somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ nnএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

বিশ্বাস- অবিশ্বাস এবং বাস্তবতা....

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বাস- অবিশ্বাস এবং বাস্তবতা....

খেজুরের রস.......

মহানগরী ঢাকায় মর্নিং ওয়াকের জন্য ধানমণ্ডি লেক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক, গুলশান, বারিধারা, উত্তরায় বিভিন্ন নামে অনেক গ্রুপ আছে- যারা ছোট ছোট গ্রুপে হাটাহাটি করে ছুটির দিনগুলোতে নির্দিষ্ট সময়ে কিছুক্ষণের জন্য গ্রুপভিত্তিক একত্রিত হয়। আমি দুইটা গ্রুপের সদস্য হিসাবে সুবিধা মতো কোনো দিন ধানমণ্ডি লেকে, কোনো দিন সংসদ ভবনের যাই। আজ সকালে গিয়েছিলাম ধানমণ্ডি এলাকায়। মধ্যবয়সী এক লোক তিন হাড়ি খেজুরের রস নিয়ে যাচ্ছে- কাছাকাছি এক ফ্ল্যাটে। যে ফ্ল্যাটে খেজুরের রস নিয়ে যাচ্ছে- সেই ফ্ল্যাটের মালিকও আমাদের মর্নিং ওয়াক ক্লাবের মেম্বার। জিজ্ঞেশ করে জানলাম প্রতি হাড়ি রসের দাম- ৫০০ টাকা (এক হাড়িতে সাড়ে তিন লিটার রস)।

যারা খেজুর গাছ কেটে রস বের করে তাদের 'গাছি' বলে। এই গাছির বাড়ি কেরানীগঞ্জ থানার হজরতপুর। এই লোক লেকে হাটতে আসা ব্যক্তিদের কাছে প্রতি গ্লাস ১০০/- বিক্রি করে। আবার আগে থেকেই কেউ অর্ডার করলে পরিমাণ মতো সরবরাহ করেন। তিনি জানিয়েছেন- 'তার নিজের খেজুর গাছ নাই, অন্যের গাছ কেটে অর্ধেক রস গাছের মালিককে দিতে হয়। মোহম্মদপুর বেড়িবাঁধ পেরিয়ে বুড়িগঙ্গার ওপারে হজরতপুর, বছিলা/ আটি এলাকা থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে প্রতি হাড়ি খেজুরের খাটি রস কমপক্ষে ৫০০ টাকা বিক্রি করে। খুচরাও বিক্রি করে। সাথেই গ্লাস, ছাকনী আছে। অনেকেই প্রতি গ্লাস ১০০ টাকায় কিনে খায়।' খেজুরের রস/ গুড়ের জন্য বিখ্যাত যশোর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গায় এক হাড়ি খেজুরের রসের দাম ৩০০/-! গাছি জানালেন-"তিন হাড়ি (প্রায় দশ লিটার) ভালো রসে সর্বোচ্চ দেড় কেজি থেকে সর্বোচ্চ দুই কেজি গুড হয়। ভেজাল না দিলে এক হাড়ি গুড় তৈরী করে ১২০০ টাকার কমে বিক্রি করা সম্ভব না।"

খেজুরের গুড়.....

ছোট ছেলে খেজুর গুড় কিনে ধরা খেয়েছে তাই 'বিশিষ্ট অভিজ্ঞ ক্রেতা' হিসেবে আমাকেই গুড় কিনতে কাওরান বাজার গুড়ের মার্কেট যেতে হয়। কিন্তু গুড় কিনতে গিয়ে বিভ্রান্তির শেষ নাই। সব দোকানীই 'আসল গুড়'এর গ্যারান্টি দেয়। "ভেজাল ছাড়া যয়শৈর‍্যাডা আসল খাজুর গুড় নিতে হইলে এক দাম ৬০০/- কেজি।" ফরিদপুইর‍্যাডা ৪৫০/-, মানিকগইঞ্জা হাজারী গুড় ১৫০০/-, মেহেরপুইর‍্যাডা ৫৫০/-...."! এইডা অইলো পাবনাইয়া জিরানী গুড়- এইডার কেজি একদাম আস্টোশ্যো টাকা।"


নানাবিধ- "গ্যারান্টি /একিন(বিশ্বাস) রাখেন/ব্যবসা কইরা খাই- চুরি করতে আইনায়/আপনেরে ঠগাইয়া বড়োলোক অইয়া যামুনা/আল্লায় যেনো হারাম কামাই না খাওয়ায়/আপ্নেরে ঠগাইয়া আল্লাহর কাছে কি জবাব দিয়াম"- ইত্যাদি ইত্যাদি ডায়লগ শুনে অবশেষে 'একিন রাইক্কা' "যয়শৈর‍্যাডা আসল খাজুর গুড় ৬০০/- কেজি" হিসেবে দুই কেজি গুড় কিনেছি। আসলে খেজুর গুড়ের নামে চিনি দিয়ে বানানো গুড়! ঠকা তো ঠকাই, কাজেই নিজের ঠকা নিয়ে বিস্তারিত বলার কিছু নাই।

আরও একটুঃ ফেসবুকে একজন বন্ধু ছিলেন, রাজশাহীর লোক। মূল পেশা- শিক্ষকতা। নানাবিধ সোশ্যাল ওয়ার্কে জড়িত, যেমন- শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণ, বানভাসি, রোহিঙ্গা, বন্যার্তদের সাহায্য সহযোগিতা ইত্যাদির অর্গানাইজ করেন। 'নিজস্ব বাগানের" আম, লিচু ছাড়াও "নিজ তত্বাবধানে তৈরী" খাটি গুড়, নিজস্ব খামারের" ঘি বিক্রি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেছেন। অনেক সৃজনশীল ইভেন্টে সক্রিয়। তাঁর থেকে কয়েকবার আম, লিচু, গুড় কিনেছি এবং নিতান্তই তাঁর অনুরোধে আম, লিচুর রিভিউ দিয়েছি। যেটা ভালো, সেটা হাইলাইটস করেছি। খারাপ হলে চুপ থেকেছি। তাঁর 'নিজস্ব তত্বাবধানে তৈরী খাটি খেজুরের গুড়' এবং 'নিজস্ব খামারের গরুর দুধের ঘি' মোটেই ভালো হয়নি, তেমন একটা রিভিউ দেওয়ার পর আমাকে ব্লক করে দিয়েছে!

সতর্ক সংকেতঃ অনলাইনে বিক্রেতাদের লোভনীয় বিজ্ঞাপনের খপ্পরে পরে ভেজাল পণ্য কিনলেও সত্য রিভিউ দিয়ে ব্লক খাবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:১৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৌদি আরব হতে পারতো বাংলাদেশে উৎপাদিত আলু'র বাজার, কেন তা হলো না?

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:৪০

..
...
.......খবরে প্রকাশ, বাংলাদেশে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের ১ম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আলু রপ্তানিতে ধ্বস নেমেছে। তাই, আলু রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। অন্যদিকে, ইন্টারনেট ঘেটে দেখা যায়, ২০১১... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তর মানে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে আমাদের জীবনের ল্যান্ডমার্ক, ৩৬ জুলাই আমাদের চেতনা....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:৪২




এই ছবিটার গুরুত্ব অপরিসীম।
কেন জানেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের খোলনলচে বদলের ব্লু প্রিন্ট রচনার দায় তাদের কাধে। এই ছবিতে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আর স্বাধীনতাকামীদের এক করে ফেলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত-আফগানিস্তান কূটনীতি, ক্রিকেট ও বৈশ্বিক বাস্তবতা প্রসঙ্গে!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৪০


কথায় আছে শত্রুর শত্রুকে বানাতে হয় বন্ধু- এই প্রবাদ ভারত ও আফগানিস্তানের সমসাময়িক কূটনীতিক তৎপরতার প্রেক্ষিতে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুলাই মাসে কোন আন্দোলন বা বিপ্লব হয়নি, ইহা ছিলো আমেরিকান এম্বেসীর আরেকটি ক্যু

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৫



১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট'এর পর আমেরিকান এম্বসী আরেকটি বড় ক্যু করেছিলো এরশাদকে ক্ষমতা দখলে সাহায্য করে; এরপর আরেকটি বড় ক্যু করে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটায়েছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধানসিঁড়িটির তীরে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫৫



ধানসিঁড়িটির তীরে স্বপরিবারে ঘুরতে গেলাম। শালিক সাহেব পিছনে এসেই বসলেন। মেয়ে ছবি তুলতে গেলেই উড়ে গেলেন। বকের ঝাঁক কয়েকবার মাথার উপর দিয়ে টহল দিলেন। ছাগল ছানা খেলছিল বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×