নির্ঘুম রাতের নির্যাস.....
আমি দীর্ঘদিন যাবতই অনিদ্রাতে ভুগি। নির্ঘুম রাত যতই বাড়ুক - তবুও আমি নিয়ম করে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বিছানায় যাই। যদিও নির্ঘুমের জন্য আমার তেমন একটা অসুবিধা হয় না। আজীবন রাতটাই আমার কাজ করার, লেখালেখির চিন্তা ভাবনা করার প্রিয় সময়। এই ঘুম না হওয়া সময়ে বিবেকের তাড়না, ইহলৌকিক-পরলৌকিক চিন্তাভাবনার যে স্বচ্ছতা থাকে সেটা দিনের বেলায় পাওয়া খুবই মুশকিল। দিনের বেলা মনোযোগের অভাব সুস্পষ্ট। যাই হোক, আমার অনিদ্রার গল্প শোনাতে চাইনা। একটা অদ্ভুত ঘটনা শেয়ার করতেই এই লেখা।
ঘুম হোক বা নাহোক রাত সাড়ে তিনটা থেকে চারটায় আমি উঠে পরি। ফজরের নামাজ আদায় শেষ করে কিছুক্ষণ কোরআন তেলওয়াত করি। সেই করোনা কাল থেকে শুরু। সম্ভবত আমার কন্ঠস্বর শুনেই একটা দুটো শালিক পাখি এসে আমার ঘরের বারান্দার গ্রীলের উপর বসে ঠোঁট দিয়ে টুকটুক করে আওয়াজ করে, কিচিরমিচির শব্দ করতে থাকে; ততক্ষন পর্যন্ত- যতক্ষণ না আমি ওদের দিকে তাকাই। ওদের দিকে তাকালেই ওদের ঠকঠকানি, কিচিরমিচির বন্ধ হয়ে যায়।
ওরা বসে থাকে। অপেক্ষায় থাকে কখন আমি ওদের জন্য কিছু খাবার দেবো.....। কখনো বাসী রুটি ছোট ছোট টুকরো করে কিম্বা চাল/ভাত রেখে দেই- খাবার দেওয়ার সাথে সাথেই কয়েকটা চড়ুই পাখিও তাবলীগ জামাত খেতে আসে। ওরা ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকায় এবং খাওয়া শুরু করে। শালিক-চড়ুইদের তাবলীগ জামাতে খাওয়া শেষ হলেই ওরা উড়ে যায়। আবার পরেরদিন সকালে ফিরে আসে এবং একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। গোটা করোনাকাল থেকে এই অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমার, আর পরিবর্তন হয়েছে শালিক চড়ুইদের সংখ্যা। দুটো শালিকের যায়গায় এখন ছয়টা শালিক। চড়ুইদের সংখ্যা আটটা।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, শালিক পাখিরা আমার মতোই ছবি দেখাতে আগ্রহী নয়। বেশ কয়েকদিন ছবি তোলার চেষ্টা করেছি- সাথে সাথে ভয় পেয়ে উড়ে গিয়েছে এবং পরদিন জানালার পাশে আসেনি! আসলে পাখিদের অভ্যাসের সঙ্গে আমার প্রাত্যহিক অভ্যাসের একটা রিলেটিভ সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। পাখিগুলো কোনোদিন না এলে সত্যিই আমার মনখারাপ হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


