১৮ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে সবার আকর্ষণ লক্ষ্য করা গেছে। অনলাইনে খবরটির প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মন্তব্য লক্ষ্য করা গেছে। দেখা গেছে দলমত সবারই দাবী দায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করছে সবাই। এবার বিস্তারিত বলা যাক।
বাবা আসামী হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে না পেয়ে অবশেষে মা ও ১১ মাস বয়সী এক শিশুকে আটক করে থানায় নিয়ে এসে ১৯ ঘন্টা আটক করে রাখা হয়েছে। অতঃপর মোটা অংকের টাকা উৎকোচের মাধ্যমে ১১ মাস বয়সী শিশু ও তার মাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। ১৮/০৯/২০১৫ খ্রিঃ তারিখের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথমআলো পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে যে,
ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার। ১১ মাস বয়সের শিশুটির নাম রয়েল। রয়েলের বাবা রাজু আহম্মদের অভিযোগ, স্ত্রী-সন্তানকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে ৪২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে পুলিশকে। খবরে আরো প্রকাশ যে, শিশুটির বাবা রাজু আহম্মেদ এর নামে একটি মামলা ছিল। ১৬ দিন আগে তিনি মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বুধবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার লাটিমা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান তিনি। রাত আটটার দিকে মহেশপুর থানার টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই) আমির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। পুলিশ তাঁর নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। তারা তাঁকে আটক করতে না পেরে তাঁর স্ত্রী ও ১১ মাসের ছেলে রয়েলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাজুর অভিযোগ, আটকের সময় তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়। নারী পুলিশ না থাকায় পুরুষ পুলিশরা সন্তানসহ তাঁর স্ত্রীকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যান। বুধবার রাতে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে থানাহাজতে আটকে রাখা হয়। এরপর গতকাল সকালে থানার টিএসআই আমির হোসেন তাদের ছাড়তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে বেলা তিনটার দিকে তাদের মুক্ত করেন। ধারদেনা করে টাকার জোগাড় করে চাচা আবদুল আজিজের হাত দিয়ে টাকা পৌঁছে দেন।
আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, রাজু মুঠোফোনের মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকার চুক্তি করেন। তিনি টাকা নিয়ে থানায় যান। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা আমিরের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বৌমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
বিষয়টি দেশব্যাপী পুলিশের আচরণের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। জনগণ ভাবছে তাহলে পুলিশকি আইনের উর্ধ্বে। কেউ কেউ দাবী করছে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য যারা জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানো। তা না হলে ভবিষ্যতে এমন ধরণে নিষ্ঠুর আচরণ পুলিশের মাঝে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করছে অভিজ্ঞ মহল।
পুলিশের এহেন আচরণ দেখে মনে হয় তারা শুধুই পুলিশ, আমাদের এক বড় ভাই লেখক বলেছিলেন পুলিশ নাকি মরলেও মানুষ হয় না। সরকার ও পুলিশের উর্ধ্বতন মহলের উচিত বিষয়টি গভীর ভাবে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের আস্থা অর্জন করা। তা না হলে এক দিকে যেমন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে, অন্য দিকে পুলিশ বিভাগ গুটি কয়েক পুলিশ কর্মকর্তার এসব অপকর্মের কারণে হারিয়ে ফেলবে জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
পাশাপাশি এরকম একটি সত্য খবর প্রকাশ করার জন্য প্রথমআলো ও অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোকে জানাই ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৫