সকাল থেক রাতুলের বুকে ব্যাথা। সে ব্যাথা ভুলতে শীতের দুপুরে রমনা পার্কে বসে নরম রোদে স্নান করছিল রাতুল। সবুজের মহাসমারোহের দিকে নজর বুলাতে বুলাতে চোখ চলে যায় আকাশের নীলের দিকে।
পৃথিবীর কী অসম্ভব মায়া।
বেঁচে থাকার সেকী আকুলতা।
না, সবুজে আর নীলে বেশীক্ষণ ব্যাথাটা ভুলে থাকতে পারেনা।অনন্ত জলিলের মত বুক চিরে বের করে আনে হৃদয়টা। ভবঘুরে ভিখারিদের জামার মত অসংখ্য জোড়া তালি দেয়া তার হৃদয়।প্রতিদিন কত ব্যথা সে পায়- কে জানে কোনটাতে হৃদয় আজ রক্তাক্ত হয়েছে।আকাশের নীল- বনের সবুজে কাজ না হলে পাহাড়ের সবুজ- সমুদ্রের নীলে কাজ হয়। ব্যাস্ত শহের ,ব্যাস্ত সময়ে সে ফুসরৎ কই?
হাত ব্যাগ থেকে সুঁই-সুতো বের করে রাতুল।হৃদয়টা আজ একটু বেশী ফেটে গেছে। শুধু সুতোয় কাজ হবে না।তালি লাগবে। পার্কের এদিক-ওদিক খুঁজে এক টুকরো কাপড় কুড়িয়ে আনে।অনেক ময়লা লেগে আছে।ঝেড়ে মুছে ওটাকেই ব্যাবহার উপযোগী করে নেয়।
তারপর তালি দিয়ে যত্ন সহকারে সেলাই করে হৃদয়।
নিজের হৃদয়।
একটু সুস্থ বোধ করে রাতুল। মনে কবিতা আসে। আবার কী একটা ব্যথায় মনযোগ ছুটে যায়।ক্ষিধে।ক্ষিধেয় তার পেট ব্যাথা করছে। একসময় সুখে থেকে, খেয়ে খেয়ে অনেক চর্বি জমিয়েছে পেটে। পেটের ক্ষিধেয় তাই পেট চিরে বের করে আনে কিছু চর্বি।হাতব্যাগে লবন-মরিচ আছে। চর্বিতে লবন মরিচ মাখিয়ে চিবুতে থাকে রাতুল।
চিবুতে থাকে অনেকদিনের জমানো সুখ।
১৯।০১।২০২২
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫৭