আত্মপোলব্ধিঃ উদারতা বনাম উন্নাসিকতা....
মানুষের বয়স, আর্থিক অবস্থান, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনে খুব ভালো রেজাল্ট করলেই প্রকৃত শিক্ষিত হওয়া যায় না। প্রকৃত শিক্ষিত তাকেই বলা যায়, যার মন হীনমন্যতা ধারণ করে না, বরং উদার মানসিকতার। শিক্ষিত মানুষ তিনিই, যিনি স্বচ্ছ বিবেকের তাড়নায়, জীবনের বহুমুখী অভিজ্ঞতা, অনুভূতির দ্বারা পরিচালিত হয়ে প্রচলিত প্রথা ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাতে পারেন। সেই প্রকৃত মানুষ, যে বিশাল হৃদয়ে উদারতা ধারণ করেন। কেউ হয়তো বলতেই পারে, আমি তো স্যোশাল ওয়ার্ক করি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করি, বিভিন্ন ভাবে সেবা করি। .... ভাববার বিষয় হলো, এই কাজের পিছনে কি কারণ আছে? টাইম পাস, গড ফিয়ারিং নেচার নাকি পাবলিসিটি।
আপনি যদি দৃষ্টান্তমূলক কোন সাহসী পদক্ষেপ নেন, আরও পাঁচজনকে দেখবেন আপনার সঙ্গে এগিয়ে আসছেন। কিন্তু আপনি যদি কাপুরুষতা দেখান; লোকে কি বলবে সেই ভয়ে সত্য গোপন করতে চান, তাহলে একদিন দেখবেন আপনি একা হয়ে গিয়েছেন। সকলকে খুশী করে কোনদিন নিজে ভালো থাকা যায় না। ভালো থাকতে গেলে আগে নিজেকে ভালোবাসতে হবে, অন্যকে ভালোবাসতে হবে। জীবনকে ভালোবাসতে হবে।
কিছু লোকের স্বভাব কূটকাচালি করা, অন্যকে খোঁচানো, বিরক্ত করা। কিছু লোক সবসময়তেই আপনার পিছনে কাঠি দেবার চেষ্টা করবে। কিছু মানুষ আপনার পার্সোনাল স্পেসে ঢোকার চেষ্টা করবে। তাদেরকে অত importance দেবার দরকার আছে কি? তবুও নানাবিধ কারণে এই শ্রেণীর লোকের সাথেও আর এক শ্রেণীর সম গোত্রীয় সমর্থক জুটে যায়।
জীবনটা অনিশ্চিত। তাই কে কিভাবে জীবন কাটাচ্ছে, কার কি পেশা। কার লেখা কেমন। কে কার সাথে লিভ ইন করছে কিংবা extra marital relationship করছে অথবা কয়টি প্রেম বা বিয়ে করছে, এটা সেই মানুষটার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। সেখানে ইন্টারফেয়ার করা তো দূরে থাক, সেই বিষয়ে কথা বলার অধিকার কারোর নেই। আপনার ভাল না লাগলে, পছন্দ না হলে এড়িয়ে যান- আপনাকে কেউ বাধ্য করছে- কারোর ব্যাক্তিগত বিষয়ে নাক গলাতে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মানুষ তো স্বঘোষিত নীতিপুলিশ। নিজেকে মহাজ্ঞানী ভেবে আত্মতৃপ্তি পেতে চান- কেউ যখন তাকে গুরুত্ব দেয়না, তখনই উলটাপালটা ভাবে নিজেকে জাহির করার অপচেষ্টা করে। অন্যের সঠিক- বেঠিক বিচার করতে বসে যায়। সমালোচনা করা তারই করা সাজে যিনি সকল সমালোচনার উর্ধে।
তাই আমাদের উচিৎ যথেষ্ট উদারমনস্ক হয়ে প্রত্যেকজনের পাশে দাঁড়ানো। তা যদি না পারি তাহলে নিজের চরকায় তেল দেওয়াই ভালো। কারণ প্রত্যেক মানুষের তার নিজের ইচ্ছামতন করে জীবন কাটানোর অধিকার আছে। একটাই তো জীবন। তাই বলে মুখ ঢেকে, লুকিয়ে বেড়াবো কেন? আমি তো জানি, আমি কি বা কে? যা করছি তাতে যদি কোন অপরাধ না থাকে তবে কাউকে পরোয়া করবো কেন?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



