চল্লিশ বছরে পদার্পণ.....
সেইভাবে জীবনে কোন প্ল্যানটেলান আমার কোনদিনই ছিলনা। একটাই প্ল্যান ছিলো, সেটা হল- বিয়ে করার প্ল্যান। একটা নয়, অসংখ্য বিয়ে করার প্ল্যান ছিলো- সেই ছোট্টবেলা থেকেই! অসংখ্য বাচ্চাকাচ্চা হবে... বিয়েটা স্রেফ রূপকথা মনে হত তখন, মানে এখনও হয় আর কি! খালি রূপকথার শেষটুকু জানা নেই। আসলে জানার প্রয়োজনও বোধ করিনি কোনদিনই।
আমি প্রতিদিনই ভালো খেতে পছন্দ করতাম, বই পড়তাম। বিয়ে করেই বুঝলাম- 'বিয়ে কি বিপদজনক সুন্দর'! বিয়ে করেই বুঝলাম -বিয়ে করার মতো কঠিন কাজ দুনিয়ায় আরও একটা আছে সেটা হচ্ছে আমার প্রথম পছন্দ- 'প্রতিদিনই ভালো খাবার জোগাড় করা'!
উনচল্লিশ বছর কেটে গেল!
'কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কি সে- আশী বিষে দংশেনি যারে....'- অনেক কথাই রাখা হয়নি। সব কথা মনে রাখতে নেই। এইতো সেদিনের কথা। হু হু করে সময় চলে গেল কোথা দিয়ে বুঝতেই পারলাম না। এই যে আমি প্রায়শই 'বৌ-খোশ' চা-কফি বানাই, বৌকে ফাটাফাটি রান্নাটান্না করে খাওয়াই, বেসুরো গলায় গানটান শোনাই, বাধ্য স্বামীর মতো ঘুরতে নিয়ে যাই- এটা কিন্তু কোন ভয়ভক্তির কেস না। নিন্দুকেরা এরকমভাবে বিষয়টা দেখতে চাইলেও আসলে পুরোটাই 'পিওর লাভ' অর্থাৎ ফেয়ার এন্ড লাভলী!
একটা কথা জানিয়ে রাখি- ওই কূলের প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখে যখন বিয়ে করি তখন বিরোধিতাকারীদের প্রধান কয়েকজনকে নিজ হাতে বিবাহত্তর অনুষ্ঠানে দাওয়াত পত্রে লিখেছিলাম-
"....
.... তারিখ অনুষ্ঠানে এসে দোয়া করবেন। দোয়া ও উৎসাহ পেলে আবারও বিয়ে করবো।
বিনীত-
আপনারা যারা আমাকে গুণ্ডা-মাস্তান খেতাব দিয়েছেন।
পুরো সময়টা যে মসৃণ হাইওয়েতে গাড়ি চলার মত জীবনটা চলেছে তা অবশ্যই নয়। রূপকথা ভাবার চেষ্টা করলেও জীবনটাতো আর সত্যিই রূপকথা নয়।
বহু ওঠাপড়া, অনেক কষ্ট, কিছু দুঃখের মাঝে আমাদের সংসারটা ভরসার মত করে, স্পর্ধার মত করে, অকালবসন্তের মত করে ভালবাসায়, ঝগড়ায়, অভিমানে আর অনুরাগে রঙিন হয়ে আছে গেল উনচল্লিশ বছর। আশা করি ভালোবাসার নবুয়ত প্রাপ্তিতে আরও পূর্ণতা পাবে।
সত্যি বা অলীক রূপকথার গল্পের মতোই হাঁটতে চাই আজীবন....
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



