আজ আমরা মুখোমুখি হয়েছি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সব নেশাখোরদের নিয়ে গঠিত হিরোইঞ্চি কাবের সহ-ভাইস প্রেসিডেন্ট, হিরোইন খেয়ে রিকশা চালাতে গিয়ে পাচঁবার খাদে পড়া অখ্যাত হিরোইনখোর, যার অত্যাচারে আবাসিক-অনাবাসিক সকল লোক সর্বদা ভীতসন্ত্রস্ত, যার জন্য বাড়ীর বদনা থেকে শুরু করে ফুলের টব পর্যন্ত সারারাত জেগে পাহারা দিতে হয় সেই বিখ্যাত ব্যক্তি, বাংলাদেশের ১ কোটি নেশাখোরের গর্ব, কঙ্কালসার দেহের অধিকারী হিরোইঞ্চি জহিরের সাথে। আসুন হিরোইঞ্চি জহিরের সাথে। আসুন দেখি "জাতির অহংকার" আমাদের কী বলে।
* আচ্ছা, জহির মিয়া, আপনার নামের সাথে "হিরোইঞ্চি" সংযুক্ত হবার কারণটা বলবেন কি?
হিঃ জহিরঃ আসলে সর্বপ্রথম আমার নামের সাথে হিরোইঞ্চি সংযুক্ত ছিল না। আস্তে আস্তে এক একটা টাইটেল উঠে গিয়ে একেকটা নতুন টাইটেল যুক্ত হতে থাকে। সর্বশেষে আমার নামের সাথে যে টাইটেল যুক্ত হয় তা হল "হিরোইঞ্চি"। অর্থাৎ হিরোইন যারা গ্রহন করে এক কথায় তাদের হিরোইঞ্চি বলে।
* ও, তাহলে আপনার হিরোইঞ্চি নামের আগে আরও কতণ্ডলো টাইটেল ছিল? দয়া করে সেণ্ডলো উপহার পাঠকদের বলবেন কি?
হিঃ জহিরঃ যখন আমি বিড়ি খাওয়া শুরু করি তখন আমার নামের টাইটেল শুরু হয়। যেমন: বিড়ি জহির, ডাইল জহির, গাঞ্জা জহির ইত্যাদি। তবে কয়েকদিন লোকে "হুক্কা জহির"ও বলত।
* আচ্ছা, আপনি তো হিরোইন খেয়ে একাধিকবার রিকশায় যাত্রীসহ রান্তার পাশে খাদে পড়েছেন। এমন কেন হয় বলবেন কি?
হিঃ জহিরঃ আসলে যখন নেশা করে রিকশায় উঠি তখন দেখি রাস্তাঘাট অন্যরকম। যেমন প্রথম যেদিন দূর্ঘটনা হল সেদিন দেখলাম সামনে দিয়ে একটা ট্রাক আসছে, তাকে সাইড দিলাম। আরও সামনে গেলাম দেখলাম দোতলা বাস আসছে। তাকে সাইড দিব এমন সময় দেখি সামনের রাস্তা উল্টানো। পরের কিছুই মনে নাই।
* তো আপনি এত রিস্ক নিয়ে রিকশা চালান একি ঠিক?
হিঃ জহিরঃ আসলে কি, আমার দোষ নাই। তারপরও এসব বিবেচনা করে হিরোইঞ্চি কাবের সদস্যরা চাঁদা তুলে আমাকে হিরোইন ফ্রি দেয় দৈনিক ২ বার করে।
* জনাব, আপনাকে প্রতিদিন ক'বার এ মাল খেতে হয়?
হিঃ জহিরঃ এই তো দুই কি তিনবার।
* তাহলে বাকী দুইবারের টাকা পান কোথায়?
হিঃ জহিরঃ কি যে বলেন মিয়া এলাকা আছে না!
* তার মানে চুরির আশ্রয় নেন?
হিঃ জহিরঃ ধুরু মিয়া, এইডা কইবেন না, প্রেসটিজে আঘাত লাগে।
* আপনার একটা চুরির বিরল অভিজ্ঞতা বলুন।
হিঃ জহিরঃ এক সন্ধ্যায় নেশা ধরল। আশপাশে সব বাসায় গেলাম কিন্তু কোন বাসায় সুবিধা করতে পারলাম না। মহল্লায় বিদ্যুৎ ছিল না এদিক দিয়া আমিও আর পারতাছিলাম না। রাত বাইজা গেল এগারোটা, এমন সময় দেখলাম এক বাসার বাথরুমে দেখলাম একটা শাড়ীর পাড় ঝুইলা আছে। বুঝলাম কপাল খুলছে। এমন সময় শাড়ী ধইরা দিলাম টান। শাড়ী চলে এল। এরপর শুনলাম মহিলা কন্ঠের চিৎকার আর আমার শরীরে উত্তম-মধ্যমের আওয়াজ। আর কিছু স্মরণ নাই।
* দারুণ তো! আচ্ছা, একটা হিরোইঞ্চি গান গান না? যে গান গাইলে মনে জোস ওঠে (এমন সময় আরও তিনজন হিরোইঞ্চি এল)?
হিঃ জহিরঃ শুনবেন? আসলে সমস্বরে না হইলে জমে না, কি রে তোরাও ধর-
"জয়জাগা নন্দন, ঘটিবাটি বন্ধন
হিরোইন দেয় কি শান্তি
৩০ টাকার হেরোইন কিন্না,
মনের মত নেশা লইয়া
মনে যে কি পাই শান্তি।
আমার বাপের টাকার কাড়ি
বেইচ্চা খামু হেরোইন বিড়ি।"
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




