মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রোগের উপদ্রব থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে "উবাকিয়া" ও জেনেটিক্যালি মডিফায়েড মশা বা বন্ধু মশা' নামে পরিচিত চমৎকার দুটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়ে ভাবছে সরকার। দেশের আবহাওয়া, পরিবেশ সব বিবেচনা করে যে পদ্ধতি বেশি কার্যকরী সেটা সিলেক্ট করার লক্ষে গঠন করা হয়েছে একটা স্পেশাল কমিটি। (সুত্র: The Daily Star অনলাইন)
কিন্তু দুঃখজনক সত্য হচ্ছে, কমিটি গঠনের ৭ মাস অতিবাহিত হলেও কমিটির লোকেরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌছুতে পারছেন না। কিংবা তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে গড়িমসি করছেন।
আমার ধারনা, তাদের এইসব গড়িমসি করার পেছনে নিশ্চয়ই চিকিৎসা বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত গুষ্ঠি নোংরা উদ্দেশ্য জড়িত। সেই বক্তব্যে যাওয়ার পূর্বে উল্লিখিত পদ্ধতি দুটো সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক।
উবাকিয়া পদ্ধতি:
"উবাকিয়া" একটি ব্যাকটেরিয়া, যা মশা ছাড়া প্রকৃতির প্রায় ৬০% কীট পতঙ্গের দেহকোষে আছে। এবং ডিমের মাধ্যমে এই ব্যাক্টেরিয়া এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে প্রবাহিত হয়।
ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রামের বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি নিয়ে বিশদ গবেষণা করেছেন। তাদের ভাষ্যমতে, উবাকিয়া ব্যাক্টেরিয়া আছে এমন মশার দেহে ডেঙ্গু ভাইরাস বেড়ে উঠতে পারেনা। অর্থাৎ এডিস মশার কোষে উবাকিয়া ব্যাক্টেরিয়া ইনজেক্ট করে দেওয়া গেলে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো ভাইরাসজনিত রোগ সংক্রমিত হবে না।
উলবাকিয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে ''ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রামের" নিচের ভিডিওটা দেখুন-
অথবা বিস্তারিত পড়তে ভিজিট করুন- Click This Link
বিবিসি বাংলা হতে পাওয়া তথ্যমতে- এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে অষ্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশীয়া, ভিয়েতনাম, কলম্বিয়া, মেক্সিকো ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি দেশে সাফল্য পাওয়া গেছে।
জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বা বন্ধু মশা:
এই পদ্ধতিতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে মশার কোষে জিন প্রবেশ করিয়ে এমন কিছু জিনগত পরিবর্তন ঘটানো হয় যার ফলে মশার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বেঁচে থাকতে পারে না। ফলে ধীরেধীরে মশার সংখ্যা কমতে থাকে।
এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন-
বিস্তারিত পড়তে এই নিবন্ধন'টি পড়ুন- Click This Link
অথবা ভিজিট করুন তাদের সাইটে: https://www.oxitec.com/friendly-mosquitoes/
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ কয়েকটি দেশে ব্যবহার করা হয়েছে ম্যালেরিয়া ও জিকো ভাইরাস প্রতিরোধে এই পদ্ধতি ব্যবহার হয়েছে।
উপরের দুটো পদ্ধতি'ই আমার ভালো লেগেছে। তবে এই পদ্ধতিগুলোর অপব্যবহার করে এডিস মশার পরিমাণ বাড়ানোও যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভবিষ্যতে যুদ্ধের বিকল্প হিসেব বিজ্ঞানের এইসব প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। আমাদের সরকারের উচিত, এইসব বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ সংস্থা গড়ে তুলা।
আমাদের দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা এডিস মশার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী কোম পদক্ষেপ নেননি; কারণ, কার্যকারী পদক্ষেপ নিলে ডেঙ্গু আতংকে রূপ নিতো না। ডেঙ্গু আতংকে রূপ না নিলে চিকিৎসার নামে স্কয়ারের মতো প্রাইভেট ছোটবড় কসাইখানাগুলোর মালিকগুষ্টির চিকিৎসা বিজনেসটাও এতো জমজমাটভাবে চলতো না। আশেপাশের সরকারী, বেসরকারি ক্লিনিক, ফার্মেসিগুলাতে খুজ নিলে দেখা যাবে- ডেঙ্গু আতংক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সারাদেশে নির্দিষ্ট কিছু মেডিসিনের বিক্রি প্রচুর বেড়ে গেছে। এই মেডিসিনগুলো কোথায় উৎপন্ন হচ্ছে? কারা তৈরি করছে?
আমার ধারনা, এই মেডিসিনগুলার ৮০% বাংলাদেশের গলাকাটা বিজনেস গ্রুপ স্কয়ার এর 'স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাস লিমিটেড এবং দরবেশ বাবার 'বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড' উৎপাদন করছে।
আমি শিওর, দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গড়িমসি কিংবা তালবাহানার পেছনে দেশের এইসব রাক্ষস গ্রুপগুলোর মালিকদের কালো হাত রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩০