অভিনন্দন গ্লোব বায়োটেক বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের জন্য যে সাহস করে ভ্যাকসিন প্রজেক্ট হাতে নেওয়াতে....এটা বহু আগেই হওয়া উচিত ছিল....দু:খ হল যে বাংলাদেশের এত বিশ্ববিদ্যালয়, এত বায়োটেক ডিপার্টমেন্ট, শিক্ষক, পিএইচডি, সরকারী বায়োটেক ইন্সটিটউট কেউ এগিয়ে আসল না...আসলে ভাল কাজ করতে দরকার উদ্দোগ আর মটিভেশান....বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি টা ল্যাব ই ভ্যাকসিনের বেসিক কাজটা আরম্ভ করতে পারত যেটা গ্লোব বায়োটেক করে দেখিয়েছে...
আমি এপ্রিল মাসে একটা পোস্ট দেই করোনাভাইরাস- হার্ভাড প্রফেসর এখন বিলিনিওয়ার, সেই পোস্টে আমি খুব স্পস্টভাবেই লিখেছিলাম নিচের কথা গুলি
"ভ্যাকসিন ডিজাইন করা খুবই সহজ ..জাস্ট স্পাইক প্রোটিন এর ডিএনএ কোড কে ক্লোন করা...। যে কোন মলিকুলার বায়োলজি থেকে পাশ ছাত্র/ছাত্রীই করতে পারবে...। কিন্তু টেস্ট/উৎপাদন করার জন্য যে ব্যাপক ইনফ্রাস্ট্রাকচার দরকার সেটা আমাদের দেশে নাই তবে সমাধান হল....."
গ্লোব বায়োটেকের সংবাদ সন্মেলনে ড: আসিফ মাহমুদ (অভিনন্দন আবারো)..কে বলতে শুনলাম যে তারা এই সহজ পদ্ধতি তেই গিয়েছে অন্য সবার মত....স্পাইক প্রোটিন কোড কে খরগোসে ইনজেক্ট করেছে... এই বেবী স্টেপ টা কে আমি তেমন মূল্য দিচ্ছি না কেননা যে কোন প্রানীতে আপনি যখনই কোন ফরেন বডি ইনজেক্ট করেন...শরীরের ইমমিউন সিস্টেম এর কাজ ই হল ফরেন বডির এগেনেস্টে এন্টিবডি তৈরী করা (প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে)...আপনি যদি মরিচ বেটে তার রস কে ইদুরে ইনজেক্ট করেন, তাহলে তার শরীর থেকেই মরিচের রসের মধ্যে থাকা ক্যামিক্যালের এগেনস্টে এন্টিবডি তৈরী হবে (যেহেতু খরগোসের সেল আগে কখনও বাটা মরিচ দেখে নাই) ...এটাই নিয়ম...তাই গ্লোব যখন স্পাইক প্রোটিন এর কোডকে খরগোসে ইনজেক্ট করেছে..খরগোস স্পাইক প্রোটিন এর এন্টিবডি তৈরী করেছে আর গ্লোব সেটাই দেখতে পেরেছে...।নিয়ম মাফিক তাই হওয়ার কথা....তাই আমি বলছি এটা বেবী স্টেপ...যেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২৫- ৩০ টা বিভিন্ন বায়োটেক ল্যাবে করা যেত কিন্তু কেউ এগিয়ে আসে নাই।
জায়ান্ট স্টেপ হত, যদি গ্লোব বায়োটেক, যেই খরগোস গুলি তে স্পাইক প্রোটিন এর কোড ইনজেক্ট করল, পরে সেই খরগোস কে করোনা ভাইরাস দিয়ে ইনফেক্ট করে যদি দেখাতো যে যে গুলি কে কোড ইনজেক্ট করা হয়েছে, সেগুলিতে কোন ইনফেকশান হয় না কিন্তু যেগুলিতে কোড ইনজেক্ট করা হয় না, তারাই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে বিরাট কাজ হত..।তবে খরগোস কে করোনা ভাইরাস আক্রমন করে কিনা সেটা আগে দেখতে হবে...বাদুর ইউজ করা যেতে পারে...। বাংলাদেশে হয়ত এনিম্যালের এর উপর পরীক্ষা করার জন্য কোন পারমিট নিতে হয় না...আমেরিকাতে এই পারমিট পেতে অন্তত ১০০ পাতার প্রপোজাল জমা দিতে হয়....
প্রবলেম হল অন্যরাও সেই সেইম স্পাইক প্রোটিন কে ভ্যাকসিন এর 'এপিটফ' হিসাবে ইউজ করেছে, সেহেতু তারা যদি সাকসেসফুল হয়ে যায় আগে আগে, তাদের টাই বাজারে চলে আসবে। গ্লোব এর ভ্যাকসিন পিছিয়ে পড়বে ও মেধাস্বত্ত পাবে না বলেই মনে হয়। গ্লোব বায়োটেক এর স্পাইক প্রোটিন যেটা উনারা আমেরিকার জিন ব্যংকে জমা দিয়েছেন, দেখলাম যে সেটা ১০০% সেইম অন্যদেশের ভাইরাস এর স্পাইক প্রোটিন এর সাথে...বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস এর স্পেসিফিক স্পাইক প্রোটিন ইউজ করলে হয়ত মেধা স্বত্ত পাওয়া যেতে পারত।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৫৫