বুয়েটে ধর্মঘট। শিক্ষকেরা আছে ফান্দে আর প্রশাসন ফাদ বানানোতে ব্যস্ত। আমার সরল চোখে কোন সমাধান দেখছি না। কারণ ক্ষমতাসীনরা কখনো পদত্যাগ করতে জানেন না। আর ক্ষমতাসীনের বাপও যদি ক্ষমতায় থাকে তখন তাদের টেনেও নামানো যায় না। সুরঞ্জিত বেটা আবার একসময় নাকি বাপের সাথে দ্বন্দে গেছিল, তাই বেচারা ক্ষমতায় থাইকাও ধরাটা খাইছে পদত্যাগিত হইয়া। শিক্ষকসমিতিতে নাকি সবাই নিষিদ্ধ গ্রুপের ভাবাদর্শে দাঁড়ায় আছে। আসলে আমার কাছে মনে হচ্ছে, এইটা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য একটা চক্রান্ত। উপাচার্যদের নামানোর আড়ালে বুয়েট এইভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলে ফায়দা লুটতে চাচ্ছেন কেউ কেউ। আমাদের উপাচার্য মাটির মানুষ। গালভরা সহীহ দাড়ি। শুধু সোনার ছেলেদের একটু সুযোগ দেন আর কি!!! আমরা ভাগ্নেবাহিনীও খুশি। আফটার অল, মামারাই তো লে হালুয়াটা খাচ্ছে। দুরের কেউ তো আর না!!!!!
আমাদের সাধারণ ছাত্ররা নাকি নিয়মিত মানববন্ধন করছেন??? কিন্তু সমস্যাটা হল, আমাদের বুয়েটের মামারা ছাড়া মনে হয় সবাই অসাধারণ ছাত্র। নাইলে, আমার কোন ভাগ্নে ভাইকে তো সেখানে দেখলাম না। আসলে, কত প্রশংসায় তো শুনি... তাতে একটা কথা শুনি প্রায়শঃ এই ছেলেটা অসাধারণ মেধাবী ছাত্র।সাধারণ ছাত্ররা মানববন্ধন করল!!! স্যার পেটাতে গেল!! পোস্টারিং করল!!! লিফলেট লাগাল!! প্রশাসনের ঝান্ডা যাকে বলে আর কি!!! আর মামাদের বাবা বুয়েট প্রশাসন, আর বুয়েট প্রশাসনের বাপদের আছে সংবাদমাধ্যম। আপাতত মিডল ক্লাসের পত্রিকাগুলো সরব। ভো*র কাগজ, সংবা*, *নকন্ঠ... ।
যাকগে অনেক কথা হল। আমি এসব একটু কম বুঝি। আমার যাবতীয় জ্ঞান একটু অন্যদিকে কাজ করে। আজকের লেখার উদ্দেশ্য হল কিভাবে মামা আর ভাইদের মধ্যে যারা ক্লাস না করে কষ্ট পাচ্ছে তাদের জন্য কিছু একটা উপদেশ দিয়ে যায়...
১। আমার চট্টগ্রামের ভাইদের উদ্দেশ্য করে বলছি, বাড়ি চলে যান। আমার জানামতে, তারা বেশির ভাগেই বাড়িতেই। কেউ এসে দুইদিন থেকে চলে গেছে। কেউ আবার গতকাল রিয়ালকে জিতাইছে নাকি খুলনায় থাইকা, সে নাকি হলে যে কয়টা এল-ক্লাসিকো দেখছে সবই নাকি হারছে। তো এরকম অজানা জান উদ্দেশ্য হাতে থাকলে চলে যান বাড়ি। তবে হ্যা, ট্রেনে অর বাসে উঠে একটা স্ট্যাটস দিবেন। আবেগঘন। ঠিক বাসায় পৌছে আরেকটা স্ট্যাটাস দিবেন, হোম, মাই ছুইট হোম লিখে। বাড়ি-অসুস্থ বা হোমসিকনেস রোগের রোগী বলে খ্যাত ... চট্টগ্রামের ভাগ্নেরা তাড়াতাড়ি বাড়িত যান। তবে একটা ব্যাপারে সাবধান থাকবেন- অন্য ভারসিটি ও ভাইদের সাথে একটু কম মিশবেন। আজকাল, নাকি বাপ-মাও নাকি আমার ভাইদের বুয়েট নিয়ে খোটা দেন।
২। এইতো টিউশনির মৌসুম। ধুমাইয়া ৫-৬খান টিউশনি করান। সামনে তো আবার ভর্তি-পরীক্ষা। কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিবেন আগামী তিন-মাস। বুন্ধ থাকলেই তো ভাল। এর জন্য আপনাদের পুনম পান্ডের খোলা দেখার জন্য একটু বেশি ওয়েট করতে পারবেন না?? ভর্তি-প্রত্যাশীদের আশার প্রতীক তো আমি আপনারাই? কী বোলেণ?? চলুন, স্যারদের পাশে দাড়াই আন্দোলনে আর ফাকতালে টু-পাইস কামিয়ে নেই।
৩। সময় কাটছে না? চলে যান, বান্দরবান-সিলেট-কক্সবাজার আরো যেখানে পারেন। ঘুর০তে থাকুন। তবে হ্যা, সাথে একটা DSLR নিয়ে যেতে ভুলবেন না। আজকাল নাকি, অইটা ছাড়া ছবি তোলা নাকি খেত। আর ছবি তুলে বসে থাকলেই হবে না। পারলে ভ্রমণ অবস্থায় ফেসবুকে আপলোড দিতে থাকুন। ভ্রমণেও কেন আপনার সঙ্গী ফেসবুককে বাদ দিবেন। সমুদ্রের পানিতে শরীর ডুবিয়ে একখানা স্ট্যাটাস দিন আর লাইক পেতে থাকুন। দেখেন, দুনিয়াটা কত শান্তি। আর তা যদি না পারেন , তো এসেই আপলোড দিন। দুইদিন সেই কাজে ব্যস্ত থাকুন... তারপর আবার বেড়িয়ে পড়ুন সোন্দর্যের আর পার্টের সন্ধানে।
৪। "বুয়েট খুললেই পুনম পান্ডে খুলবেন"-- এই আশায় যারা বুয়েট খোলার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছেন তাদের বলছি-- আপনারা আপনাদের মনের অন্যান্য স্বাদ মেটাতে থাকুন। গুদ থিংস কামস লেইট। আর লুলায়িত হয়ে বসে থাকার মানেটা কি!!! পিসিটা খুলুন আর উপভোগ করুন। আর যদি তেমন নতুন কিছু না থাকে তাহলে চলে আসুন আমার রুমে। আমার রুমমেটের কাছে দু-দুটা হার্ড্ডি তাও এক টেরার করে এসব নিয়েই আছে।
দেখেন, আপনারা উলটা পালটা কিছু ভাববেন না... আমি মুভির কথা বলছিলাম।
৫। মুভি দেখেন। কার্ড খেলেন। দু-চারটা স্ট্যাটাস দেন ফেসবুকে বসে। ব্যাস- সময় কেটে যাবে চিতাবাঘের গতিতে।
৬। আপনারা কি জানেন, এই অপ্রত্যাশিত বন্ধ আপনাদের কতটা টেনশন মুক্ত রাখছে?? যখন সবে হলে এলাম। তখনো ধর্মঘটের খবর শুনি নাই। এক বন্ধুকে দেখলাম, ১টায় ঘুমিয়ে পড়তে। জিজ্ঞেস করে জানলাম, রাতজাগার অভভ্যেস টা নাকি দূর করা খুব প্রয়োজন। সামনের টার্মে নাকি সব ৮টায় ক্লাস। আমিও তখনি খুব টেনশইনে পইড়ে গেলাম। সেদিনেই শুভসংবাদটা শুনলাম। বুয়েটে নাকি ধর্মঘট। ভাই ভুকে হাত দিয়ে কন তো, আপনি খুশি হন নাই???
৭। আরো অনেক রকম পথের সন্ধান নিয়ে সামনে হাজির হব... আপাতত শেষ একটা উপদেশ দেই যাদেরকে আমরা আতেল বলে গালি দেই। কি নিচ আমরা। মহানদের নামে এইভাবে কুৎসা রটাই!!! আমার এক আতেল(সরি আমি এইশব্দ ব্যবহারে অস্বস্তি ফীল করি) বন্ধু স্ট্যাটস দিল, বুয়েট একটা সপ্তাহ ক্লাস করিয়ে সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা আর কিছু চোথা দিলেই তো পারে, বন্ধটা এনজয় করতাম। তাদের বলছি, বুয়েটের সিলেবাস গত অনেক বছর ধরেই সেইম। বড়ভাইদের কাছে যান... সিলেবাস পেয়ে যাবেন। চোথাও পাবেন। পড়ুন কুপিয়ে মনকে শান্ত করুন। পারলে আইডিয়া নিয়ে কাজ করেন। পেপার রেডি করেন... সামনে আসছি একগাদা পথ বাতলিউয়ে দিতে...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৪:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




