চমৎকার এই কথাগুলো এইমাত্র একটা ইংলিশ পেজে পড়লাম।
বিখ্যাত নৃতত্ববিদ মার্গারেট মিডকে তাঁর এক ছাত্র প্রশ্ন করেছিলো- ম্যাডাম-মানব সভ্যতার সবচেয়ে আদি নিদর্শন কি?
ক্লাসের ছাত্ররা মনে করেছিলো ম্যাডাম হয়তোবা- আগুন, পাথর, মাছ ধরা, কৃষির সূচনা করা এসব নিয়েই বলবেন। বই- পুস্তকে যেমন লেখা আছে।
কিন্তু মার্গারেট গভীর মনোযোগের সাথে বেশ কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে বললেন- ভাঙ্গা ঊর্বস্থি বা থাইবোনের আরোগ্য লাভই হলো সভ্যতার প্রথম সূচনা।
ছাত্ররা জবাব শুনে এখনো আরো হতবাক। ভাঙ্গা ঊর্বস্থির সাথে সভ্যতার সম্পর্ক কি?
ম্যাডাম বললেন- এ্যানিমল কিংডম বা পশুদের রাজত্বে-শিকার করতে গিয়ে বা অন্য কোনো কারণে যার পা ভেঙ্গে গেছে। সেই জানে জীবনের যন্ত্রনা কি? ভাঙ্গা পা নিয়ে সে না পারবে দৌড়ে পশু শিকার করে খাবার সংগ্রহ করতে। না পারবে নদীতে গিয়ে পানি পান করতে । না পারবে নিজেকে পশুদের কাছ থেকে সুরক্ষা করতে। মনে রাখতে হবে -ঐ সময়ে কিন্তু মানুষ-পশু সবাই সবার শিকার। সবাই সবার আহার। কাজেই, ভাঙ্গা ঊর্বস্থির মানুষটির মতো অসহায় তখন আর কেউ নেই।
ঐ সময় যার পা ভেঙ্গেছে। আবার ভাঙ্গার পর যার পা সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করেছে-সেটাই হলো সভ্যতার প্রথম সূচনা। কারণ- ভাঙ্গা পায়ের মানুষটিকে কোনো একজন বহন করে নিশ্চয়ই নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গেছে। শিকার আর করতে পারবেনা বলে অবহেলা করে- নিজেদের জন্য বোঝা মনে করে তাকে ফেলে যায়নি। শুধু যে সাথে করে নিয়ে গেছে তাইনা, সে আরোগ্য লাভ না করা পর্যন্ত তার সাথে থেকেছে। তার শুশ্রুষা করেছে এবং তাকে সময় দিয়ে সুস্থ করে তোলেছে।
তাই, কারো জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহুর্তে সাহায্যকারী হয়ে পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমেই শুরু হয়েছে সভ্যতার আদি সূচনা।
সমাজ-রাষ্ট্র , মানুষ যাই বলিনা কেন- যতক্ষণ না পর্যন্ত সে দুঃসময়ে কারো পাশে না দাঁড়ায় ততক্ষণ পর্যন্ত সে হয়তো উন্নত হতে পারে। কিন্তু সভ্য হতে পারেনা। উন্নতি আর সভ্যতা একনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:২৬