প্রশ্ন: ছেলেরা লুকিয়ে পতিতালয়ে যায় কেন ?
উত্তর: আমার ব্যক্তিগত অবসার্ভেশন ছেলেরা সবকিছুর উপরে মা, বাবা, ভাই বোন , শিক্ষা , প্রেমিকা, খাবার , কাপড় সব কিছুর উর্ধ্বে সোশ্যাল স্ট্যাটাস ভালোবাসে,বিশ্বাসীদের ক্ষেত্রেও ঈশ্বরের উপরেও। সোসাইটি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেওয়াকে তারা জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন মনে করে, পপুলারিটি, গণমানুষের রেসপন্স ওরা সবচে বেশী ভালোবাসে । সোসাইটি ছেলেদের স্বাধীন জীবন যাপনের যথেষ্ট সুবিধা দেয়, যে সামান্য দুই একটা বিষয়ে এদের মহান রেপুটেশন ক্ষুন্ন হয় সেই সামান্য দুই একটা বিষয় লুকায়ে ছাপায়ে করে ওরা। সোশ্যাল স্ট্যাটাস ভালোবাসেনা-এরুম একটা ছেলে পাইতে হিমালয় থেকে তিব্বত থেকে আন্দিজ সব জায়গায় ঘুরে টুরে কোন ট্রাইবাল সমাজে দুই তিনটা, আর সিভিলাইজড সমাজে এক আধটা পাওয়া গেলেও পাওয়া যেতে পারে ।
এমনকি আপাতদৃষ্টিতে যাদেরকে এন্টিসোশাল মনে হয় , হয়ত ড্রাগস ফাগস নেয় কিংবা শালপার্টি যৌনতা কবিতা টবিতা লেখে তারাও সোশ্যাল বিইং, ছেলেদের সোশ্যাল স্ট্যাটাস কমতে অনেক কষ্ট করতে হয়। সামান্য এক বিড়ি খায়াই মিয়েরা এই সমাজে আউটকাস্ট হয়ে যায়। ছেলেদের মদ বিড়ি , bizarre ড্রেসাপ, এমনকি যৌনতা নিয়ে লেখালেখি আঁকাআঁকি কিছুতেই পাব্লিক আবেদন কমেনা, পারিবারিক আবেদন-ও কমেনা, ওরা ভ্যালু পাবেই । তবে............
ছেলেদের সম্পূর্ণ সমাজচ্যুত করতে পারে কেবল নারীরা, শুধু বেশ্যাগমন কেন, ছেলেরা খুব সাবধানে তাঁর স্ত্রীর প্রতিও ভালোবাসা প্রকাশ করে, অতিরিক্ত প্রেমের প্রকাশে তাঁকে স্ত্রৈণ বললে তাঁর ইজ্জত বেইজ্জত হয়ে যায়। মেয়ে রিলেটেড যে কোন কিছুই ছেলেদের সোশ্যাল স্ট্যাটাসের পরিপন্থি। ছেলেদের ভালোবাসার প্রকাশ হবে গোপনে লুকায়ে আলাদা করে রাতের অন্ধকারে চুপিচুপি বেশ্যার কাছে, নয়তো প্রেমিকার কাছে, নয়তো স্ত্রীর কাছে। যদি কোন কারণে সমাজ বাবাজি তাঁর প্রেমের দিকে আংগুল তুলে তবে গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া বেশীর ভাগ পুরুষ-ই লেজ গুটিয়ে পালাবে।
পুরুষতন্ত্র- মানে একটা লিংগ প্রধান সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছেলেদের মানুষ অহমের পাশাপাশি পুরুষ অহম বিদ্যমান।ছেলেদের এই পুরুষ অহমের সিংহভাগই ডিক্টেট করে সে নারীকেন্দ্রিক আচরণগুলো কেমনে ডিল করে।
যেমন
# ঠিকঠাক মতন প্রেমিকাকে এভয়েড করা হইতেসে কিনা,
# কোন নারীর কাছে বশ্যতা স্বীকার না করার আচরণগুলো ঠিকমত প্রকাশ পাইসে কিনা, যেমনঃ ফ্রী টাইমে প্রেমিকাকে মিস না করে এক্স বক্সে বন্ধুদের নিয়ে গেইম খেলতে পারছে কিনা, কিংবা সার্বিয়া আর মন্টেনেগ্রোর জাতিসংঘের সদস্যপদ বাতিল হইসে কিনা ইত্যাদি তথ্য জানাটা প্রেমিকাকে মিস করার থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং অহমের পক্ষে স্বাস্থ্যকর।
# বিছানায় কিংবা যৌনতার সময় বাদে প্রেমিকাকে বা বেশ্যাকে বা কোন নারীকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবাটা ওদের অহমকে তীব্রভাবে আহত করে।
# ভালোমতন মেয়েদেরকে গাধা ভাবা হইসে তো, যোগ্য নারীকে নারী হওয়ার কারণে ঠিকঠাকমত এভয়েড করা হইসে কিনা
# মেয়েদের অবশ্যম্ভাবী বলদ প্রমান করার জন্য ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে তাঁর ত্রুটি খোঁজা হইসে কিনা।
# সায়েন্স , ম্যাথ, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে ছেলেরা এবং ছেলে হওয়ার কারণে ব্যক্তি নিজে প্রাধান্য পাচ্ছে কিনা এবং কোন মেয়ে একটা বিষয় হয়তো জানে যেটা হয়তো আলোচ্য ছেলেটা জানেনা তাও জানার ভাব ধইরা থাকতেসে কিনা মেয়েটার সামনে।
# সমস্ত জানপ্রাণ দিয়ে মেয়েদের সৌন্দর্য বন্দনা কইরা ব্যক্তিসত্ত্বাকে দমন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো কিন্তু সেই সৌন্দর্য বেঁচে মেয়েরা উপার্জন করলে যেমনঃ মেয়েরা মডেলিং শুরু করলে আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মেধা ব্যবহারের প্রসংগ তোলা হইতেসে কিনা।
# আশেপাশের সকল মেয়ে তাহার আদেশ নিষেধ দ্বারা প্রভাবিত হইতেসে কিনা
# সামাজিক সম্মান ও প্রতিপত্তি অর্জনের ট্রফি স্বরূপ বাড়ি, গাড়ি আর ফর্সা ইংরেজি বলা(new addition) সুন্দরী বধু অর্জিত হইতেসে কিনা।
# বধু উপার্জনক্ষম হইলেও বরের থেকে কম উপার্জন করছে কিনা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
# নিজের পরিবারের, নিজের টেরিটোরি যেমনঃ এলাকা , বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি জায়গার মেয়েদের সম্পত্তি ভাবার প্রবণতা ।এমন বহু নজির আছে , এক এলাকার মেয়ে আরেক এলাকার ছেলেকে পছন্দ করলে কোন কারণ ছাড়াই এলাকার ভাই বেরাদারেরা অন্য এলাকার ছেলেকে পিটায়ে আসে
ইত্যাদি হচ্ছে পুরুষ অহমের নিরন্তর বহিঃপ্রকাশ।
বিশেষত ছেলেরা নিজেদের সর্বদা মেয়েদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ , মেয়েদের কর্তা, মেয়েদের কম গুরুত্ব দেয় ইত্যাদি দেখানোতে একটা পরম ইগোতৃপ্তি পায়, অনেক প্রগতিশীলেরাও এতে ইগোতৃপ্তি পায় ।এমন কোন কাজ ওরা সাধারণত করতে চায়না যাহাতে ওদের শ্রেষ্ঠত্ব সামাজিকভাবে খর্বিত হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫৮