somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

ষোলো বছরের অন্ধকার থেকে ন্যায়বিচারের সূচনা....

১৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ষোলো বছরের অন্ধকার থেকে ন্যায়বিচারের সূচনা....

ষোলো বছর ধরে বাংলাদেশের বুক চিড়ে যে অন্ধকার নেমে এসেছিল- তার সূচনা হয়েছিল ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ও রহস্যাবৃত ঘটনার মাধ্যমে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তার প্রাণহানি ছিল শুধু একটি ট্র্যাজেডি নয়; এটি ছিল রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিকে ভেঙে ফেলার একটি লক্ষ্যভিত্তিক আঘাত। সেই ঘটনার পর বছরের পর বছর ধরে শত শত সেনা অফিসারকে নানা অজুহাতে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া, গুম-নির্যাতন, এবং প্রহসনের নামে বিচারে দণ্ড দেওয়া- সবকিছুই এক ভয়ংকর স্বৈরাচারী যাত্রার ইঙ্গিত হিসেবে দাঁড়িয়েছিল।

এই ষোলো বছরে শুধু সেনাবাহিনী নয়-
এই রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, নারী-শিশুরা- কেউই মুক্ত ছিল না।
হাজারো গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা মামলা, নির্বিচারে গ্রেফতার- বাংলাদেশের মানুষ প্রতিটি দিন কাটিয়েছে ভয়ংকর আতঙ্কের মধ্যে।

২০২৪ জুলাই আন্দোলন তো যেন পুরো জাতির ওপর আরেকটি কালো অধ্যায় হয়ে নেমে এসেছিল। প্রায় দুই হাজার মানুষের মৃত্যু, হাজারো মানুষের দৃষ্টিশক্তি হারানো, ত্রিশ হাজারের ওপর আহত হওয়া- এ যেন কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নয়, যেন কোনো দখলদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতায় ঘটে যাওয়া ঘটনা। আমার, আপনার এবং আমাদের অভিজ্ঞতা কোনো ব্যক্তিগত গল্প নয়; এগুলো সেই অন্ধকার সময়ের সবচেয়ে নির্মম সাক্ষ্য।

এই সমস্ত অপরাধের বিচার অবশেষে যখন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থার কঠোর পর্যবেক্ষণে সম্পন্ন হলো- তখন বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখালো: ন্যায়বিচারের পথ কঠিন, কিন্তু তা এড়ানোর পথ নেই। আন্তর্জাতিক মিডিয়া বিচার প্রক্রিয়ার প্রশংসা করেছে, এটাকে “due process”-এর অনন্য উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

কিন্তু বিস্ময়করভাবে-
যখন হাজার হাজার পরিবার তাদের হারানো সন্তানের স্মৃতি বুকে নিয়ে কিছুটা শান্তির নিশ্বাস নিতে শুরু করল, তখনই দেখা গেল কিছু শিক্ষিত ব্যক্তিরা বিচার না দেখে, ভুক্তভোগীর কান্না না দেখে, মানবতার পক্ষে না দাঁড়িয়ে- অপরাধী রক্ষার বুলিতে বিবৃতি দিচ্ছে। এই অবস্থান শুধু অমানবিকই নয়- ন্যায় বিচারের প্রতি চরম অবমাননা।


যারা বছরের পর বছর মানুষ হারানোর ব্যথা দেখেনি, গুমের বিভীষিকা বোঝেনি, কিংবা দমন-পীড়নের রাতগুলোতে নামহীন কবরের গল্প শোনেনি- তারা বিচারকে “রাজনীতি” বলে অবমূল্যায়ন করতে পারে।
কিন্তু একটি জাতি জানে-
এই বিচার নিছক রায় নয়, এটি ন্যায়বিচারের পুনরুত্থান।

১০০১ জন শিক্ষক নামের কুলাংগার বিচারবিরোধী বিবৃতি যারা দিচ্ছে- তারা ভুলে যাচ্ছে, শিক্ষকতার মানে হলো সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো, নির্যাতিতের পাশে দাঁড়ানো, মানবতার শিক্ষা দেওয়া। ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করা, গণহত্যা অস্বীকার করা, গুম-খুনকে হালকা করে দেখা- এগুলো কোনো সভ্য সমাজে শিক্ষকের পরিচয় হতে পারে না। এদের বক্তব্য ইতিহাসের কাছে নিন্দিত হবে;
এই জাতি কখনো ভুলবে না কে ন্যায়বিচারের পাশে দাঁড়ালো আর কে অন্যায়ের পাশে।


আজকের এই বিচার-
একটি সরকারের পতনের বিচার নয়,
একটি রাজনৈতিক দলের বিচার নয়-
এটি হলো অমানবিকতার বিরুদ্ধে মানবতার জয়।

এ কারণেই যারা চোখ বন্ধ করে অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে- তারা ইতিহাসের আদালতে নিজেরাই দায়ী হয়ে থাকবে।
ন্যায়বিচার শুরু হয়েছে। এই জাতি আর সেই অন্ধকারে ফিরবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:০৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×