somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ nnএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

লোকে যারে বড়ো বলে বড়ো সেই হয়......

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যথার্থ জ্ঞানীর অন্যতম লক্ষণ- বিষয়টা সহজ করে বোঝা এবং বোঝাতে পারা।
ছেলে বেলায় ভাবসম্প্রসারণ করতে হতো- "আপনারে বড় বলে বড় সেই নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়"....অর্থাৎ নিজের বিষয়ে কথা বলা সমীচীন নয়। মানুষ নিজে নিজেকে বড় করে দেখানো তার হীন প্রবৃত্তি মাত্র- যা করে কখনও বড় হওয়া যায় না।


ছাত্রজীবনে এক অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক বলেছিলেন, "বিষয়ের উপর দখল বা জ্ঞান আর ভালো পড়াতে পারা, দুটো আলাদা ব্যাপার।"
অর্থাৎ কেউ ভালো জানলেই যে ভালো পড়াতে পারবেন, এমন নাও হতে পারে। আমি একমত হলাম না। স্যার বললেন, দ্যাখো, তোমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে অমুকের বাড়িটা কোথায় আর তুমি যদি রাস্তাটা ভালো চেনো, তাহলে তুমি ঠিকই বোঝাতে পারবে কীভাবে সেই বাড়িতে যেতে হবে। কেউ হয়ত একেবারে ছবির দৃশ্যকল্পের মতো বোঝাবে, আর তুমি হয়ত একটু কম করে অর্থাৎ বললে- এইতো দুইশো আড়াইশো গজ দূরে....

তোমার উত্তরে প্রশ্নকর্তার কনফিউশন থাকলে সে প্রশ্ন করে ক্লিয়ার করে নেবে। কিন্তু বাড়িটা ঠিকঠাক চিনলে দুজনের ডিরেকশনেই তার পৌঁছাতে অসুবিধে হবে না। একইভাবে, বড় লেকচার ক্লাসের কথা আলাদা, কিন্তু ইনফর্মাল পড়ানো বা ছোট গ্রুপের পড়ানোয় বিষয়টা যে জানে, সে যথেষ্ট সহজ করে বুঝিয়ে দিতে পারে। জানার মধ্যে কোনও অস্পষ্টতা থাকলে সেটা পড়ানোতেও রিফ্লেক্টেড হবে।

সেই থেকে কথাটা আমার মনে গেঁথে রয়েছে এবং মিলিয়ে দেখেছি- কথাটা প্রায় সব ক্ষেত্রেই ঠিক।

কয়েক দিন আগে, একটা সেমিনারে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছিল....তা নিয়ে এই ব্লগে একটা পোস্ট লিখেছিলাম। সেই সেমিনারে একজন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ বলছিলেন, আর্থিক বৃদ্ধি আর অসাম্যের কথা। বলছিলেন, বৃদ্ধি বাড়লে অসাম্যও বাড়বে। তার মোকাবিলা করা যায় কীভাবে, সেটাই চ্যালেঞ্জ। মানে, উপযুক্ত উপায় কী, বা সম্ভাব্য ও গ্রহণযোগ্য উপায় কী কী। যেমন, বৃদ্ধির হার কমিয়ে দিলেই অসাম্যও কমে যাবে- কিন্তু তা গ্রহণযোগ্য রাস্তা নয়, কেননা তাতে কারোরই উপকার হবে না।

বলতে গিয়ে তিনি দুর্দান্ত একটা উদাহরণ দিলেন। ধরুন, একটা মসৃণ হাইওয়ে। আমার একটা আটো রিকশা কিম্বা টয়োটা করোল্লা কার আছে, আর আপনার আছে রেঞ্জ রোভার। অর্থাৎ আপনার সঙ্গে আমার এমনিতেই অনেকখানি দুরত্ব- বিশাল অসাম্য। এমন মসৃণ রাস্তা পেলে সে দূরত্ব আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে। অন্যদিকে ভাঙাচোরা খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চললে রেঞ্জ রোভার নিজের গতিতে যেতে পারবে না, টয়োটা করোল্লা তো তেমনই - অসাম্য নতুন করে সেভাবে বাড়বে না। কিন্তু হাইওয়ের বদলে রাস্তা খানাখন্দে ভরিয়ে তুললে টয়োটা করোল্লা চালকও খুব উপকৃত হবেন, এমন সম্ভাবনা কম। কাজেই...

অর্থনীতির তত্ত্বকথাটথা নয়, শুনতে শুনতেই আমার মনে পড়ে যাচ্ছিল সেই ছাত্রজীবনে শোনা পড়াতে পারার গল্পটা। সত্যিই, যিনি বিষয়টা জানেন, তিনি বলবত তরল করে আরেকজনকে বুঝিয়েও দিতে পারেন। এমনকি আনাড়িকেও। আর যিনি জানেন না, তিনি...

এসব কথা বলার ফাঁকে নিজের কথা ভাবছিলাম। ভেবে দেখলাম, কোনও বিষয়ই আমি, কাউকেই সহজ করে বুঝিয়ে উঠতে পারি না। জ্ঞানীগুণী লোকের সঙ্গে কথা বলার এই এক সাইড-এফেক্ট। নিজের অপদার্থতা এমন কারণে-অকারণে এমন দিনের আলোর মতো নিজের কাছেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে অল্পবিস্তর আত্মপ্রসাদ লাভের আশাটুকুনি থাকে না। সেটা মোটের উপর ভালো নাকি খারাপ, বুঝতে পারিনা। ইন ফ্যাক্ট, এ বিষয়ে প্রাজ্ঞ কাউকে চোখে পড়েনি। অবশ্য খুঁজে পাওয়াটাও তো মুশকিল। সত্যি বলতে কি, নিজের অপদার্থতা বিষয়ে যিনি প্রাজ্ঞ, তিনি কি আর অপদার্থ হতে পারবেন - এবং উল্টোটাও সত্যি।

কাজেই...'আমারে না যেন করি প্রচার আমার আপন কাজে, তোমারই ইচ্ছা করো হে পূর্ণ আমার জীবন মাঝে'.....(যাহার জন্য প্রযোজ্য)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০৫
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিছু "নতুন" ব্লগারের জন্মের কারণই হচ্ছে আমার ব্লগিং

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:০৯



আমরা নতুন নতুন ব্লগারের আগমণের জন্য উৎগ্রীব; সম্প্রতি বেশ কয়েকজন এসেছেন; এদের ২/৪ জন, এসে ১টা শুভেচ্ছা পোষ্টও লেখেননি, তার আগেই আমার পোষ্টে ঝাপ দিয়ে পড়েছেন মন্তব্য করতে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

পুঁজিবাদের আত্মরক্ষায় নেটো গঠিত হয়েছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:০৭



সোস্যালিজম ও কমিউনিজম পুঁজিবাদীদেরকে তাদের শ্রেণী শত্রু ঘোষণা করে তাদেরকে খতম করার ঘোষণা প্রদান করে।তখন পুঁজিবাদী রাষ্ট্র সমূহ সোস্যালিজম ও কমিউনিজম এর হাত থেকে আত্মরক্ষায় নেটো গঠন করে।পুঁজিবাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিভ্রান্তি (কিঞ্চিৎ রম্য)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৩১


বয়স
সাবেক এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল জীবনের আয়-উন্নতি নিয়ে। কথা প্রসঙ্গে বয়সের বিষয়টা সামনে এল। জিগ্যেস করলাম, স্যার, আপনার বয়স এখন কত চলে?
উনি বললেন, ৩৬।
আমি একটু অবাকই হলাম। ৫ বছর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের একজন রোগীর জন্য কমপক্ষে পাঁচ জন ডাক্তার!

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৫০

বাংলাদেশের একজন রোগীর জন্য কমপক্ষে পাঁচ জন ডাক্তার!

বিশ্বাস হয়না?
তাহলে আপনার অফিসে, গলির কোনো টং দোকানে অর্থাৎ যেখানে অন্তত জনা পাঁচেক লোক আছে- সেখানে কাউকে বলবেন-'আমার মাথা ব্যথা করছে'/'আমার পেট খারাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বান্তনা

লিখেছেন জটিল ভাই, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:২৬


(ছবি নেট হতে)

আমি নতুন নতুন ব্লগারের আগমণের জন্য উৎগ্রীব; সম্প্রতি বেশ কয়েকজন এসেছেন; উহারা ২/৪ জন, এসে ১টা শুভেচ্ছা পোষ্টও লেখেননি, কারণ, উহারা আমার শিষ্যকে লইয়া জয়গান করিতে জানেনা বিধায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×