ভয়ঙ্কর কিছু কুপ্রথার সংস্কার.......
ইংরেজরা দুইশো বছর ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে, অকথ্য অত্যাচার করেছে। অনেক সম্পদ লুট করেছে। আবার সেই বৃটিশরাই নিম্ন বর্ণের মানুষের জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সৃষ্টি করা অনেক ভয়ঙ্কর কুপ্রথা দূর করেছে। তা যদি না হতো, তাহলে ওইসব কুপ্রথা থেকে নিম্ন বর্ণের মানুষ হয়তো আজও মুক্তি পেত কিনা সন্দেহ । সেই সব ভয়ঙ্কর প্রথার কয়েকটি তুলে ধরলাম:-
(১) কন্যা সন্তান হত্যা:-
তখন কন্যা সন্তান হলেই মেরে ফেলা হতো। ১৮০৪ সালে ইংরেজ সরকার আইন করে বন্ধ করে এই প্রথা।
(২) শিক্ষার অধিকার:-
নিম্ন বর্ণের মানুষের শিক্ষার অধিকার ছিলনা। ১৮১৩ সালে ইংরেজ সরকার সবার জন্য শিক্ষার আইন তৈরি করে।
(৩) বিচার:-
অপরাধ করলে ব্রাহ্মণদের কোন শাস্তি বিধান ছিল না। ১৮১৭ সালে সবার জন্য আইন সমান চালু করে।
(৪) শূদ্র রমনীদের শুদ্ধিকরণ:-
শুদ্রদের বিবাহ হলে, শূদ্র বধু স্বামীর ঘরে যাওয়ার পূর্বে কমপক্ষে তিন রাত ব্রাহ্মণকে শারীরিক সেবা দিতে হতো। ১৮১৯ সালে ইংরেজ সরকার আইন করে তা বন্ধ করে।
(৫) নরবলি:-
দেবতাকে প্রসন্ন করার জন্য, শূদ্র স্ত্রী-পুরুষ কে বলি দেওয়া হতো। ১৮৩০ সালে নরবলি প্রথা বন্ধ করে ইংরেজ সরকার।
(৬) প্রথম পূত্র সন্তান আইন:-
ব্রাহ্মণরা আইন বানিয়েছিল শুদ্রদের ঘরের প্রথম পুত্রকে গঙ্গায় ফেলে দিতে হতো যাতে শুদ্ররা কোনদিনই শক্তিশালী হতে না পারে। ১৮৩৫ সালে এই প্রথা বন্ধ হয়।
(৭) অধিকার:- নিচু জাতির মানুষের চেয়ারে বসার অধিকার ছিল না। ১৮০৫ সালে নিচু জাতির জন্য এই অধিকার চালু হয়।
(৮) সতীদাহ প্রথা:- স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামীর চিতায় বিধবাকে পুড়িয়ে মারা হতো। ১৮২৯ সালে ইংরেজদের হাত ধরে রাজা রামমোহন রায় এই প্রথা বন্ধ করেন।
(৯) গৌরিদান, বহুবিবাহ, নারী শিক্ষা:-
তখন নয় বছরের মধ্যে কন্যার বিবাহ না দিলে, সমাজে পতিত হতে হতো। ব্রাহ্মণরা অসংখ্য বিবাহ করত। এক কথায় বলা যায় ওটাই ছিল তাদের জীবিকা। মেয়েদের শিক্ষার অধিকার ছিল না। ১৮৬৭ সালে বহু বিবাহ বন্ধ হয়। ১৮৭২ সালের আইন তৈরি হয় ১৪ বছরের কম মেয়ে এবং ১৮ বছরের কম ছেলেদের বিবাহ দেওয়া চলবে না। ১৮৪৯ সালে কলকাতায় প্রথম বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হয়।
(১০) দেবদাসী প্রথা:-
এক ভয়ঙ্কর প্রথা, নিচু বর্ণের মানুষের ঘরের সুন্দরী কন্যাদের মন্দিরে সেবার জন্য দিতে হতো। মন্দিরের পুরোহিতরা এবং জমিদাররা ওইসব মেয়েদের ভোগ করতেন। তাদের বাচ্চা হলে ফেলে দেওয়া হতো। যদি কেউ বেঁচে যেত তাদের বলা হতো হরিজন'।
এখনো দক্ষিণ ভারতের কোন কোন মন্দিরে এই প্রথা চালু আছে।
(তিন বছর আগে ফেসবুকে লেখা পোস্ট ব্লগে শেয়ার করলাম)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




