বাংলাদেশ এ কখনো কি জামায়াত ইসলামী এর নেতাদের বিচার হবে?
কেন এ প্রশ্ন, তা বলার আগে কিছু জিনিশ একটু খোলাশা করতে চাই। যদিও বাংলাদেশ এর রাজনীতির প্রধান দুই দল আওয়ামী লিগ ও বি এন পি, কিন্তু এই আলোচনায় আমি বি এন পি কে উহ্য রাখব। কারন, বি এন পি যে ভাবে একটি জামাত নির্ভর অন্তঃসার শুন্য দুর্নীতি গ্রস্ত হয়ে পরেছে, যার মুল কান্ডারি এখন পবনের বাপ, তাতে আমার ধারনা আর দুই তিন টা নির্বাচন বা তারও আগে বি এন পি জাসদ বা মুসলিম লীগ এর মত বিলুপ্ত হবে। বি এন পির মুল শক্তি ছিল শহুরে মধ্যবিত্ত আর আওয়ামি বিরোধী জনগন। এদের মধ্যে প্রথম গ্রুপ দুই টার্ম বিএনপির ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে এখন অন্য কাউকে খুজছে, যার ফলাফল এবারের নির্বাচনে দেখা গেছে। আর দ্বিতীয় গ্রুপ, যারা এখন অনেকটাই বয়স্ক, তারা ঝুকছেন জামায়াত এর দিকে। তাই বলছি, বি এন পির ভবিষ্যত ভাল কিছু না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আমার মতে বাংলাদেশ এ জামায়াত এর পুনর্বাসন হয়েছে তিন টা মুল ধাপে। প্রথম টা অতি অবশ্যই জিয়া সরকার এর আমলে। বহু দলীয় রাজনীতি উম্মুক্ত করার সাথে সাথে শাহ আজিজ এর মত রাজাকার কে প্রধান মন্ত্রী বানানোর মাধ্যমে জামায়াত এবং তাদের সাথে রাজাকার দের প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশ এ প্রকাশ্য হওয়ার সু্যোগ দেয়া হয়। এ বিষয়ে আমার মনে হয় কারোই কোন দ্বিমত নেই।
আমরা যারা জামায়াত কে পছন্দ করতাম না, তাদের কাছে সব সময়ই আশা হয়ে ছিল আওয়ামী লীগ। কলেজে যখনি শিবির এর দাবড়ানী খেয়েছি, প্রশাসন এর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অসহযোগিতায় মার খেয়ে নিজের হাত নিজে কামড়েছি, মনে প্রানে প্রার্থনা করেছি আওয়ামী লিগ একবার ক্ষমতায় আসুক, বাছারা টের পাবে। এল ১৯৯১ এর নির্বাচন। বি এন পি জিতলো। আমরা জানতাম যে বি এন পি কখনো রাজাকার এর বিচার করতে পারবে না, কারন তার ঘর ভরতি তো ওই জিনিষ এ। রাজনীতির আসল খেলা দেখলাম কিছু দিন পরে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়। সংসদে সংখ্যা গরিষ্ঠতার কারনে রাজাকার আব্দুর রহমান বিশ্বাস এর জয় যেখানে নিশ্চিত, সেখানে আওয়ামী লীগ এর প্রার্থি বদরুল হায়দার চৌধুরী জামায়াত এর নেতা গো আজম এর সাথে তার মগবাজার এর বাসায় সাক্ষাত করে দোয়া চাইলেন। এই ঘটনা টা আমার মতে বাংলাদেশ এ রাজাকার দের পুনর্বাসনের দ্বিতীয় গুরুত্ত্ব পুর্ণ ধাপ।
আমার ও আমদের মনে তখন ও আশা ছিল। ভেবেছি যে এটা হয়ত আওয়ামী লীগ এর মুল নেত্রিত্ব এর নিয়ন্ত্রন এর বাইরের ঘটনা হতে পারে। বদরুল হায়দার সাহেব হয়ত নিজের উদ্যোগে এই কান্ড ঘটিয়েছেন। কিন্তু পরে বুঝলাম, এটা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রিত্বের অনুমতি নিয়েই হয়েছিল।
শেষ গুরুত্ব পুর্ন ধাপ হল ১৯৯৬ এর নির্বাচন। সেই নির্বাচন এ আওয়ামী লীগ ও জামায়াত জোট গঠন করেনি
কোন নেতার বাসায় নেতারা গোপন মিটিং করেন তা নিয়ে ওপেন সিক্রেট খবর নিয়মিত পাই। এখনো কানে আমার একটা কথা বিষ এর মত লাগে, আমার এর পরিচিত, তখন ছাত্রলীগ এর মাঝারি পর্যায়ের নেতা, কথা প্রশংগে বলেছিল যে তাদের নেত্রিত্বর দৃষ্টিভংগি এ রকম " ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যদি গো আজম কে প্রেসিডেন্ট বানাতে হয়, তাও সই"। তার কথা বিশ্বাস করিনি, কিন্ত পরে দেখলাম লীগ ঠিকই ক্ষমতায় গেল, কিন্তু রাজাকার এর বিচার করার কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করলো না। এর পর থেকে আমি এই দেশ এ রাজাকার দের কোন বিচার এর সম্ভাবনা কে শুন্যের কোঠায় রেখে দিয়েছি।
আমি মনে প্রানে চাই আমার এ অনুমান ভুল প্রমানিত হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১২:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




