somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিজ্ঞাসা - মন কি যে চায় বলো (৩)

২৬ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনোবিজ্ঞানী নই, নই কোন প্রেম-ভালোবাসা-হৃদয় ঘটিত লেখক ও। শিরোনাম দেখে যদি প্রশ্ন আসে, তাই উত্তর ও দিয়ে দিলাম আগে ভাগেই। প্রাসঙ্গিক একটা প্রশ্ন আমার ও আছে, প্রেম ভালোবাসা ছাড়া কি মন এর অস্তিত্ব নেই? কঠিন পাষান সীমার এর ও মন ছিলো, এ কথায় সাহিত্যিক রা রাগ করলেও জীববিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীরা আমার কথাকে সমর্থন করবেন আশা করি। আর মন যদি থেকে ই থাকে তাহলে চাওয়া (পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা) ও থাকতেই হবে। যুক্তি ই হোক কিংবা হোক বাস্তবতা, এ পর্যন্ত ঠিক ই ছিলো এবং আছে।

বাস্তবে সমস্যা শুরু হয় চাওয়া র আগে ও পরে দুটো বিষয় নিয়ে, এরা হলেন সামর্থ্য ও পাওয়া। সুতরাং সামর্থ্য-চাওয়া-পাওয়া র সমীকরনকে যদি আমরা বিয়ে র মতো ঘটনার একটি ছাচে ফেলে তুলনা করি, তাহলে হয়তোবা কিছুটা লঘু মন নিয়ে বিশ্লেষন করতে পারবো। একজন ছেলে ও একজন মেয়ের আইনগত সাংসারিক দৈনন্দিন মানসিক ও দৈহিক সহাবস্থান কেই বিয়ে বা বিবাহ বলে আখ্যায়িত করা যায়। সাধারন ও স্বাভাবিক বিষয় সমুহ প্রতিফলিত হলে এটি গনিতের নিয়মেই চলার কথা। তেমনি সামর্থ্য-চাওয়া-পাওয়া (সাচাপা) সমীকরন ও সাধারন ও স্বাভাবিক নিয়মে খুবই প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিপালিত হয়ার কথা। একটি চারা গাছ লাগিয়ে এর নিয়মিত পরিচর্য্যা করলেই এটি ফলবান ছায়াপ্রদানকারী মহীরূহে পরিনত হওয়ার কথা।

কত কিছুই তো হওয়ার কথা, কিন্তু সব কি হয়? কথা দিয়ে কেউ কথা রাখে না । মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক ।

এরকম প্রবাদ গুলো থেকে ই আমরা জেনে গেছি যে, সমীকরন গুলো সবসময় গনিতের নিয়ম মানে না। এখানে একটা ব্যপার কে সবাই প্রশংসা করবে, তা হলো বাঙ্গালীর বুদ্ধিমত্তা । যেহেতু বাঙ্গালী হিসেবে আমরা জেনে গেছি যে, সাচাপা সব সময় গনিতের নিয়ম মানে না, আমরা এটাকে "কখোনোই গনিতের নিয়ম মানে না" বলে নিজেদের জীবনে ও আদর্শ হিসেবে গ্রহন করেছি। কথা গুলো কি খুব কঠিন হয়ে গেলো?

তাহলে সহজ করেই বলি, আমরা বাঙ্গালীরা নিজদের সামর্থ্য কে ঠিকভাবে জানি না, সামর্থ্যকে জানার পর ও সামর্থ্য অনুযায়ী চাই না, চাওয়া অনুযায়ী পাই না (অথবা পাই না বলে অনুযোগ অভিযোগ করি ) এবং যা সাধারনত পাই তা আমাদের সামর্থ্যের ও চাওয়ার সাথে সংগতিপুর্ন নয়। আমাদের মনের এই চাওয়া-পাওয়ার সমীকরনটিই আসলে অসঙ্গতি তে ভরে আছে।

শিরোনামে ফিরে আসি - মন কি যে চায় বলো । দেখি মন কি চায় -

১। মন চায় পড়াশোনা যত তাড়াতাড়ি পারি শেষ করে প্রতিষ্ঠিত হতে, যদিও ঠিকভাবে জানি না প্রতিষ্ঠা কাকে বলে। যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে চাওয়াটা সবসময় বাতিঘরের কাজ করার কথা, করেও থাকে। মজার বিষয় হলো কোন বন্দর ই সাধারনত একেবারে বাতিঘরের বরাবর থাকে না কিংবা জাহাজ নিয়ে কখোনোই সরাসরি বাতিঘরে উঠে যাওয়া যায় না। এর অর্থ হলো Lighthouse is the directional orientation, The port is the specific destination ।

২। আমরা পদার্থবিজ্ঞানে মাষ্টার্স শেষ করে কাষ্টমস এ চাকুরী খুজি, বাংলা সাহিত্যে মাষ্টার্স করে পুলিশ বিভাগে গিয়ে বেকারত্ব ঘুচাই, রসায়নে গ্রাজুয়েট হয়ে প্রশাসনের মুখ উজ্জ্বল করি। একবার সেলুকাস নামে কাউকে সম্বোধন করে একটি উক্তি যেন শুনেছিলাম, কি যেন বিচিত্র এই দেশ ধরনের। সত্যিই বিচিত্র কিছু একটা আছে এখানে। নইলে সবাই কিভাবে আরামে আছে? আরামে নেই, তাই কি? মনে তো হয় না। প্রতিদিন নিয়ম ভাঙ্গা টাই আমাদের পাওয়া, চাওয়া কি না জানি না।

৩। কঠিন শব্দ "সাট-মুদ্রাক্ষরিক" ইংরেজীতে হবে clerk । তার চাওয়ার তো কোন দোষ দেখি না, যদি তিনি ঢাকা শহরে কমপক্ষে দুটি বাড়ি চান, এবং দুটি জমি চান। তার সামর্থ্য কি সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কি লাভ । তিনি চান, এবং এ দেশে তিনি চাইলে পেয়ে ও যান। গনিত কি এ দেশের জন্য নুতন নিয়মের ছাচে চলবে? অবশ্যই, চলতেই হবে, নইলে সা-চা-পা সমীকরনের কি হবে? আমরা তার চাওয়া নিয়ে কিংবা তার গানিতিক আয় নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি অঙ্গুলীনির্দেশ করবেন একজন মিটার পাঠক এর দিকে, মিটারপাঠক করবেন তারালাপনীর লাইনম্যানের দিকে। আর আপনারা করবেন আমার দিকে - বলবেন - তোমার (যদি ভদ্রতা করেন) নজর এত নীচু কেনো? সমাজের উচু অংশে তোমার কি তুলনা করার কিছু নেই? প্রশ্ন হবে জানি বলেই এ প্রসঙ্গের অবতারনা করলাম। স্যার রাও আছেন, ওনারা জ্ঞানীগুনী মানুষ, ওনাদের নিয়ে কি বলবো বুঝে পাই না। বলা যায় বামন হয়ে চাদের দিকে হাত বাড়াতে নেই, বা, ভীমরুলের চাকে ঢিল মারা কি বুদ্ধিমানের কাজ?
আমাদের লাইনম্যান ভাই যদি বলেই ফেলেন, চাকুরীটা পেতে ৬ ডিজিটের টাকা খরচ হলো, সেটা তুলতে হবে না, তাহলে কিন্তু তিনি ঘুষের কথা বলে মৌচাকে ঢিল দিলেন না, আমি যদি বলি সেটা হবে ঢিল ঢিল ঢিল।

৪। আসলে আমি অল্পবিদ্যাওয়ালা একজন লোক, কাউকে অভিযুক্ত করা আমার কাজ না। কোন শিক্ষার সমাপনী যোগ্যতা কি হবে, তার প্রয়োগ কি হবে, সে শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষ হতাশায় ভুগবে কি না, তা যাদের বোঝার কথা তাদের মন যে কি চায় তা তো আমি জানি না। তারা নিজেও জানেন কি না সন্দেহ।

৫। ঢাকা শহরে ৪০০০.০০ টাকা বেতনের একজন পিওন কি করে বাস করবে এবং নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করবে তা যাদের বোঝার কথা তাদের মন কোথায় পড়ে আছে কে জানে। তাদের মন কি এগুলো বুঝতে চায়? তাদের মন কি চায় কে জানে? স্বয়ং বিধাতা কি জানেন কিনা সন্দেহ।

৬। সভ্য দেশে (আমরা যে অসভ্য সেটা বলছি না) বড়সড় প্রানহানিকর অথবা ক্ষতিকর কোন ঘটনা ঘটার পর অবহেলার নিদর্শন থাকলে কোনরুপ তদন্ত ব্যতিরেকেই বিভাগীয় প্রধান/সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক প্রধান স্বসন্মানে পদত্যাগ করেন। আমাদের এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে একাধিক তদন্তের মাধ্যমে সুদীর্ঘকাল ব্যয় করে সঠিকতম তথ্য বের করার চেষ্টা করি যাতে আমাদের মনে কোন সংশয় না থাকে। এদের মন চায় সবসময় সংশয়হীন থাকতে, কারন সংশয়ে সংকল্প সদা টলে। ওনাদের মন চায় - সংকল্প যেন কভু নাহি টলে। প্রশ্ন হলো সংকল্প টা কি? সেটা ওনাদের মন ই জানে আর কেউ নয়।

তারপরে ও মাঝে মাঝে মন কি যে চায়, খালি আবোল তাবোল বকি। আমরা আসলে ও বুঝি না মন কি যে চায় !!!!!!!!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৮:২৩
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×