
আর কয়েক মাস পরেই তিন বছর হয়ে যাবে এই অসহ্য বেদনার কোভিড প্যানডেমিক এর। বাংলাদেশে এর অবস্হা দেখে কিছুটা আশ্বান্নিত হয়ত পৃথিবীর সকল দেশই আবার স্বাভাবিক জীবন এ ফেরত আসবে। কিন্তু বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে আমেরিকাতে অবস্হা স্বাভাবিক হতে আরো অনেক সময় নিবেই বলেই বিশ্বাস। এখনও দৈনিক ৪০০-৫০০ লোক মারা যাচ্ছে কোভিড ইনফেকশন..আর ডেইলি কতজন যে ইনফেক্টেড হচ্ছে সেটা ঠিক ভাবে জানা ই যাচ্ছে না কেননা প্রায় সবাই এখন নিজের বাড়ীতেই টেস্ট করছে যেটা সরকারীভাবে জানা যাচ্ছে না..তবে সরকারী হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ১০০,০০০ জন এর বেশী লোক জন আমেরিকাতে কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতি ৩ জন আমেরিকান এর মাঝে প্রায় একজন অলরেডী কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকেই লং কোভিডে ভুগছেন যেটা প্রায় ডিসএবল করে দিচ্ছে বিশাল সংখ্যক মানুষকে। তাই এখনও আগের মতই বেশীর ভাগ লোকজন সাবধানে চলাচল করছে।
গত আড়াই বছর কোন বন্ধু-বান্ধব এর সাথে দেখা নাই, কোন পার্টি, পিকনিক, বিয়ে, জন্মদিন, ভ্রমন করা হয় নাই...মাস্ক পড়ে নিজের কাজে যাওয়া আর বাসায় ফিরা, এটাই যাপিত জীবন এখন।
তবে গত দুই মাস থেকে আস্তে আস্তে ছোট ছোট পার্টি, দুইটা বিয়ে এর দাওয়াত, কয়েকটা মিউজিয়াম/স্হান/সিনেমা/বিচ ভ্রমন করা আরম্ভ করেছি। এই সাহস করার পিছনে আছে দুইটা বিজ্ঞান ভিত্তিক সাবধনতা।
যদিও অনেকদিন ধরেই বলা হচ্ছে যে আপনার oral health যদি ভাল না থাকে, তাহলে আপনি কোভিডে আক্রান্ত হলে তা সিরিয়াস/খারাপ অবস্হায় মোড় নিবে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় দেখিয়েছে যে আপনার থুথুর মাঝেই সবচেয়েই বেশী ভাইরাস secretion হয়। এখন বেশীর ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় এর ক্যাম্পাসে ই কোভিড টেস্ট হচ্ছে থুথু থেকেই (নাকের মাঝে সোয়াব দিয়ে না)। যার অরাল হেলথ ভাল না, তার কোভিডে মৃত্যুঝুকি প্রায় ৯ গুন বেশী।
আপনার যদি মাড়ির অবস্হা খারাপ হয়/দাত এবং মাড়ির সংযোগ স্হলে ফুলে যাওয়া রক্ত পড়া, তাহলে কোভিডে আক্রান্ত হলে, ভাইরাস খুব সহজেই থুথু থেকে হার্ট হয়ে ফুসফুসে পৌছে যায় এবং ফুসফুস কে প্রায় নিস্ক্রিয় করে দেয় (ছবিতে দেখুন)।

Source of the image
তবে এটা জানাতে সুবিধা হল যে, কোভিড কে ট্যাকেল করা একটু ইজি হল। কেননা বাজারে খুব সহজেই মাইথ ওয়াশ কিনতে পাওয়া যায়, যেটা দিয়ে কোভিড ভাইরাস ইনএক্টিভেট করা যায়। ইংল্যান্ডে ফেইজ থ্রি ভিত্তিক ট্রায়াল এ দেখা গেছে যে, প্রায় ৬০ জন যারা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কোভিড নিয়ে, তারা দিনে পাচবার CPC যুক্ত mouthwash দিয়ে গার্গল করাতে ৪ দিনের মাঝে বাসায় ফেরত এসেছেন, একজন কেও আইসিউ তে যেতে হয় নাই অথবা মৃত্যু বরন করেন নাই.. কেননা মাউথওয়াস ভাইরাস কে ফুসফুসে পৌছাতে দেয় নাই। অন্যদিকে প্লাসিবো গ্রুপ যারা মাউথওয়াশ ইউজ করেন নাই, সেই গ্রুপ এর অর্ধেক এর বেশী লোকজন কে আইসিউ তে ভর্তি করতে হয়েছিল আর আইসিউতে থাকা লোকের ৫০% মারা যান।
CPC একটা ক্যামিক্যাল যেটা গাম ডিজিস ভাল করতে মাউথওয়াশে যোগ করা হয়।
এখন কোন পার্টিতে গেলেই যেখানে মাস্ক পড়া যায় না, খাওয়া-দাওয়া এর জন্য মন খুলেই আড্ডা দেই কেননা বাসায় আসার পর সবাই মিলেই মাউথওয়াস দিয়ে গার্গল করে ফেলি শোয়ার আগে। সকালে উঠেই একবার...প্রিভেনটিভ মেজার।
আর কোন আড্ডায় যাওয়ার আগে এখন নাকে দিয়ে নেই নেসাল স্যানিটাইজার (কটন সোয়াব এ স্যানিটাইজার নিয়ে, নাকের ভিতর কয়েকবার প্রলেপ দিয়ে নেই) এটা আপনাকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত্য ভাইরাস/ব্যাক্টিরিয়া থেকে সুরক্ষা দিবে। ছবি্তে দেখুন

ছেলে সামার টাইমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসায় এসেছে দুমাসের ও উপরে। এই এলাকায় ব্ড় হওয়া সব বন্ধু/বান্ধব সবাই যার যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের এলাকায় ফিরেছে, তাই সবাই প্রায় দলবব্ধ ভাবেই ঘুরাঘুড়ি করে, সিনেমা দেখে, রেস্টুরেন্টে যায়, বাসায় ভিডিও গেম..ইত্যাদি নিয়েই ব্যস্ত...প্রথম প্রথম একটু ভয় পেতাম, কখন আবার কোভিডে আক্রান্ত হয়...তবে এখন এই দুই রিচুয়াল চালু হবার পর কিছুটা নির্ভার। রুটিন করে মেইক সিউর করি যে বাইরে যাওয়ার আগে ন্যাসাল স্যানিটাইজার, আর বাসায় ফেরত আসার পরে মাউথওয়াস দিয়ে গার্গল। এখনও কাজ করছে বলেই মনে হচ্ছে....জানি না সামনে কি আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




