সারাদিন পহেলা বৈশাখ এর জ্বরে কাঁপছিল ফেসবুক, এমনকি এখনো কাঁপছে। সারা বাংলাদেশ থেকে কয়েক কোটি ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়ে ফেসবুককে ধন্য করেছি আমরা। আর একটা জিনিস সারাদিন খুব চোখে পড়লো সেটা হলো পহেলা বৈশাখ পালনটা কি ইসলামিক দিক থেকে ঠিক না ভুল। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা ও সমালচনা চলতেই আছে। এমনকি আমাদের প্রধান মন্ত্রীও পহেলা বৈশাখ এর সাথে ধর্মকে মেশাতে নিষেধ করেছেন।
আসলে জিনিসটা কেমন হওয়া উচিত? মুসলমানদের কি আসলেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা উচিত না অনুচিত?? পহেলা বৈশাখ পালন করাটা দোষের কিছু নয় অবশ্যই পালন করা যাবে তবে একটি জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে, সেটা হলো আমরা বাঙালী হওয়ার আগে একজন মুসলিম। এক্ষেত্রে হিসাব একদম সহজ। এতো আলোচনা-সমালোচনার কোনই দরকার নেই। পহেলা বৈশাখ এর মঙ্গল শোভাযাত্রার কথায় আসি। মঙ্গল শোভাযাত্রাটা কি? পহেলা বৈশাখ এর সকালে মঙ্গল লাভের আশায় বিভিন্ন পশুপাখির প্রতীকি অবয়ব, তাদের মুখোশ, ছবি বা প্রতিমা ব্যবহার করে ঢাক-ঢোলের তালে তালে মিছিল বের করা এবং এটাও বিশ্বাস করা যে এগুলোর মাধ্যমে বাঙালীদের উপরে বয়ে আসবে মঙ্গল। এই জাতীয় বিশ্বাস করাটা এবং এই সমস্ত কাজ করাটা অবশ্যই ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক । তাই এটা কবিরা গোনাহ্। কারণ আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন ভাবে মঙ্গল কামনা করা বা মঙ্গল বয়ে আসবে এমনটি ভাবা অবশ্যই গোনাহের কাজ। এটা মুসলিম মাত্রই বোঝা উচিত। আর তারপরে আর একটি জিনিস লক্ষ করতে পারেন, সেটা হলো এই সমস্ত প্রতীকি অবয়ব গুলোর প্রায় সব গুলোই হিন্দু দেব দেবীরদের বাহন। যেমন প্যাঁচা হচ্ছে লক্ষীর বাহন। তারপরে ষাঁড় হচ্ছে শিবের বাহন। হাঁস হচ্ছে সরস্বতীর বাহন। সিংহ দুর্গার বাহন। ময়ূর কার্তিকের বাহন। আরো সব গুলোই কোন না কোন হিন্দু দেবদেবীর বাহন। এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় ভাবেই এগুলোকে মঙ্গলের প্রতীক হিসেবে দেখে। তাহলে পশুপাখি তো আরো ছিল দেশে তাই না? বেছে বেছে এই গুলোই কেন আমাদের সাংস্কৃতিতে ঢোকানো হয়েছে এটাও একটা প্রশ্ন? বছরের পরে বছর ধরে এগুলো আমাদের পহেলা বৈশাখ এর সাংস্কৃতিতে ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছে। আর পহেলা বৈশাখ এর নাম করে অন্য ধর্মের রীতিনীতি গুলো মুসলমানেরা পালন করছে। আর যে পশুপাখিই হোক না কেন, যে কোন প্রাণীর মূর্তিই তো ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ তাই না? তাই আপনি চাইলেই যেহেতু এগুলো মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে বাদ দিতে পারবেন না তাই এরকম কোন মিছিলে অংশ নেওয়াটাও অবশ্যই ঠিক না। এরকম কিছু কিছু জিনিস এড়িয়ে চলে পহেলা বৈশাখ পালন করাটা মোটেও দোষের কিছু নয়। ইসলাম কখনো আনন্দ বিনোদন এর পথে বাধা দেয়না... তবে ইসলামে নিষিদ্ধ জিনিস গুলোকে নিয়ে আনন্দ বিনোদন করাটা কতোটুকু যৌক্তিক সেটা অবশ্যই একজন মুসলিম হিসেবে আপনার জানা উচিত।
এখন আপনি যদি মনে করেন যে ধর্ম ধর্মের যায়গাতে আর উৎসব উৎসবের যায়গাতে। আমি উৎসব আমার ইচ্ছা মতোই পালন করবো। ধর্মকে এর মধ্যে জড়িয়ে পরিপূর্ণ আনন্দ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবো না। তবে আমি বলবো গোনাহ্ গোনাহের যায়গাতে, আর মরার পরে বাঁশ গুলোও আপনার যায়গা মতোই যাবে। তাই মেনে চলা বা না চলাটা একান্তই আপনার নিজের বিষয়। মনে রাখবেন আপনার কৃতকর্মের ফলগুলো আপনাকেই তো ভোগ করা লাগবে তাই না? আর বছরে একটি দিনের জন্য বাঙালী সেজে অবশ্যই আপনি এরকমটা হোক তা চাইবেন না। তাই কিছু কিছু জিনিস বাদ দিয়ে অবশ্যই নববর্ষ পালন করুন, পান্তা-ইলিশ খান বা না খেয়েও পান্তা-ইলিশের ছবি ফেসবুকে আপলোড দেন । কেউ নিষেধ করবে না।
সবাইকে পহেলা বৈশাখ এর শুভেচ্ছা ! শুভ নববর্ষ ।
ফেসবুকে আমি - Káñàk The-Bøss
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:০৫