জিডিপি'র প্রবৃদ্ধি ৫.৫০ নিচে থাকবে -এডিপি বাস্তবায়নে ধীর গতি
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পর্যালোচনা করে এই অভিমত প্রকাশ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আইএমএফ-এর আবাসিক প্রতিনিধি সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এর আগে আইএমএফ-এর প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাথে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মাসাতুমায়া ঝাজি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আইএমএফ যথারীতি রুটিন পর্যবেক্ষণ কাজ করে যাচ্ছে। আইএমএফ বলেছে মূল্য স্ফীতি বেড়ে যেতে পারে, আমরাও বলি কিছুটা বাড়তে পারে। আইএমএফ বলছে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, আমরা বলি যে, ভর্তুকি যেখানে প্রয়োজন সেখানে দেবো। আইএমএফ বলছে যে, লক্ষ্যমাত্রার সাড়ে ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে না, আমরা মনে করি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ বা তারও বেশি হতে পারে। তারা (আইএমএফ) বলছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অবস্থা খারাপ, আমরা বলছি যে, এটা ভাল করবো। তারা বলছে যে, বিনিয়োগ পরিস্থিতি খারাপ। আমরা বলছি- বিনিয়োগ ভাল হবে।
আইএমএফ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বলছে, বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভাল নয়। প্রতিটি খাতেই নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন বছরের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আরো বলা হয়- রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি কিছুটা ভাল। এছাড়া অন্য কোনো সুখবর নেই। এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) একই কথা বলেছে। আইএমএফ এটাও বলেছে যে, জ্বালানি খাত বাংলাদেশের জন্য একটা বড় সমস্যা।
এদিকে দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে বিনিয়োগ খাতে। দেশে কোনো দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ নেই। অর্থমন্ত্রী নিজেও একথা স্বীকার করেছেন। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, জ্বালানি সংকটের কারণে বিনিয়োগ কমছে। আবার উদ্যোক্তারা একই কথা বলছেন। তাদের একই কথা- জ্বালানির নিশ্চয়তা না পেলে বিনিয়োগ সম্ভব নয়। বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও একই সুরে কথা বলছেন।
মূল্যস্ফীতি বাড়ছে
গত আগস্টের হিসাব হচ্ছে- মূল্য স্ফীতি ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে এবং গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অতীত রেকর্ড ভঙ্গ করে ভোগ্য পণ্যের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে দাঁড়ায় আর তখন মূল্য স্ফীতি ছিল পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ৪.৬৯ শতাংশে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর খাদ্য (চাল-আটা) ছাড়া যাবতীয় পণ্যের দাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামল ছাড়িয়ে গেছে। এখন চাল-আটার দামও বাড়ছে। বিশ্বমন্দা মোকাবিলার বিষয়ে সরকারের গঠিত টাস্কফোর্সের সভায় বলা হয়েছে যে, মন্দার প্রভাব কেটে গেলেও ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে।
এডিবি বাস্তবায়নেও চলছে ধীরগতি। এতেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এডিবি, আইএমএফ। এডিবি বাস্তবায়নে ধীর গতির অন্যতম কারণ- আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। আমলারা কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। অপরদিকে রয়েছে সরকার দলীয় প্রভাব। আবার দলীয় প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টিকেও একটি সমস্যা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




