somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জন্ম থেকে মৃত্যু – ম্যাজিক(ঘুষ) -

০৩ রা অক্টোবর, ২০১১ রাত ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ধন্য যে আমার সোনার বাংলায় জন্ম কিন্তু আমি দুঃক্ষিত যে আমি বাস্তবতার কাছে পরাজিত। আমার জন্ম থেকে মৃত্যু আমি যে কাজ করেছি তা মৃত্যুর পর আমকে কষ্ট দেয় আমাকে বুঝিয়ে দেয় আমার জাতি আমার মান রাখতে পারে নাই আর আমি আমার জাতির মান রাখতে পারি নাই।
আমি মৃত মানুষ হয়ে শুধুই ভাবি আমার জ়ন্ম থেকে মৃত্যু আমার গল্পটা কেমন হবে ? যদি অনেক কিছুই লুকিয়ে বলি তাহলে অনেকটা এরকম হয়- - -
বাংলাদেশের একটি ছোট শহরে আমার জন্ম।আমার বাবা খুব ছোট ধরনের ব্যবসায়ী।আমার জন্ম হয়েছিল সরকারী একটি হাসপাতালে।আমার জন্মের সময় আমার মা যখন প্রচন্ডে কষ্টে সীটের অভাবে হাসপাতালের বারান্দায় কাতরায় তখন তারই মত আরও দুজন হাসপাতালের বারান্দায় কাতরায়। আল্লাহর রহমতে আর ছোট একটি ম্যাজ়িকে আমি হাসপাতালের সীট পেলাম বাকিরা পেল না।
এই ছোট ম্যাজ়িকটির নাম ঘুষ ।আমার বাবা ঘুষ নামক এই ম্যাজ়িক দেখিয়ে আমাকে ভাল ভাবে জন্ম নেবার সুজগ করে দিল।শুধু ঘুষ নামক এই ম্যাজ়িক নয় আমার এক বড় মাপের ডাক্তার চাচুর ফোন আমাকে হাসপাতালের সীট দিয়েছিল আর বাকিদের রেখেছিল হাসপাতালের বারান্দায়।আমার জ়ীবনের শুরুটা হয়েছিল এভাবে।

আমি যখন হাটিহাটি পা পা করি তখন একবার ভিষণ অসুখে পরি।আমার অসুখে পরার কারন ছিল মেয়াদ ছাড়া টিকা ব্যবহার। আমি সরকারি হসপাতাল থেকে সবগুলো টিকা নিয়েছিলাম আর সে হাসপাতালের ডাক্তার যারা সমাজের নামিদামি মানুষ তারা ভাল টিকা বাইরে বিক্রি করে দিয়েছিল আর আমাদের জন্য রেখেছিল মেয়াদ ছাড়া টিকা।যে ম্যাজিকে আমার জন্ম এরকম আরেক্ ম্যাজিকে আমার অসুখ। এই অসুখ সামলে আমি সুস্থ হই।
এবার আসি আমার স্কুল জীবনের কথায়।আমি শহরের এক নামি স্কুলে চান্স পাই শুধু আমার বাবাকে ঘুষ নামক ম্যাজ়িক ব্যবহার করতে হয়। যে শিক্ষক আমার আদশ সে আমার বাবার ম্যাজিকে সারা দিয়ে অনেক ছাত্রকে বাদ দিয়ে আমাকে চান্স দেন, আমি তার আদশে অনুপ্রানিত।
আমি যখন বিশ্যবিদ্যালয়ের ছাত্র হবার চেস্টা করি তখন আমার এক পরিচিত বড় ভাই যে কিনা রাজনীতি করে সে তার সম্মানীত শিক্ষকের সাহায্যে প্রস্নপত্র ফাঁস করে এবং আমি ম্যাজিক দেখিয়ে বিশ্যবিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে যাই। বিশ্যবিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন আমাকে আরও বেশি ম্যাজিক(দূনিতি) করতে শিখায়।বিভিন্ন নেতার জন্মদিন,মৃত্যুদিন অথবা দেশের বিশেষ দিনে কিভাবে চাঁদা নিতে হয় আর অনুষ্ঠান আয়োজনের নামে কিভাবে টাকা মারা যায় তা আমি হাতে-কলমে শিখি বিশ্যবিদ্যালয়ে।আমার ছাত্র জীবনে আমার বড় ভাইদের কাছে এবং আমার শিক্ষকের কাছে আমি যা শিখেছি তা আমাকে পরের জীবনে অনেক সাহাজ্য করে।
বিশ্যবিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন শেষে আমি সরকারি চাকরীর চেষ্টা করি এবং এতে আমার রাজনীতির অবদান এবং ছটবেলা থেকে শিখে আসা ম্যাজিক কাজে আসে।আমি বড় নেতার নাম ভাঙ্গায় আর একটু ঘুষ দিয়ে ভাল সরকারী চাকুরী পাই।তারপর আর পিছে তাকাতে হয় নাই।।
এরপর আমি সরকারের চাকুরীজিবী হিসেবে অনেক জনসেবা করেছি।বিভিন্ন মানুষকে চাকুরী পাইয়ে দিয়েছি, কাজ পাইয়ে দিয়েছি। আমার হাত দিয়ে সরকার অনেক অনেক কাজ করিয়েছে আর আমি সবার দোয়ায় কিছু কিছু ঘুষ খেয়েছি।সরকারের টাকায় যখন এসি চালাতাম,যখন সরকারের দেয়া গাড়ীতে আমার সব আত্মীয়কে নিয়ে ঘুরে বেরাতাম তখন শুধু জানতাম সরকারি সবকিছু আমার অধিকার।সরকারকে দেবার আমার কিছু নাই শুধু আছে নেবার।অল্প পে-স্কেলের বেতন হবার পরেও আমার বাকি সবার মত বাড়ী-গাড়ি সবিই আছে।আমি ভাল মানুষ তাই আমার সব টাকাই সাদা। আমি সুধু একটু ঘুষ খেতাম কিন্তু তা কে বলতে পারে আমি সরকারি চাকুরিজীবি।আমি সমাজের ভাল মানুষ।

চাকুরি ছাড়ার পরে যোগ দেই ব্যবসায়।বড় ব্যবসায়ীর যত খারাপ গুন আমি তা পারি। ব্যবসায় ভাল কাজ কিন্তু ব্যবসায়ী হিসেবে আমার কাজ ছিল খারাপ।আমি চোরা-কারবারি করতাম আর পুলিশ-প্রশাসন সবাইকে ঘুষ দিতাম।আমার জন্ম যে ঘুঘ নামক ম্যাজিক দিয়ে হয়েছিল সেই ঘুষ আমাকে অনেক সম্পদ দিল।আমি যে শিক্ষা জন্ম থেকে পেয়েছি তা আমার জীবন বদলে দিয়েছে আমাকে দিয়েছে অনেক অনেক সম্পদ।
মরনের পর আমর ছেলেমেয়ে আমাকে সমাজের নামিদামি মানুষ হিসেবে কবর দিল বুদ্ধিজিবী কব্রস্থানে এবং আমার বউয়ের জন্য আগে থেকে আমার পাশের স্থান কিনে রাখল যা কিনা ঘুষ দিয়ে কিনতে হয়।আমার জন্ম থেকে মরন আমি ঘুষ নামক ম্যাজিক ব্যবহার করে সফল বাঙ্গালি।আমি জানি আমার মত অনেকে এরকম ম্যাজিক নিয়ে বেচে আছে কিন্তু মরে গেলে কি হবে আমি জানি না ।।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×