somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণের কারণ ও প্রতিকার

০৩ রা মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্ষণ সর্ম্পকে আলোচনা করার আগে আমাদেরকে জানা প্রয়োজন ধর্ষণ কাকে বলে?
যখন কোন ব্যক্তি কাউকেজোর পূর্বক বা তার সম্মতি ব্যতিতযৌন আচরণ বা যৌন মিলন করে তখন তাকে ধর্ষণ বলে।
এবার বাংলাদেশের ধর্ষণের হালচিত্র নিয়ে আলোচনা করা যাক।
ধর্ষণ বর্তমানে আমাদের সমাজে এক চরমতম সংকট ও মারাত্মক আতংক। যারা নিয়মিত পত্রিকা পড়ে তাদের কাছে ধর্ষণ শব্দটা বেশী পরিচিত। এমনকি ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও ধর্ষণ শব্দটির সাথে পরিচিত। বর্তমানে পত্রিকা হাতে নিলে প্রথমে নজরে পড়ে ধর্ষণের লোমহর্ষক কাহিনী। পত্রিকার পাতায় এমন কোন দিন বাদ নেই যে ধর্ষণের খবর আসে না। পত্রিকার খবর ছাড়াও দেশের আনাচে কানাচে কতনারী যে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে তারকোন হিসেব নেই। দেশের কোথাও না কোথাও ৩ বছরের কন্যা শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে। ধর্ষণের নেশায় কিছু মানুষরুপী নরপশুরা এসব নিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে যা ভাষায় প্রকাশ করা দুষ্কর। বর্তমানে এসব মানুষরূপী নরপশুদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু কন্যা, বৃদ্ধা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারীকে ধর্ষণের ফলে তাদের যৌনাঙ্গের গ্রন্থি ছিঁড়ে যায়। তখন রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এমতাবস্থায় অনেক শিশুর প্রাণহানী ঘটে। এর মধ্যে যারা ধর্ষিতা হয়ে বেঁচে থাকে তাদের জীবন হয়ে যায় অন্ধকার। তাদের বিয়ে নিয়ে দেখা দেয় পরিবারও সমাজে চরম অনিশ্চয়তা। কিন্তু ধর্ষকের বিয়ে অনায়াসেই হয়ে যাচ্ছে। তাদের পোহাতে হয় না কোন লাঞ্ছনা। অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে লজ্জা ঢাকতে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়। প্রতিদিন দেশের আনাচে কানাচে কতইনা অবলা নারী ধর্ষিত হচ্ছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। অনেকে লোক লজ্জার ভয়ে ধর্ষণের কথা কারো কাছে প্রকাশ করে না। যতই দিন অতিবাতি হচ্ছে ততই ধর্ষণের প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আগে ধর্ষণ হতো গোপনে আর এখন ধর্ষণ হয় প্রকাশ্যে খোলা মাঠে, চলন্ত বাসের মধ্যে। যেখানে একজন নারীকে হাত পা বেঁধে দল বেধে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হচ্ছে। যাকে গণধর্ষণ বলা হয়। ধর্ষণ কারীরা শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, ধর্ষণের পর খুন করা হয় ধর্ষিতাকে। মা-বাবার সামনে মেয়েকে, ভাইয়ের সামনে বোনকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে, ছেলের সামনে মাকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এসবকরেও ধর্ষকরা শান্তি পাচ্ছে না। তারা এখন ধর্ষণের দৃশ্যকে ভিডিও করে ব্লু-ফিল্ম বানিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে। ইদানিং ইন্টানেটেও ধর্ষণের ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে। যা জাহেলিয়াতের যুগকে হার মানাচ্ছে।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ। এ দেশের ৯০% মানুষ মুসলমান। অথচ এদেশেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনে ধর্ষণের সেঞ্চুরী হয়। তারপরও ধর্ষক বুক ফুলিয়ে রাস্তা ঘাটে হাঁটে। অথচ এদেশের সরকার পারেনি তার বিচার করতে। এ যদি হয় দেশের অবস্থা তাহলে কিভাবে আমাদের মা বোনরা রাস্তা ঘাঠে চলাফেরা করবে? এ দেশের একজন নাগরিক হয়ে লজ্জায় রাস্তায় বের হতে ইচ্ছে করে না। যে দেশের সরকার ও প্রধান বিরোধী দলসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীদের অবস্থান সে দেশের নারী সরকার পারেনি ধর্ষণকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে। তাহলে কিভাবে এ দেশের অসহায় নারীরা ধর্ষণের হাত থেকে রেহায় পাবে?
এতক্ষণ ধর্ষণের সংক্ষিপ্ত চিত্রতুলে ধরলাম। এবার আসা যাক নারী ধর্ষিত হাওয়ার কারণ কি?
ধর্ষণের একাধিক কারণ আছে। এর মধ্যে তথ্যানুসন্ধান করে দেখা গেছে ধর্ষণ প্রবণতা বৃদ্ধি পাবার মূল কারণগুলো হলো, নগ্নতা, অতৃপ্ত যৌন আকাঙ্খা, বেহায়াপনা, অবাধ যৌনাচার, রাস্তার পাশে দেয়ালে নগ্ন পোস্টার, ফুটপাতে অশ্লীল ছবি সম্বলিত যৌন উত্তেজক অবৈধ বইয়ের রমরমা ব্যবসা, অশ্লীল পত্রপত্রিকা, অশ্লীল ছায়াছবি প্রদর্শন, ব্লু-ফিল, বাংলা চলচ্চিত্রে খলনায়ক কর্তৃক নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের দৃশ্যের মাধ্যমে সমাজে রাস্তাঘাটে বাস্তবে ধর্ষণ করার উৎসাহ যোগান, ইন্টারনেটে অশ্লীল সাইটগুলো উম্মুক্ত করে দেয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, টুয়েনটি প্লাস চ্যানেলে নীল ছবি প্রদর্শন ইত্যাদি কারণে আজ যুবসমাজের মধ্যে দিন দিন ধর্ষণ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্ষণের আরো একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও ছেলে-মেয়েকে বিয়ে দেয়ার ব্যাপারে অভিভাকদের উদাসীনতা।
পরিশেষে বলতে চাই, ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে কঠোর আইন প্রয়োগ করে ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। আর সমাজ থেকে নগ্নতা, বেহায়াপনা দূর করতে হবে। ব্লু-ফিল্ম দেখানো নিষিদ্ধ করতেহবে। অশ্লীল পত্রপত্রিকা ও বইয়ের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। ছেলে-মেয়েদেরকে যথাসময়ে বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বপরি আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে। উপরিউক্ত লক্ষণগুলো দূর করতে পারলে আশা করা যায় কিছুটা হলেও সমাজ থেকে ধর্ষণ প্রবনতা কমবে। তা না হলে কষ্মিনকালেও ধর্ষণ প্রবণতা রোধ করা যাবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×