আমার জন্মের ভাষা চাটগাইয়া।
ধর্মের ভাষা আরবি।
বইয়ের ভাষা বাংলা।
মায়ের ভাষা সিলটি।
পেট চালানোর ভাষা ইংরেজি।
সুতরাং সব ভাষার প্রতিই আমার ভালোবাসা আছে। সব ভাষাই সবার নিকট মধুর। কোনো ভাষাই হেলার নয়। কিন্তু ভাষা চর্চা না করে শুধু ভাষাদিবসে আবেগ খরচা করলে- যেকোনো ভাষা বিশ বছরের মাঝে- হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা আছে।
ইথিওপিয়া ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে কিনা জানা নেই। তবে নিজ ভাষাটাকে শুধু দিবসে না রেখে কাগজে -কলমে রেখেছে। ইথিওপিয়ার শিক্ষামন্ত্রী বলেন-ইংরেজি বলে ফুটানি করা মানে হলো- পরের কাপড় ধার করে পরিধান করে গর্ব করা। ঘানার ৬০% লোক একেবারে পারফেক্ট ইংরেজি বলার পরও আফ্রিকার গরীব দেশ। অন্যদিকে, ইথিওপিয়ার দাপ্তরিক ভাষা, কোর্টের ডিক্রি, ফরমান, আদেশ সব কিছু হলো তাদের নিজস্ব ভাষা এ্যামহারিকে। মাত্র ৫% ইংরেজিতে কথা বলার পরও আফ্রিকার অন্যতম ধনী দেশ হলো ইথিওপিয়া। আমরা মনে করি ইংরেজি না জানলে বুঝি আমার আর কোনো উন্নতি নাই।
কিন্তু তাই বলে কোনো ভাষাকেই অবজ্ঞা করা যেমন ঠিক না। আবার নিজের ভাষাকে একেবারে শ্রেষ্ট ভাষা বলে গরীমা করাও ঠিক না। বরং যার যার আন্চলিক ভাষাও তার তার কাছে মধুর। কেউ আণ্চলিক ভাষায় কথা বললে কিংবা কথার মাঝে আণ্চলিকতার টান চলে আসলে হাসি তামাশা করাও ঠিক না। শুধু ইংরেজি জানলেই এলিট। বাকি সবাই ডিলিট। এই মনোভাবটাই খারাপ। ভালো এ্যকসেন্টে ইংরেজি জানাই মুল কারিশমা হলে বানকিমুন জাতি সংঘের মহাসচিব হতে পারতেননা। সদ্য অস্কার বিজয়ী কোরিয়ান ম্যুভি সেরা ছবি হতোনা। পরিচালক বুক ফুলিয়ে নিজস্ব ভাষায় বক্তৃতা দিতেন না। বাংলা ভাষার পরিচালক অস্কার বিজয়ী সত্যজিত রায়ের জন্য অস্কার পুরষ্কার তাঁর গৃহে পৌঁছে দেয়া হতোনা।
এ্যকসেন্টের চেয়ে একসেপটেন্সের গুরুত্ব বেশি। শুদ্ধভাবে কথা বলার চেয়ে স্বচ্ছ চিন্তার গুরুত্ব আরো বেশি। অন্যের অরিজিনালকে কপি করার চেয়ে নিজেই অরিজিনাল হয়ে ওঠার গুরুত্ব তার চেয়েও বেশী।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:৪৫