somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

পুরস্কার কোনও সৃষ্টির মানদন্ড হওয়া উচিত.......

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'পুরস্কার' কি কখনও কোনও সৃষ্টির মানদন্ড হওয়া উচিত?
অথচ হয়, সেটাই হয় প্রতিনিয়ত।

আমাদের প্রতিবেশী একটি মেয়ে একেবারেই সাধারণ ছবি আঁকে। মেয়েটির বাবা রাস্ট্রের একজন বিখ্যাত আমলা। ওদের গোটা বাড়িতে অনেকগুলো শো'কেসে বেশ নামি পুরস্কার স্মারক রাখা। দেখে জানতে চাইলাম। উত্তরে জানলাম সব আঁকার প্রতিযোগিতায় পেয়েছে। তখন তাঁর আঁকা ছবির খাতা দেখতে চাইলাম, দেখে তো পুরো অবাক। একেবারে অতি সাধারণ আঁকা।

একটা উদাহরণ দিই... আমার পরিচিত বন্ধুর কিশোরী মেয়েটি দুর্দান্ত ছবি আঁকে। অথচ দুর্দান্ত আঁকা সেই মেয়েটি আঁকার জন্য কোনও পুরস্কার কখনও অর্জন করতে পারেনি।

তার মানে কি তাকে ইচ্ছা করে দেওয়া হয়নি? না বিষয়টা ঠিক তেমন নয়। ভালো আঁকা মেয়েটি প্রতিবার যোগ্য প্রতিযোগীদের মুখোমুখি হয়। যেখানে তার থেকেও ভালো আঁকা মেয়ে পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়। অপর পক্ষে পুরস্কার পাওয়া মেয়েটি প্রতিবার এমন প্রতিযোগী পায়, যারা তার থেকেও খারাপ আঁকে।

এবার আর একটা বিষয়। আমার এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বন্ধুর বিশাল অফিসে গিয়েছি। যেয়ে দেখি- গোটা অফিস জুড়ে বিভিন্ন রকম মেডাল, ক্রেস্ট ভর্তি একটা শোকেস..... আমি খুঁতিয়ে খুঁতিয়ে পুরস্কারগুলো দেখছি। হঠাত চোখ আটকে গেলো "শেরে-বাংলা স্মৃতি স্বর্ণ পদক- ২০২০” নামক ক্রেস্টের দিকে.... এই পুরস্কার প্রবর্তক এবং দাতা সংগঠনকে (কবি?) আবদুল খালেক, শেরে বাংলা স্মৃতি ফাউন্ডেশনের এর সভাপতি, তার স্ত্রী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, মেয়ে সদস্য সচিব এবং কয়েকজন প্রতিযশা আমলা এবং রাজনৈতিক নেতা উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক) আমি খুব ভালো করে চিনি এবং জানি। এই পদক নামে যতটা ভারীই হোক প্রাপ্তি সহজ এবং শতভাগ বানিজ্যিক। অর্থাৎ কয়েক লাখ টাকা ডোনেশনের দিয়ে দুই হাজার টাকার ক্রেস্ট কিনতে হয়।

এবার দর্শক বা লেখার জগতে পাঠকের সাইকোলজির যদি ব্যাখা করি...
আমরা পুরস্কারকে যোগ্যতা মান মানসিক ভাবেই মেনে নিয়েছি। যখন আমাদের সামনে পুরস্কার প্রাপ্ত কেউ আসেন, আমরা আগে থেকেই মেনে নিয়ে তার ছবি, দেখি বা লেখা পড়ি... তিনি বা তারা পুরস্কার পেয়েছেন, কাজেই উপযুক্ত।

আমাদের মস্তিষ্ক যাচাই করার প্রতি আকর্ষণ হারায়।
লেখার জগতে দেখেছি- ঈদ সংখ্যায় কিম্বা অন্য যেকোনো বিশেষ সংখ্যায় যে বা যারা লিখবে, সে বা তারা তত বড়ো লেখক। এইভাবনা মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছে। যে যত প্রতিযোগিতা জিতবে সে তত বড়ো।

আমরা বাহারি মোড়কে আকৃষ্ট হয়ে, খোঁজার চেষ্টাটাই ত্যাগ করেছি।
তবে, ব্যতিক্রম তো থাকবেই। কিছু পুরস্কারের কদর সত্যিই করতে হয়।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা মতামত... 'ভালো' সৃজনশীল, সৃষ্টি নিভৃত সাধনা ছাড়া সম্ভব নয়। তাই প্রকৃত সৃষ্টি করতে হলে, নিজেকে নিজের অন্তরে লুকিয়ে ফেলতে হবে। আর সৃষ্টির যারা কদর করবে... তাদের ছাই সরিয়ে দেখতেই হবে। না হলে নকলের ভিড়ে সবাই হারিয়ে যাবে।

আমি মনে করি, লেখকের ক্ষেত্রে পাঠকপ্রিয়তা আর শিল্পীর ক্ষেত্রে তার দর্শক প্রিয়তা- এর থেকে বড়ো পুরস্কার নেই। বাংলা সাহিত্যের পুরস্কার ব্যাপার টা একেবারেই লেখা লেখির মান/ পরিমাণ/ গভীরতার সংগে ডাইরেক্ট রিলেটেবল না। তবে পুরস্কার নবীনদের উৎসাহ দেয়। কিক স্টার্ট করে দেয়।

যিনি নিভৃত সাহিত্য সাধক, তার লেখা পুরস্কৃত হলে পাঠক তাকে পড়েন, তা লেখার মানদণ্ড যেমনই হোক। আবার পুরস্কার অযোগ্যদের অতিউৎসাহও দেয়- যা আখেরে ক্ষতি। এখন অতি সহজেই যে কোনও পুরস্কার পাওয়া যায়। ফলে ঠিক কতটা খাটলে একটা পুরস্কার পাওয়া যায়, সেটা বোঝা আর কারোর পক্ষে সম্ভব হয় না। এখন যোগ্যতম কে পুরষ্কৃত হতে দেখিনা। আগেও হয়নি তা নয়।

পুরস্কারের সাথে সুযোগ ব্যাপারটা আসে। যেকোনো উপলক্ষে লেখা প্রতিযোগিতায় বেশীরভাগ সময়ই অতি নিম্নমানের হয়েও ছেপে যায় বিভিন্ন পত্রিকায়। এর একটা বড়ো কারণ যোগাযোগ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৪৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিয়ে দেখতে দিন কে বাঘ কে বিড়াল?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬



সব দলের অংশগ্রহণে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিন। কোন দলকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে কি করেনি সেইটাও জাতিকে দেখতে দিন। পিআর পদ্ধতির জাতীয় সংসদের উচ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×