প্রাক-ইসলামী যুগে নারীদেরকে এ জগত শুধু অনুপকারীই নয় সভ্যতার কলঙ্ক ও জঞ্জাল মনে করে জীবনের কর্মময় ময়দান থেকে হটিয়ে দিয়ে হীনতা নিচুতা ও লাঞ্ছনা গঞ্জনার এমন অন্ধকারময় কুয়ার অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করেছিল, যেখান থেকে উঠে এসে জীবনে উন্নতি লাভ করার আর কোন আশাই ছিল না। ইসলাম নারীদের প্রতি জগতবাসীর এহেন অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠে কঠোর প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে এবং পরিষ্কার রূপে ঘোষণা দিয়েছে যে, এ পার্থিব জীবনে নারী-পুরুষ একে অপরের মুখাপেক্ষী। নারীগণকে শুধু লাঞ্ছিত ও অবহেলিত রাখার জন্য প্রশস্তময় রাজপথ হতে কন্টকের ন্যায় দূরে নিক্ষেপ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। কেননা পুরুষের সৃষ্টির যেমন প্রকৃতির একটা উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে, তেমনি নারী সৃষ্টির মূলেও রয়েছে তাঁর এক সু-মহান উদ্দেশ্য। প্রকৃতি তাদের উভয় শ্রেণী দ্বারাই তাঁর বাঞ্ছিত উদ্দেশ্য পূরণ করতে চায়। কুরআন মাজীদে আল্লাহতআলা বলেন- আকাশ ও পৃথিবীর সার্বভৌম মালিকানা আল্লাহ তাআলার। তিনি যা ইচ্ছা তা সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা তিনি ছেলে, আর যাকে ইচ্ছা তিনি মেয়ে দান করেন। আবার যাকে ইচ্ছা নিঃসন্তান করে বন্ধ্যা বানিয়ে রাখেন। নিঃসন্দেহে তিনি মহা জ্ঞানী ও মহাশক্তিশালী স্বত্তা। ( সূরা- শুয়ারা ৪৯-৫০)
এ অত্যাচারিত অবহেলিত মজলুম শ্রেণীটির এ পার্থিব জগতে জীবিত থাকারও অধিকার ছিল না। আল কোরআন এসে দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করলো- এরা এ জগতে জীবিত থাকার জন্য এসেছে, এদেরকে জীবিত কবর দেয়া চলবে না। এদের অধিকারের উপর যে লোকই হস্তক্ষেপ করুক না কেন, তাকেই আল্লাহর দরবারে জবাব দিহি করতে হবে।
বিশ্বনী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নারীদের জন্য যেরূপ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ছিলেন এবং যে শিক্ষাবলী ও আদর্শ স্থাপন করেছেন, আজ পর্যন্ত দুনিয়ার কোন সংস্কারক বা তথাকথিত মহামানব ও নারী অধিকারের দাবীদার সূধীজন এমন আদর্শ ও শিক্ষার নজীর পেশ করতে পারে নি। তিনি দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন ঃ- মাতার অবাধ্যগত হওয়া, অধিকার আদায় করা থেকে বিরত রাখা, ধন সম্পদ স্তুপিকৃত করে রাখা এবং মেয়েদেরকে জীবিত কবর দেয়াকে আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন। (বুখারী)।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:২০