somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

যুদ্ধাবস্থা ও দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি.....

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুদ্ধাবস্থা ও দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি.....

আমি অনেক যুদ্ধকালীন/ যুদ্ধের পটভূমি নিয়ে বিশ্ববিখ্যাত মুভি দেখেছি। যেমনঃ টু ওমেন, শিন্ডলার'স লিস্ট, দাস বুট, ডানকার্ক, দ্য গ্রেট এসকেইপ, কাম এন্ড সি, দ্য ইমিটেশন গেম, ক্যাসাব্লাঙ্কা, জোজো র‍্যাবিট, ডার্টি ডজন ইত্যাদি।

যুদ্ধের পটভূমিতে বাংলাদেশে যেসব সিনেমা নির্মিত হয়েছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ ওরা এগারো জন, আবার তোরা মানুষ হ, ধীরে বহে মেঘনা, কলমি লতা, মেঘের অনেক রং, আগুনের পরশ মনি, জয়যাত্রা ইত্যাদি। সকল যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত সিনেমায় উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো - নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাব, দারিদ্রতা, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সেই সুযোগে একশ্রেণীর ফটকাবাজদের লোভের কাছে সাধারণ মানুষের জিম্মিদসা। যুদ্ধকালীন সময়ে দ্রব্য মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা একটা কমন সমস্যা। এই সমস্যা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন শহিদুল্লা কায়সারের কালজয়ী উপন্যাস শংসপ্তক উপন্যাস এবং ধারাবাহিক নাটকে, সেই স্মৃতি এখনো বিটিভি'র সাদাকালো সময়ের দর্শকদের মনে আছে।

আমার মূল বক্তব্য হচ্ছে- যুদ্ধাবস্থায়, যুদ্ধের পরবর্তীতে দ্রব্য মূল্য বেড়ে যায়। যার চাক্ষুষ প্রমাণ দেখেছি ১৯৬৫ সনে পাক-ভারত যুদ্ধের সময়, আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় (তবে ব্যতিক্রম ভাবে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সবকিছু বিক্রি হয়েছিল পানির দড়ে)! আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তীতে ১৯৭৪ সনের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভয়াবহ মূল্যস্ফীতির সাথে সাথে দ্রব্য মূল্য ছিল আকাশচুম্বী। বর্তমানে দেশের কোথাও কোনো পণ্যের কমতি নাই। কিন্তু দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতার পর প্রথম চার বছরের মূল্যস্ফীতিতে ততকালীন ক্ষমতাসীন দলের কারোরই মূল্যস্ফীতিতে কোনো সমস্যা হয়নি।

কিন্তু এখনতো দেশে যুদ্ধাবস্থা নাই। তবুও অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির কারণে আমজনতার নাভিশ্বাস! যুদ্ধ নেই, তবে ক্ষমতাসীন দলের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট এইদেশের জনগণের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়ে ইচ্ছে করে নিজেদের মতো করে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি করে আখের গোছাচ্ছে। এর বড় একটি অংশ অটোমেটিক ঊর্ধ্ব স্তরের আ্যকাউন্টে যোগ হচ্ছে। অবাক মিল হচ্ছে- স্বাধীনতার পর প্রথম চার বছরের মূল্যস্ফীতিতে ততকালীন ক্ষমতাসীন দলের কারোরই মূল্যস্ফীতিতে যেমন কোনো সমস্যা হয়নি, বর্তমান মূল্যস্ফীতিতেও বর্তমান সরকার সংশ্লিষ্টদের কোনো সমস্যা নাই। তাই তারা মূল্যবৃদ্ধিকে অপপ্রচার হিসেবে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

সব ধরণের পণ্যে বাজার ঠাসা। তারপরও পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিদিন পাগলা ঘোড়ার মতো পণ্যমূল্য বেড়েই যাচ্ছে। বাজার দেখভালের দায়িত্ব যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তারা বাজারে নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সচিবালয়ে মাঝেমধ্যে বৈঠক করার খবর প্রচার হচ্ছে। অতঃপর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সহজ সরল স্বীকারোক্তি ‘ব্যসায়ীরা সুবিধা নিচ্ছেন’ ‘ব্যবসায়ীরা কথা রাখছেন না’ ‘এমন হবে বুঝতে পারিনি’ ‘এক মাস পর দাম সমন্বয় করা হবে’ ইত্যাদি উক্তি করে তিনি যেন ব্যবসায়ীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর এই ‘খেই’ হারানো কথাবার্তার দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছেন অসৎ ব্যবসায়ীরা। আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো, শুল্ক প্রত্যাহার এবং কোটি পরিবারকে টিসিবির ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রির কর্মসূচি নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। এতে করে বাজার করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের পরিবারগুলো।

গ্যাস আমাদের নিজস্ব সম্পদ। যথাসময়ে স্থল ও সমুদ্র ভাগের গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন এবং জ্বালানি খাতে ভুল নীতি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম দূর করতে পারলে আজ গ্যাসে আমদানিনির্ভর হতে হতো না। অথচ এ দায় সাধারণ মানুষের ওপর চাপানো হচ্ছে। এটা অন্যায়, অযৌক্তিক ও অনৈতিক।

* অমর্ত্য সেন অর্থনীতির যে বিষয়টির উপরে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন সেটি হল দুর্ভিক্ষ পণ্যের অভাবে হয় না দুর্ভিক্ষ হয়েছে মানুষের পণ্য ক্রয় ক্ষমতা যখন থাকে না। আগে অর্থনীতিবিদরা মনে করতেন দুর্ভিক্ষ হয় পণ্যের অভাবে। কিন্তু অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের উপরে গবেষণা শেষে নতুন তত্ত্ব হাজির করেন যে দুর্ভিক্ষ হয়েছে মানুষের কোন পণ্য কেনার মত ক্ষমতা ছিল না। তার এই স্টাডির সাবজেক্ট ছিল চুয়াত্তরের বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ। এবং সেখানে তিনি গবেষণা করে দেখেন যে সে দুর্ভিক্ষ আসলে পণ্য ঘাটতির জন্য হয়নি, বাংলাদেশের বাজারে সে সময় যথেষ্ট পরিমাণ পণ্য ছিল। কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা এত নেমে যায় যার ফলে মানুষের খাবার কেনার মত সামর্থ ছিলনা। তার এই আবিষ্কারের ফল হচ্ছে অমর্ত্য সেনের নোবেল বিজয়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাকিস্তান ও চীন কি ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধ বাধাতে চায়?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩১



ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধে পাকিস্তান ও চীনের লাভ আছে। যুদ্ধে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ্য হলে ভারত বিরোধীতায় তারা সহজে বাংলাদেশীদের তাদের পাশে পাবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তার অযুহাতে এখানে তারা সামরিক ঘাটি স্থাপনের সুবিধার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিরাতাম মুসতাকিমের হিদায়াত হলো ফিকাহ, কোরআন ও হাদিস হলো এর সহায়ক

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:০৮



সূরাঃ ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাত্রলীগের লুঙ্গির নিচে ছিল শিবির, এখন শিবিরের লুঙ্গির নিচে ঘাপটি মেরে আছে গায়ে বোমা বাঁধা সশস্ত্র জঙ্গিরা

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৫


"তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদেশ: চোখে যা দেখেছো, কানে যা শুনেছো, সেগুলো সঠিক নয়, সেসব ভুলে যাও।" - জর্জ অরওয়েল

অনেকদিন ধরে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই। এতদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী-লীগের ছায়া দায়িত্ব নিয়ে তারেক জিয়া এখন দেশে

লিখেছেন অপলক , ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৬



সংবাদের টাইটেল অনেক কিছু বলে দেয়। ভেতরেটা না পড়লেও চলে। বস্তুত: এতদিন ধরে ভারতের গ্রীন সিগনাল পাচ্ছিলেন না, তাই তারেক জিয়া দেশে আসার সময় বারবার পিছাচ্ছিলেন। এখন চুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

×