টেনশন তোমায় দিলাম ছুটি
ঘড়ির এলার্ম বাজতেই প্রচণ্ড মাথাব্যাথা নিয়ে ঘুম থেকে উঠলেন কামাল সাহেব। ঘুম না হলেও অফিসে যাওয়ার সময় ছুঁইছুঁই, তাই না উঠে উপায় নেই। কিন্তু গত কয়েক রাত ধরে কামাল সাহেবের ঠিকমত ঘুম হচ্ছে না, কারণ একটাই টেনশন (দুশ্চিন্তা)। কামাল সাহেবের মত এরকম অনেকেই আছি যারা টেনশনের কারণে ঠিকমত কাজ-কর্ম, অধ্যাবসায়, খাওয়া-দাওয়া এমনকি বিশ্রামে মন দিতে পারিনা।
আমাদের জীবন চলার পথে টেনশন থাকবেই । কিন্তু তাই বলে এর ক্ষতিকর প্রভাব যেনো স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে স্থবির না করে এর জন্য আমরা অনুসরণ করতে পারি কিছু পদ্ধতি:
*** যে কোন কাজ করার আগে পরিকল্পনা মাফিক এগুনো উচিত। এতে কাজের চাপও কমবে এবং কাজটিও গোছানো হবে।
*** খুব টেনশন হলে বুকের ভেতরে গভীর শ্বাস টেনে নিন। রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ঢুকলে মস্তিষ্ক উজ্জীবিত হয়, মাংসপেশি শিথিল হয় এবং মন ঠাণ্ডা হয়। গভীর শ্বাস টেনে নেয়ার পাশাপাশি মেডিটেশন বা প্রার্থনা করুন। মস্তিষ্কে প্রায় ঘুমের সমপর্যায়ের অবস্খা তৈরি হবে। শূন্যে মনোনিবেশ করলে চাপ কমে যায়।
*** হালকা শরীর চর্চা করুন। রক্ত সঞ্চালনের ফলে হতাশার লেভেল কমে যাবে। মাংসপেশি শিথিলের অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রথমে মুখ, তারপর ঘাড়, কাঁধ এভাবে মাথা থেকে পা পর্যন্ত। নিয়মিত ব্যায়াম, ইয়োগা, যোগ ব্যায়াম করলে টেনশন কমানো যায় এবং শরীরকে চাঙা করতে পারে নিমিষেই। আর শরীর ফিট তো মনও ফিট ।
*** চোখ বন্ধ করে ৯৯ থেকে উল্টো করে ১ পর্যন্ত তিনবার গুনতে থাকুন। এতে টেনশনের বিষয় থেকে খানিকটা সময় মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া যায় ।
*** যতটা পারা যায় হাসি-খুশি থাকুন , হাসি আমাদের উদ্বেগ বাড়ানো হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়। এছাড়া যান্ত্রিক এই জীবনে মানসিকভাবে সুস্হ থাকতেও হাসি যোগায় প্রাণশক্তি!
***আত্মসম্মোহনের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি, বদ অভ্যাস ত্যাগ, কম ব্যথা বা দু:খ অনুভবের শক্তি বাড়ান।
**** মনছবি গড়ে তুলুন। মনের ছবিটাকে আরো বেশি বাস্তব করার জন্য প্রকৃতির সুরারোপ করুন বা নিজের চারপাশে এই সুর বাজতে দিন। মনছবির ভেতর নিজের শুভ চাওয়ার প্রতিফলন ঘটান।
*** ডায়েরিতে লিখে ফেলুন মনের সব বলা না বলা কথা কিংবা প্রিয় মূহুর্তের ছবির অ্যালবামে চোখ বুলাতে পারেন। পেইন্টিং বোর্ডে সবগুলো রঙে সেড দিয়ে এঁকে ফেলুন মনের ইচ্ছে মত রংধনু।
*** কম্পিউটারে বা টিভিতে দেখুন প্রিয় কোন মুভি, খেলুন গেইমস্, সুর হোক আর নাই হোক উচ্চস্বরে গেয়ে উঠুন পছন্দের কোন গান অথবা মিউজিকের ছন্দে নাচের ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ হাত-পা হেলিয়ে দুলিয়ে নাচতেও পারেন।
*** প্রিয় লেখকের উপন্যাস, কবিতার বই মনকে হালকা করার সাথে সাথে মনের জগতটাকেও করে বিশাল। তাই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
*** আনন্দদায়ক কোন স্মৃতির ভেলায় বেরিয়ে আসতে পারেন প্রকৃতি আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়। লেকের ধারে, ঝিলের পাড়ে কিংবা সবুজ চত্বরে যেখানে যেতে মন চায় ঘুরে আসুন। পথ থেকে কুড়িয়ে নিন একটি-দুটি বকুল বা ঘাস ফুল ...
দীর্ঘদিন কোনো বিষয় নিয়ে টেনশন করা আমাদের শরীর এবং মনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন ।
সূত্র: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:৫৭