয় বিশ্বকাপে। বাছাইপর্বের পরও সরে দাঁড়ায় স্কটল্যান্ড ও তুরস্ক। ইংল্যান্ডের কাছে বাছাইপর্বে দ্বিতীয় হওয়ার কারণে স্কটল্যান্ড ও দক্ষিণ আমেরিকায় ভ্রমণে আর্থিক সমস্যার কারণে তুরস্ক খেলতে অস্বীকৃত জানায়। পরে এদের ঘাটতি মেটাতে ফিফা বাদ পড়া পর্তুগাল, আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সকে আমন্ত্রণ জানায়। পর্তুগাল ও আয়ারল্যান্ড নেতিবাচক সাড়া দিলেও ফ্রান্স জায়গা করে নেয়। মূলত ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনে সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে বিশ্বকাপ বয়কট করেছিল আর্জেন্টিনা। এছাড়া ইকুয়েডের ও পেরু নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। জার্মানি ও জাপানকে বাদ দিয়ে এই টুর্নামেন্ট ছিল পৃথিবীর সব দেশের জন্য উন্মুক্ত। তারপরও বিশ্বকাপ খেলতে ফুটবল দল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশের ব্রাজিল বিশ্বকাপে অংশ নেয় মাত্র ১৩টি দল। তখন বিশ্বকাপ ট্রফির নাম দেওয়া হয় জুলে রিমে কাপ। ফিফার প্রেসিডেন্ট হিসেবে জুলে রিমের ২৫ বছর উপলক্ষে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
আসরটিতে মোট ৬টি শহরে স্টেডিয়ামে খেলা হয়। ভেন্যুগুলো হলো, রিও ডি জেনিরো, সাও পাওলো, বেলো হরিজোন্তে, কুরিতিবা, পোর্তো অ্যালেগ্রি ও রেসিফ।এই বিশ্বকাপ উপলক্ষে ব্রাজিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম নির্মাণ করে- মারাকানা! আর এই মারাকানায় ঐতিহাসিক স্বপ্নভঙ্গ ঘটে ব্রাজিলের। মারাকানায় উপস্থিত প্রায় ২ লাখ সমর্থকের সামনে ২-১ ব্যবধানে সেলেকাওদের কাঁদিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরে উরুগুয়ে। তবে গোল্ডেন বল জয় করেন ব্রাজিলের আদেমির জিজিনহো।
মারাকানার এই হার ব্রাজিল ফুটবল দলের খোলনলচে বদলে দিয়েছিল। সেদিন সেই হারের পর চারজন খেলোয়াড় মাঠ থেকেই অবসরের ঘোষণা দেন। এমনকি হারের পর দেশটির প্রতীক সাদা জার্সিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় নির্বাসনে। তৈরি করা হয় ব্রাজিলের বিখ্যাত হলুদ জার্সি।
তথ্যসূত্রঃ বিশ্বকাপ ফুটবল উইকিপিডিয়া এবং ঘটনা বহুল চতুর্থ বিশ্বকাপ ফুটবল।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



