somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজার কোন নিতম্বে জেগেছে ফোড়া, বাম নাকি ডান । জয় রাজ নিতম্ব, জয় রাজ ফোড়া,জয় রাজা মহীয়ান।

২৯ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাজা মহাশয় মহা যন্ত্রণায় কাতর।তার যণ্ত্রণার কথা গোপনে রাজরাণীকে বলেছেন।কিন্তু কেহ ইহা বিশ্বাস করতে চায়না। না এ হতে পারেনা। রাজরাণী আসলেন। স্বচক্ষে দেখলেন। কিন্তু উপায় কি? ফোড়া কাটতে হলেতো,রাজা মশাইয়ের নিতম্ব উম্মোচিত হবে, এতো রাজ কলঙ্ক।

অবশেষে প্রধান কবিরাজকে ডাকা হলো।কবিরাজ সব প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন।কিন্তু রাজার বস্ত্র উম্মোচনের মতো এতোবড় স্পর্ধাতো কবিরাজের নেই।এদিকে রাজা ফোড়ার ব্যথায় নিদারুন কষ্ট পাচ্ছেন।

উজির নাজিরদের মধ্যে বৈঠক বসলো কি করা যায়। রাজ কার্য ঠিকমতো চলছেনা। সব কিছু তালগোল পাকিয়ে আছে।
ওদিকে রাজার বিরোধী প্রজারা মহা উল্লোসিত।এবার রাজার বস্ত্র উম্মোচিত হবে।
তারা চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিতে লাগলো-
"যে রাজার নিতম্বে ফোড়া উপ্ত,সে রাজাতো বড়ই অভিশপ্ত।"

কিন্তু রাজার তৈলমর্দনওয়ালা প্রজারা বললেন- না সব মিথ্যা,বানোয়াট,বিভ্রান্তি। রাজার ফোড়া ওঠতেই পারেনা। এটা নিছক বিরোধী প্রজাদের ষড়যন্ত্র। রাজার দেবতুল্য শরীরে কলঙ্ক লেপনের জগন্য ইচ্ছা।

অবশেষে প্রধান উজির বুদ্ধি বের করলেন। কবিরাজের চোখ সাত স্তর বিশিষ্ট ভারি কালো পর্দা দিয়ে ঢেকে দেয়া হবে। কোনো মনুষ্য চোখ রাজার নিতম্ব দর্শন যেন করতে না পারে। প্রধান উজিরের বুদ্ধি দেখে মন্ত্রণা পরিষদের বাকি সদস্যরা হর্ষধ্বনি দিয়ে ওঠলেন।

কবিরাজ ভয়ে কেঁপে ওঠলেন। এও কি সম্ভব। চোখ বন্ধ করে ফোড়া কাটার বিদ্যাতো তার বিগত চৌদ্দ কবিরাজের কেউ শিখেনি। কিন্তু বলাতো যাবেনা। বললে-নির্ঘাত গর্দান কাটা যাবে। রাজ কবিরাজ মহা চিন্তিত। রাজ কবিরাজ সময় চাইলেন। বললেন-

"অন্ধ চক্ষু ফোড়া কাটন্ত,আমা নত মস্তক,
এ কলা শিখিতে পঠিতব্য নতুন পুস্তক।"

পুস্তক পাঠের সময় দেয়া হলো। কবিরাজ-সুযোগ বুঝে "য পলায়তি স জীবতি" মন্ত্র জপতে জপতে পালিয়ে জীবন বাঁচালেন।

এবার, নতুন কবিরাজ আসলেন।ফোড়া কাটা চিকিৎসক হিসাবে যিনি ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। তবে "রাজ নিতম্ব" বলে কথা।তারপর অন্ধ চোখে ফোড়ার গোড়া কর্তন করতে হবে। কবিরাজ কিন্চিত চিন্তিত। মহাবুদ্ধিমান প্রধান উজির বুঝতে পারলেন। গোপন বৈঠক বসলো আবার নতুনভাবে।

প্রধান উজির সমস্যার খুব সহজে সমাধান করে দিলেন। অন্যান্য সভাসদরা প্রধান উজিরের বুদ্ধির তারিফ করতে লাগলো। রাজ্যব্যাপি সৈন্য সামন্ত পাঠানো হলো - মুহুর্তেই ধরে আনা হলো নিতম্বে যাদের ফোড়া ওঠেছে এমন সব প্রজাদের । প্রতি ফোড়ার জন্য একটা করে ছাগল দিয়ে প্রজাদের খুশী করা হলো।

রাজার নিতম্বে কাচি চালানোর আগে কবিরাজ নিজ চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে গরীব প্রজাদের নিতম্বে কাচি চালিয়ে হাত রপ্ত করবেন। শুরু হলো নিতম্বে কাচি চালানো। কবিরাজ যতই পারদর্শী হোন না কেন ফোড়া কাটায়, কিন্তু অন্ধ চোখে এযে রীতিমত ভিপিএন দিয়ে ফেসবুকে লগইন করার চেয়েও কঠিন কাজ। তাই কারো নিতম্ব কাটা গেলো, কারো ফোড়ার অর্ধেক গেলো । আবার কারো ফোড়া ফুলের মতোই প্রস্ফুঠিত হয়ে এক পাশে হেলে পড়ে রইলো।

কিন্তু কবিরাজ সফল হতে পারলেননা। প্রধান উজির বললেন-
"একেবার না পারিলে শতবারে হবে পোক্ত
প্রজার ফোড়া কেটে সিদ্ধ হোক কবিরাজের হস্ত।"
শুধু লক্ষ্য একটাই "রাজনিতম্ব না করিবে দর্শণ, করিবে ফোড়ার গোড়া কর্তন।" কবিরাজকে পারতেই হবে।

এখন শুরু হলো আরেক সমস্যা। নিতম্বে ফোড়া ওঠেছে এমন রোগী পাওয়া রীতিমতো দূষ্প্রাপ্য হয়ে গেলো। নিতম্বে ফোড়ার টনটন ব্যথা নিয়ে অনেক প্রজারা গোপনে ঘর বন্দী হয়ে রইলো। কালা ছাগলের দরকার নেই। ফোড়ার ব্যথায় মরে যায় যাক। কিন্তু নিতম্ব ঠিক থাক, ঠিক থাক। প্রধান উজির সমস্যার সমাধান করে দিলেন। সভাসদরা প্রধান উজিরের বুদ্ধিমত্তায় আবার হর্ষধ্বনি দিয়ে ওঠলো।

গরীব প্রজাদের ধরে আনা হলো। বৃক্ষরাজি,লতা,শিকড়,কান্ড,রস্য,ভেষজ ইত্যাদী উনবিংশ উদ্ভিদরাজির রস নিয়ে কবিরাজ দারুণ একখান জোলাপ তৈরি করলেন। এ জোলাপ যাকেই খাওয়ানো হবে তার পশ্চাতদেশেই মুহুর্তেই সুতীক্ষ্ন তীরের অগ্রভাগের মতো ফোড়া উদিত হবে।"প্রজাদের নিতম্বাকাশে ফোড়ার উদয়ন" কবিরাজ মশাইয়ের এ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার হিসাবে বিবেচিত হলো।

এখন নিতম্বে আর ফোড়ার অভাব নেই। প্রজারা লাইন দিয়ে দাঁড়ানো। কবিরাজ বন্ধ চোখে একহাতে বস্ত্র উম্মোচন করছেন আরেক হাতে কাঁচি চালাচ্ছেন । কাঁচির ক্যাচাৎ ক্যাচাৎ আওয়াজ -আর ফোড়া ফাঁটার ফটাস ফটাস শব্দ মিলে দারুণ এক সুরলহরি সৃষ্টি হয়েছে।
অবশেষে সারাদিন ব্যাপি ৩৩০ টি ফোড়া কাটার পর কবিরাজ সফল হলেন। এবার চোখে কাপড় বেধেই কবিরাজ অনায়াসেই ফোড়ার গোড়া কর্তন করতে পারবেন বলে ঘোষণা দিয়ে রাতের জন্য বিশ্রামে গেলেন। পরদিন সকালে রাজা মশাইয়ের ফোড়া কাটা হবে। রাজভবন সাজানো হয়েছে। চুন্নী সাহা সহ সব সাংবাদিকরা প্রস্তুত।

পরদিন সকালে রাজ বিশ্রামাগারে মখমলের গালিচার পালঙকের ওপরে রাজা মশাই উপুড় হয়ে শুয়ে আছেন। রাজ কবিরাজ ধীরপায়ে প্রবেশ করে জাহাপনাকে কুর্নিশ করলেন। আসল কার্য সাধন করে কবিরাজ মশাই রাজইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ফোড়াকর্তনবিদ হিসাবে নাম লিখাবেন-।

এক নজর রাজার পশ্চাতদেশ দেখে নিলেন। রাজার খাস গোলাম-কবিরাজের চোখে সাত পর্দার কালো কাপড়ে বেঁধে দিলো । এবার কবিরাজ কাঁচি বের করে হাতে নিলেন। ভয়ে আর উৎকন্ঠায় কাপঁছে তার শরীর। আর মুহুর্তেই কবিরাজ ভুলে গেলেন-

"রাজার কোন নিতম্বে জেগেছে ফোড়া, বাম নাকি ডান
জয় রাজ নিতম্ব, জয় রাজ ফোড়া,জয় রাজা মহীয়ান। "

প্রজাদের কেউই জানলোনা রাজার ফোড়া কর্তন করতে গিয়ে রাজার কি কাটা গেলো-শুধুই জানলো ফোড়া নিজেই আপন মহিমায় প্রস্ফুটিত হয়ে চারদিকে তার সুবাস ছড়িয়েছে আর পরদিন প্রত্যুষে রাজ কবিরাজের আবারো গর্দান কাটা পড়েছে।


সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৪
২৩টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×