somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

আমি থেকে আমরা কজন, একদিন আমজনতা হবো....

২০ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি থেকে আমরা কজন, একদিন আমজনতা হবো.....

ফিরে যাই- সেই ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল, আমরা মাত্র কয়েকজন সেনাতত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখি শুরু করে ছিলাম ব্লগে....২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই আমরাই অজস্র হয়ে গোটা বিশ্বের কাছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলেছিলাম.... শত নিপীড়ন নির্যাতন করেও আমাদেরকে থামানো যায়নি। তারপরের ইতিহাস সর্বজন বিদীত।


ফিরে যাই- স্পেন।
সময়টা ১৯৩৬-এর ১৮ জুলাই। ফ্র্যাঙ্কো, মোলা ও অন্যান্য ফ্যাসিস্ট নেতারা স্পেনের প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের ঘোষণা করে। সেই দিনই স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ শহরের বেতারকেন্দ্র থেকে নারীকণ্ঠে প্রতিরোধের দৃপ্ত আহ্বান ছড়িয়ে পড়ে সারা স্পেনে- 'হাঁটু গেড়ে বেঁচে থাকার চেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মরাও ভালো।' ছড়িয়ে পড়ে তাঁর ইস্পাতদৃঢ় ঘোষণাঃ 'নো পাসারান! আমরা কোনও অবস্থাতেই ওদের জিততে দেব না।' যে-বিপ্লবী নেত্রীর ঘোষণা সেদিন সমগ্র স্পেনের শ্রমজীবী জনতাকে উদ্দীপিত করেছিল, তিনি একজন খনিশ্রমিকের মেয়ে- ডলরেস ইবারুরি। 'লা পাসিওনারিয়া'র আড়ালে হারিয়ে যায় নিজের নাম- ডলরেস ইবারুরি।

প্রসংগত স্পেনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইবারুরির আত্মজীবনী 'দে শ্যাল নট পাস' থেকে কিছু অংশ পড়ে নেওয়া যাক এই আরক্ত সময়েঃ

'ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কেউ নিরপেক্ষ ছিল না। হয় তোমরা আমাদের পক্ষে, নয়তো বিপক্ষে। যুদ্ধ ও শান্তি, ফ্যাসিবাদ ও গণতন্ত্র- এদের মধ্যে সংগ্রামে উদাসীন থাকার অর্থই হল, আক্রমণকারীকে সাহায্য করা। সারা পৃথিবীর মানুষদের সংগ্রামী মেজাজকে লক্ষ করে বিশ্বব্যাপী সকল ফ্যাসিস্টবিরোধী ও গণতন্ত্রকামীর কাছে ডাক দিল- স্পেনের পাশে দাঁড়াও। নিজের দেশে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ো এবং স্বাধীনতার সপক্ষে লড়বার জন্য তাদের স্পেনে পাঠাও।'

এই আহ্বানে সাড়া দিল ফরাসি, জার্মান, ইতালীয় ও পোল্যান্ড বাসীরা। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর দলপতি হয়ে মাদ্রিদকে রক্ষা করতে এলেন হাঙ্গেরির এমিল ক্লেবার। জার্মানি তখন হিংস্র নাৎসি পশুর থাবার নিচে। তবুও সেখান থেকে এলেন ফ্যাসিস্টবিরোধী- ফ্রানৎস্‌ ডাহ্‌লেম, হান্স বেইমলার, হেনরিখ রাউ, গুস্তাভ ৎসিস্তা, হাইনৎস্‌ হফম্যান, লুই সুস্টার, লুডউইস রেন এবং আরও অনেকে।

হিটলারের বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বুলগারিয় বিপ্লবী নেতা ডিমিট্রভ। সাথে এলেন শত-শত শ্রমিক, কৃষক ও বুদ্ধিজীবী। ইতালি থেকে এলেন ফ্যাসিস্টবিরোধী সংগ্রামে পোড়খাওয়া সহযোদ্ধা- লুইজি লঙ্গো, পিয়েদ্রো নেন্নি, দ্য ভিত্তোরিও, নিনো নানেত্তি, ভিত্তোরিও ভিদালি, প্যাকিয়ার্ডি, রোসেল্লি প্রমুখ। ফ্রান্স থেকে এলেন- দুমঁ, আঁদ্রে মার্তি, কর্নেল ফ্যাবিয়েন এবং আরও অনেকে। এভাবেই হাঙ্গেরি, রুমানিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, ব্রিটেন, যুগোস্লাভিয়া, অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন সহ চুয়ান্নটি দেশ থেকে কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী যোগ দিতে এসেছিলেন স্পেনে। ইন্টারন্যাশনাল ব্রিগেডের জনসংখ্যা হয়তো খুব বেশি ছিল না, কিন্তু গুরুত্ব ছিল ঐতিহাসিক এবং কালোত্তীর্ণ।

আবার ফিরে আসি স্বদেশভূমে।
২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল সেনা তত্বাবধায়ক সরকারের দমন-পীড়ন পেরিয়ে ভারতীয় ষড়যন্ত্রের সহযোগী হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিনী সহায়তায় প্রহসনের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ। প্রায় ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনকাল আমরা রাজপথে, সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলাম তখন দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবি, সংস্কৃত কর্মী, শিল্পী সাহিত্যিক কবি, সাংবাদিকরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে লেহ্য চোষ্য চর্বনধন্য হয়েছে। আমরা ছিলাম 'কতিপয়'।


এখনো 'আমরা কতিপয়'!
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা জ্ঞাতিগুষ্টি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর 'আমরা কতিপয়' গুম নির্যাতনের ভুক্তভোগীরা গুম কমিশন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে ন্যায় বিচারের জন্য মামলা দায়ের করেছি। যার কারণে, পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদের দোসর বাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার কুৎসা প্রচারে ঝাপিয়ে পড়েছে এমনি মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে! এখনো সেইসব পদলেহন করা কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নিরব।


ওরে ভার্সুয়াল গুন্ডা বাহিনী, তোদের লেডি হিটলার ক্ষমতায় থাকতে তাকে এবং তার লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীকেই থোড়াই কেয়ার করে সোচ্চার ছিলাম। সেখানে এখন তোদের মতো অজ্ঞাতনামা শাখামৃগ, বরহা শাবক গুন্ডাদের ভয় পাবো- তেমনটা ভেবেছিস! তোদের মাথাভর্তি গু। তোদের জন্য করুণা হয়। আমাদের চিন্তা চেতনা- "জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য, চিত্ত ভাবনাহীন"! অতএব, আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে লাভ নাই।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৫:৪২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×