somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমার না পাওয়া চিঠি

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামে বেড়াতে এসেছি । পড়াশুনার চাপে তো আজকাল আর গ্রামে আসাই হয় না।একটি সুন্দর সন্ধ্যা। পুকুর পাড়ে বসে আছি। আকাশের দিকে তাকাতেই আমার তিক্ত মনটা কেন জানি খুব ভাল হয়ে গেল। পুরোটা আকাশ তারায় ছেয়ে আছে। শহরের আকাশে তো আর সব সময় তারা দেখা যায় না। কিন্তু গ্রামের আকাশে হরহামেশাই এই জিনিস চোখে পড়ে। ও আচ্ছা আমার মনটা কেন তিক্ত এইটাই তো বলা হয় নাই। তোমার সাথে আমার গত ১ সপ্তাহ ধরে কোনো কথা হচ্ছে না। তুমি কেন বোঝো না যে তুমি ছাড়া আমার আর কোনো অবলম্বন নাই। হুম, আমার ও একটা অন্যায় ছিল। আমার অন্যায় ছিল, আমি তোমাকে শুধু আমার করে পেতে চেয়েছিলাম। আমি চাইনি তোমাকে কারো সাথে শেয়ার করতে। আচ্ছা তুমি ই বল তোমাকে কি আমি কারো সাথে শেয়ার করতে পারি?
সন্ধ্যা থেকেই ভাবছি তোমাকে আজকে ফোন করব। আমাদের দুই জনের যত ভুল বুঝাবুঝি আজকে সব দূর করব। আজকে যেকোনো ভাবেই হোক তোমার মাথায় নতুন যেই ভূত চেপেছে তা দূর করব। আমি শুধু রাতের আধাঁর আরো ঘন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। অপেক্ষা করতে করতে কখন জানি পুকুর পাড়ে ঘুমিয়ে গেছি। যখন ঘুম থেকে জেগে উঠি তখন দেখি মোবাইল এ তোমার একটা মিস্ড কল। বিশ্বাস করতে পারবে না মনটা যে কতটা খুশিতে ভরে উঠল। মনে হতে থাকল এই ঘন অন্ধকার রাত যেন শুধু তোমার আর আমার জন্য। সাথে সাথে তোমাকে ফোন করলাম। আর যখন দেখলাম আমি ফোন করার সাথে সাথেই তুমি ফোন রিসিভ করেছ তখন তো খুশিতে পুকুরের সচ্ছ জলে একবার ঝাপ ই দিতে ইচ্ছা করল। অনেক কষ্টে আমার সেই ইচ্ছা দমন করলাম। কারন এখন কোনো পাগলামি করলে হবে না। এখন তোমার সাথে এমন ভাবে কথা বলতে হবে যাতে করে কোনো ভাবেই তোমার আগ্নেয়গিরিটা ফেটে না যায়। তুমি যখন হ্যালো বললে আমার মনে সে কি আনন্দ। এইত সেই মিষ্টি সুর। কিন্তু সমস্যা হল সুরটা কেমন জানি বিষণ্ণ হয়ে আছে। আপাতত এই বিষণ্ণ সুরই আমার জন্য অমৃত।
আশ্চর্য ব্যাপার আমি তখন পর্যন্ত জানতাম না যে আমার জন্য বিরাট এক ধাক্কা অপেক্ষা করছে। প্রথমে আমার সব খবর নেওয়ার পরই তুমি আমাকে একটার পর একটা ধাক্কা উপহার দিতে শুরু করলে।
ধাক্কা ১ – এই যতদিন তুমি আমার সাথে কথা বলনি, ততদিন নিয়মত তোমার সাথে ফয়সালের কথা হচ্ছিল। এতে ও আমি খুব একটা অবাক হইনি, কেননা তুমি যে আমার বারবার নিষেধ সত্ত্বেও ফয়সাল এর সাথে কথা বল তা তো আমি জানি ই। কিন্তু তুমি কখনো আমার কাছে ওর নামে খুব একটা প্রশংসা কর নি। আজকে যে তুমি তাই করতেছ। (ফয়সাল চরিত্রটা সবার কাছে খুব অপরিচিত। আমি একটু পরই ওর পুরিচয় দিচ্ছি।)
ধাক্কা ২ – হঠাৎ করেই তুমি খুব অস্পষ্ট করে বললে I Love You. আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না এইটা কি? প্রশংসা করছে ফয়সাল এর আর প্রেম নিবেদন করছে আমাকে। এইটা কেমন কথা? আমি তোমাকে আবার ও বলতে বললাম। তুমি আবার ও একই কথা বললে। কিন্তু ব্যাপারটা আমি নিশ্চিত হতে পারলাম না। আমি এইবার তোমাকে প্রতিটি শব্দ আলাদা আলাদা ভাবে উচ্চারন করতে বললাম। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে তুমি আমাকে প্রেম নিবেদন করতেছ না। তুমি বলেছ “ I Love Faisal” . এতক্ষনে আমি সত্য বুঝতে পারলাম যে তুমি ফয়সাল এর প্রশংসার পাশাপাশি আমাকে প্রেম নিবেদন করছ না। প্রেম নিবেদন করেছ ফয়সালকেই।
ধাক্কা ৩ – তুমি আর বললে যে তুমি আমার সাথে নিজের ক্যারিয়ারকে নিরাপদ মনে করছ না। আমি ঠিক ভাবে পড়াশুনা করি না। সব পরীক্ষাতে প্লেস পাইনা।
ধাক্কা ৪ – ফয়সাল তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসে। হয়ত আমার চেয়ে ও বেশি ভালবাসে। ও নাকি তোমাকে ছাড়া কিছু চিন্তাই করতে পারে না। নির্লজ্জের মত এই কথাগুলো বলতে তোমার একটুও লজ্জা করেনি। আমাদের ৩ বছরের পরিচয়ে কি আমি তোমাকে ভালবাসতে পারিনি?? কি করিনি আমি তোমার জন্য??
ধাক্কা ৫ – আমি নাকি খুবই স্বার্থপর। আমি নাকি আমার নিজেকে ছাড়া আর কিছুই বুঝি না। আমার কাছে নাকি আমার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবই সব। কিন্তু ফয়সালের সব কিছুই নাকি তুমি। এই কথা গুলো তুমি কিভাবে বললে?? কিছুদিন আগেই তো আমার সাথে কথা বলার সময় এই ফয়সালকে নেশাখোর বলে গালাগালি করেছিলে। আজ সেই সব কই??
এইবার আমি আমার কথা বলি। আমিতো হতবাক হয়ে গেছি। এই কথাগুলো কি তুমি বলছ?? এইত কয়েকদিন আগের কথা যখন কোনো কারনে তোমাকে বিশ্বাস নিয়ে কথা উঠলেই তুমি খুব অহঙ্কার এর সাথে বলতে তুমি ভুলে যেয়ো না যে আমি রিম্পা আপুর বোন। তাই আমার চরিত্রটা ও রিম্পা আপুর মতই হবে। (ফয়সাল এর মত রিম্পা আপু চরিত্রটাও আমি একটু পরে সবাইকে খুলে বলছি।)
আজ কোথায় তোমার সেই কথা??? এত তাড়াতাড়ি মানুশের অহঙ্কার শেষ হয়ে যায়??
ফয়সাল – ফয়সাল হচ্ছে ওদের ২ ব্যাচ বড় ভাই। যে কয়েকদিন ধরে ওর সাথে ভাব করার খুব চেষ্টা করছিল। আমি যদিও ব্যাপারটা জানতাম। কিন্তু ও আমার নিষেধ থাকা স্বত্তেও ফয়সালের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। যা আমি জানতাম না। যদি কখনো কিছু জেনে ফেলতাম তখন যেকোনো ভাবেই হোক ও কথা টা এড়িয়ে যেত।
রিম্পা আপু – রিম্পা আপু ওর আপন বড় বোন। যে কিনা তার নিজের ভালবাসার জন্য তার পরিবারকে ত্যাগ করেছে। যদিও রিম্পা আপু যার জন্য এত বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে সে নাকি ভবঘুরে টাইপ এর। কিন্তু রিম্পা আপু তার ক্ষেত্রে যথেষ্টই সফল। তারপর ও সে নাকি তার ভালবাসা ছেড়ে পালায়নি।
তোমার কাছে আমার কিছু প্রশ্ন???
*** তুমি আমার সাথে যেই কথাগুলো বলতে এখন সেই কথাগুলো একি ভাবে ফয়সালকেও বল??
*** এখন কি ফয়সালকে তোমার নেশাখোর মনে হয় না???
*** যেইভাবে রাতের বেলা তোমার হোস্টেল এর বারান্দায় বসে তুমি আমাকে স্বপ্ন দেখাতে সেই স্বপ্ন কি তুমি এখনো দেখ??
*** আমার রুমের সাথের বারান্দার কোনায় যেই টেবিলটার উপর বসে আমি সারারাত তোমার সাথে কথা বলতাম, সেই টেবিলটা কি এখন আমি সরিয়ে ফেলব??
*** আমাকে দেওয়া তোমার বইগুলো এখন আমি কি করব? এগুলোর দিকে তাকালেই যে আমার তোমার কথা মনে পড়ে।
*** তুমি কি এখন ফয়সালকেও বল যে তুমি রিম্পা আপুর বোন???
ভাল থেকো। আমি হয়ত তোমাকে আর কখনো পাব না। আর তুমি যদি কোনোদিন আমার জীবনে ফিরে আসো, তবু ও হয়ত আমি তোমাকে মেনে নিতে পারব না। শুধু এইটুকুই বলি আমার সাথে তুমি যা করেছ ফয়সালের সাথে একই প্রতারনা কর না। নিজেকে আর ছোট কোরো না।


(অন্য একটি ব্লগ এ পূর্বে প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ২:৩০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×