একজন খালেদা জিয়া.....
কত অপমান, কত নিষ্ঠুর রাষ্ট্রীয় নির্যাতন-
যে পরিমাণ কষ্ট একজন মানুষকে ভেঙে চুরমার করে দিতে পারে, সেই সবকিছুর পরও খালেদা জিয়া দাঁড়িয়ে আছেন এক শতবর্ষী বটবৃক্ষের মতো-
ঝড় আসে, বজ্র নামে, ঝাপটা বইতে থাকে-
তবু তিনি পড়ে যান না, কারণ তাঁর দাঁড়িয়ে থাকা শুধু শারীরিক নয়, এক বিশ্বাসের, এক মর্যাদার প্রতীক।

আগুন রঙের খালেদা জিয়ার ব্যক্তিত্বও আগুনরঙা।
তিনি ছিলেন রাণীর মতো-
কথায় নয়, আচরণে;
কণ্ঠে এবং দৃষ্টিতে;
শক্তিতে এবং সংযমে।
এক ধরনের স্বাভাবিক রাজসিকতা ছিল তাঁর ভেতরে,
যা শিখে পাওয়া যায় না, অর্জন করতে হয় বছরের পর বছর ত্যাগ, ধৈর্য, আর মানুষের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা দিয়ে।
তিনি দেশকে নিজের সম্পত্তি ভাবেননি,
ক্ষমতাকে নিজের জন্মগত অধিকার মনে করেননি।
তিনি বিশ্বাস করতেন ভোটে, মানুষের রায়ে, জনগণের সিদ্ধান্তে। রাজনীতি তাঁর কাছে ক্ষমতার খেলা ছিল না-
ছিল দায়িত্ব, ছিল বিশ্বাসের পরীক্ষা।
রাজনীতি করতে হলে মিথ্যা বলা জানতে হয়,
সত্যকে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল জানতে হয়,
হাসি মুখে বিশ্বাসঘাতকতা করতে হয়।
এই তিনটিই তিনি পারেননি।
এই অক্ষমতার কারণেই তিনি ছিলেন আলাদা-
আর এই আলাদা হওয়াই তাঁকে করেছে অনন্য।

তিনি শুধু কারো স্ত্রী নন, কারো মা নন-
এই সম্পর্কগুলো তাঁর পরিচয় নয়।
তিনি নিজেই তাঁর পরিচয়।
তারেক রহমানের মা হওয়ার আগেও তিনি ছিলেন খালেদা জিয়া,
জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হওয়ার আগেও তিনি ছিলেন খালেদা খানম।
দিনশেষে, সব পরিচয়ের ওপরে,
তিনি স্রেফ খালেদা-
একটি নাম, যা ধীরে ধীরে রূপ নিয়েছে এক চরিত্রে,
এক প্রতিরোধে, এক নারী-শক্তিতে।
আজ তিনি অসুস্থ, নিঃশব্দ, দুর্বল-
তবুও তাঁর জীবনযুদ্ধ, তাঁর স্থিতি,
তাঁর দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি আমাদের শেখায়-
মর্যাদা কখনো ভেঙে পড়ে না,
যদি তার ভিত্তি সত্য আর আত্মমর্যাদায় গড়া হয়।
আর ঠিক এই কারণেই,
খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রী নন-
তিনি একটি সময়, একটি অধ্যায়, একটি প্রতীক।
তিনি খালেদা জিয়া।
আর এই নাম উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে
এক অবিনশ্বর দৃঢ়তার ছবি ভেসে ওঠে-
যে দৃঢ়তা খুব কম মানুষকেই আল্লাহ দান করেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


