somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঙ্গুল্যান্ডে রঙিন রুপবান ও বোবা-কালা দর্শক ।

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বি-ল্যান্ডে রাজনীতির কমেডি সিক্যুয়েল- বছরের পর বছর চলছে একই চলচিত্র, ’রঙিন রুপবান’ । শুধুমাত্র, অভিনেতা-অভিনেত্রী বদলে গেছে, স্ক্রিপ্ট-ক্যারেক্টার-ডিরেক্টর একই আছে । দেখুন তাহলে-

’তালব্য শ-১’:
ব্যাপক জনপ্রিয় চরিত্র, দেশকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যাওয়ার পর, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তার শাসনকে সমালোচকরা কর্তৃত্ববাদ বলে মনে করেন, বিশেষ করে একদলীয় রাষ্ট্র, বাক্সাল তৈরির মাধ্যমে। তার সময়কাল রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দুর্ভিক্ষ পীড়িত ছিল, যার ফলে তার নেতৃত্বের প্রতি জনগনের মোহভঙ্গ ঘটে ।
’তালব্য ‘শ-২’:
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একাধিকবার ক্ষমতায় থাকাকালীন গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পতন, মানবাধিকার সমস্যা এবং দুর্নীতির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন ।
'জেড':
"কিছু একটা ছিল": ...শ-১ এর হত্যার পর, ইনি ক্ষমতায় আসেন এবং বহুদলীয় রাজনীতি এবং বাজার অর্থনীতি পুনঃপ্রবর্তন করেন, যার ফলে দেশে কিছুটা স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি আসে। বেশ কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি শুরু করার জন্যও তাকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
'ই':
একজন সামরিক স্বৈরশাসক, বিনোদন ও ভাঁড়ামোর জন্য বিখ্যাত ছিলেন । যিনি ১৯৮২ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। তার নয় বছরের শাসনকাল রাজনৈতিক দমন-পীড়ন ও দুর্নীতি ও নারী কেলেংকারীতে ভরপুর চিহ্নিত ছিল, যা জনসাধারণের মধ্যে হতাশার পরিমান বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল ।
• 'কে':
’তালব্য-শ-২ এর মতো, ইনিও একাধিক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার প্রশাসনের বিরুদ্ধেও দুর্বল শাসন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুর্নীতির সূচকে পর পর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি পাওয়ার সুখ্যাতি আছে ।
এর থেকে বোঝা যায় যে, বাংগুদেশে বিভিন্ন ধরনের নেতা ক্ষমতায় আসার পরও, দেশের রাজনীতিবিদ শ্রেণী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বাধীনতার পর থেকে ৫৪ বছরের ইতিহাসে জনগণকে ধারাবাহিকভাবে হতাশ করেছে ।
’তালব্য শ-১‘ এবং ’ওয়াই’ উভয়ই "যা করার কথা ছিল তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন" এই দাবি উভয় নেতার প্রতি জনসাধারণের চক্রবৃদ্ধি হতাশা ব্যক্ত করে, প্রাথমিকভাবে উভয়কেই প্রচুর জনপ্রিয়তা, সম্ভাবনা এবং প্রতিশ্রুতির সাথে দেখা হত ।
তাদের ব্যর্থতার কারন সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ থেকে এসেছে: ......শ-১ কর্তৃত্ববাদ, স্বজনপ্রীতি এবং কঠোর দমন-পীড়ন, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, দুর্ভিক্ষের কারনে প্রানহানি- এসবের জন্য জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছিলেন, অন্যদিকে ‘ওয়াই’ এখন তার অন্তর্বর্তীকালীন নেতৃত্বে দেশ বিশৃঙ্খলার দিকে ঝুঁকে পড়ার জন্য নিন্দার মুখোমুখি হচ্ছেন।

ভিন্ন প্রেক্ষাপট, একই ফলাফল
এই নেতাদের ব্যর্থতার মধ্যে মূল পার্থক্য প্রেক্ষাপটে । ...শ-১ ও শ-২ ব্যর্থতা ছিল ইচ্ছাকৃতভাবে কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতা একীভূত করার ফলাফল, যার ফলে জনসাধারণের আস্থা নষ্ট হয় এবং তাদের শাসনের সহিংস অবসান ঘটে। বিপরীতে, ’ওয়াই’ এর ব্যর্থতাগুলিকে ভাঙা রাজনৈতিক দৃশ্যপট এবং শাসনের প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জগুলি পরিচালনা করতে অক্ষমতার ফলাফল হিসাবে দেখা হয় । তার সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং পরিবর্তনের পথে ভুল পরিচালনা তার মেয়াদের শুরুতে তিনি যে জনসাধারণের আস্থা অর্জন করেছিলেন তা নষ্ট করে দিয়েছে।

’ওয়াই’-এর ব্যর্থতা
একসময় নিরপেক্ষ এবং বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে সমাদৃত ’ওয়াই’, ….শ-২-কে ক্ষমতাচ্যুত করার ছাত্র বিদ্রোহের পর বিপুল জনসাধারণের আশা নিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তবে, এক বছরেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর, বড় দাগে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, অর্থনৈতিক স্থবিরতা সামাল দিতে না পারা এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগে ইনি গনমানুষের আশা ভংগ করেছেন ।

সুনীলদা......... ৫৪ বছর কাটলো...... কেউ কথা রাখে নি । যুগে যুগে নাদের আলীদের মিথ্যে বয়ানে আমাদের পূর্বপুরুষেরা এবং আমরা আর কত বড় হতে হতে এখন বিলীন হবার পথে ।

এই দেশের রাজনীতি, স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ানদের সিরিয়াল, সিক্যুয়েল- বছরের পর বছর চলছে একই চলচিত্র, ’রঙিন রুপবান’ । শুধুমাত্র, অভিনেতা-অভিনেত্রী বদলে গেছে, স্ক্রিপ্ট-ক্যারেক্টার-ডিরেক্টর সেইম । যে কেউ সাধারন মানের আইকিউ আছে এমন মানুষ নির্ভুল বলতে পারবেন আগামী ২০৫০ পর্যন্তেএই দেশটিতে সরকার কি করবে, তাদের প্রধান কি করবেন, বলবেন এবং কি করবেন্না বা বলবেন্না ।

বড় আশা জাগানিয়া ছিল জেন-জি ২০১৮, ২০২৪-এর কোটা বিরোধী আন্দোলন । ইতিমধ্যে, সেই হিসাবও বরাবর পাওয়া গেছে, একই পথে তারাও হাটছে- কিছুমাত্র ব্যতিক্রম হয় নাই ।

হ্যাঁ, "বাঙ্গুল্যান্ড" এবং হতাশা- দুই-ই সমার্থক শব্দ, জন্মসূত্রে স্থায়ী বাসিন্দা বাঙ্গিদের যাদের আর কোথাও যাবার জায়গা নেই- এটা মেনে নিয়ে বাঁচতে জানতে হবে । সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে- কিছু না বোঝা, না শোনা, আশা না করা, অন্যায়-অনিয়মকে নিশ্চিত ধর্ষন হিসাবে উপভোগ করে সুনাগরিক হয়ে উঠা । মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সেই সামর্থ্য ও শক্তি দিন, আমীন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×