প্রসঙ্গ: জাতীয় পতাকা.....
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রথম নকশাটি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারীভাবে গৃহীত হয়। সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত ও এর মাঝে হলুদ রঙের বাংলাদেশের মানচিত্র। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই পতাকা ব্যবহার করা হতো। ৫ ও ৬ জুন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয়েছিল মতিঝিলের হোটেল ইডেনে। ৭ জুন সকালে পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগের প্যারেড হয়েছিল। ওই প্যারেডে সালাম গ্রহণ করেছিলেন বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর পাশে ছিলেন ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী ও শাহজাহান সিরাজ। প্যারেডে নেতৃত্ব দেন ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রব। তাঁর হাতেই ছিলো পতাকাটি।
আ স ম আবদুর রব এই পতাকা হস্তান্তর করেন বঙ্গবন্ধুর হাতে।
১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনের বটতলায় আয়োজিত সমাবেশে সেই পতাকাটিই তুলে ধরেন আ স ম আবদুর রব।- সূত্রঃ বাংলােদশ ১৯৭১, আফসান চৌধুরী।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সনের ১২ জানুয়ারী পতাকা থেকে মানচিত্র সরিয়ে শুধুমাত্র লাল সূর্য্যের গোলক রাখার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
স্বাধীনতার মাস মার্চ, বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এই দুই মাসেই আমাদের পবিত্র জাতীয় পতাকার ব্যাবহার খুব বেশী। জাতীয় পতাকা একটি দেশের জাতীয়তা বহন করে। বহির্বিশ্বে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। আর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাতো রক্তার্জিত। তাই এর মূল্য অনেক অনেক বেশি। জাতীয় পতাকা তৈরি ও ব্যবহারে কিছু বিধিমালা রয়েছে, তা তুলে ধরা হলো-
জাতীয় পতাকার রঙঃ
আমাদের জাতীয় পতাকার রঙ উজ্জ্বল ঘন সবুজের মাঝেখানে লাল বৃত্তটি স্বাধীনতার নতুন সূর্যের প্রতীক। সবুজ অংশটি তারুণ্যের উদ্দীপনা আর গ্রামবাংলার বিস্তৃত সবুজ পরিবেশের প্রতীক।

জাতীয় পতাকা তৈরির নিয়মঃ
জাতীয় পতাকা হবে আয়তাকার।
পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত হবে ১০ঃ৬।
পতাকার মাঝে লাল বৃত্তটির ব্যাসার্ধ হবে পতাকার দৈর্ঘ্যরে ৫ ভাগের ১ ভাগ।
পতাকার দৈর্ঘ্যকে সমান ১০ ভাগে ভাগ করতে হবে।
পতাকার প্রস্থকে সমান ২ ভাগে ভাগ করতে হবে।
প্রত্যেক ভাগকে ১ একক ধরে হিসাব করতে হবে।
পতাকার দৈর্ঘ্যরে ডান দিকে সাড়ে পাঁচ একক ও বামে সাড়ে চার একক রেখে লম্বা টানতে হবে।
প্রস্থকে ভাগ করা রেখার সাথে এই লম্ব যেখানে মিলবে সেটাই হবে লাল বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু।
আকারঃ
বেসরকারি ও সরকারি ভবনে উড্ডয়নের জন্য তিনটি ভিন্ন মাপের পতাকা ব্যবহার করা যাবে ভবনের আকার আয়তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে।
(১) দৈর্ঘ্যে ৩.০৫ মিটার বা ১০ ফুট, প্রস্থে ১.৮৩ মিটার বা ৬ ফুট
(২) দৈর্ঘ্যে ১.৫২ মিটার বা ৫ ফুট, প্রস্থে ০.৯২ মিটার বা ৩ ফুট
(৩) দৈর্ঘ্যে ০.৭৬ মিটার বা ২.৫ ফুট, প্রস্থে ০.৪৫ মিটার বা ১.৫ ফুট
নিম্নে বর্ণিত দুই প্রকার পতাকা গাড়ির জন্য ব্যবহার করা যাবেঃ
(১) দৈর্ঘ্যে ০.৩৮ মিটার বা ১৫ ইঞ্চি, প্রস্থে ০.২২ মিটার বা ৯ ইঞ্চি
(২) দৈর্ঘ্যে ০.২৫ মিটার বা ১০ ইঞ্চি, প্রস্থে ০.১৫ মিটার বা ৬ ইঞ্চি
ব্যবহারবিধিঃ
পতাকা অবশ্যই সঠিক রঙে ও মাপে তৈরি করতে হবে। জাতীয় পতাকা সকল সরকারী বেসরকারী /উল্যেখযোগ্য ভবন ছাড়াও কোনো যানবাহনের সামনে ওড়াতে পারবেন, পেছনে বা মাঝখানে ওড়ানো যাবে না। যদি মিছিলে জাতীয় পতাকা ব্যবহৃত হয় তবে তা প্রথম সারির মাঝে বা ডানে রাখতে হবে। নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানেই কেবল পতাকা ওড়ানো যাবে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা ওড়ানো যাবে। জাতীয় পতাকা শিক্ষা, ব্যবসা, বাণিজ্যে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। সিনেমা হলে কিম্বা কোন অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা প্রদর্শনকালে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া- আমাদের জাতীয় পতাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



