যাঁরা আমার পূর্বের লেখা পড়েছেন তাঁদের জানাই ধন্যবাদ।
ছলনা করা মানুষের অন্যতম দোষ। কিন্তু আমরা মানুষরা আল্লাহর সাথেই ছলনা করি। প্রকৃতপক্ষে আমরা নিজেদের সাথেই ছলনা করছি।
৭টি বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করাই হচ্ছে ঈমান। বিষয় ৭টি হচ্ছে- (১) আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস (২) নবী-রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস (৩) আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব সমূহে বিশ্বাস (৪) ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাস, (৫) কেয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস (৬) তগদীরের ভালমন্দের প্রতি বিশ্বাস (৭) বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস।
(১) আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ঃ আল্লাহ্ এক এবং অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি ছাড়া সকল দৃশ্য ও অদৃশ্য জিনিসই সৃষ্টি এবং তিনি সকলের স্রষ্টা।
প্রশ্নঃ আমরা কতজন একথা কয়টি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি?
(২) নবী-রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস ঃ দুনিয়ায় যত নবী-রাসূল এসেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে বলেছেন। ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আমরা তাঁদের কথা কতটুকু বিশ্বাস করি এবং সে অনুযায়ী কাজ করি? তাঁদেরকে যদি বিশ্বাসই স্থাপন করতাম তবে তাঁদের কথাগুলো কেন বিশ্বাস করি না?
(৩) আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব সমূহে বিশ্বাসঃ আল্লাহর কিতাবসমূহে বিশ্বাস আমরা ১% লোকও করি কিনা তা সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে। কারণ আলেম ওলামাগণ ও ইসলাম ধর্ম পালনকারী ভাইয়েরা যদিও পবিত্র আল্ কোরআন পড়ি কিন্তু আল্ কোরআন ছাড়া আল্লাহ্ প্রেরিত অন্য কিতাবসমূহ যেমন- তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল ছাড়াও ১০০টি ছহিফা বা ছোট গ্রন্থ আছে যা আমরা পড়িই না। আর সাধারণ মানুষ যদি কিতাবসমূহে বিশ্বাস করতাম তবে প্লে শ্রেণি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত কত হাজার বই ও উপন্যাস, কবিতা, পেপার, ম্যাগাজিন পড়ি। কিন্তু মাস্টার্স পাস লোকজনের মধ্যে কতজন পবিত্র কোরআন জীবনে অন্ততঃ একবার পড়েছি? অন্যদের প্রতিও একই প্রশ্ন রইল?
(৪) ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাসঃ ফেরেশতাগণ আহার নিদ্রা ছাড়াই সর্বসময় এক আল্লাহর ইবাদাত করছে। আমাদের দুই কাঁধে ভাল-মন্দ লেখার কাজে নিয়োজিত দুই ফেরেশতা সম্পর্কে কি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস আছে? থাকলে কি আমরা খারাপ কাজ করতে পারতাম?
(৫) কেয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাসঃ কেয়ামত দিবসে আমাদেরকে আল্লাহর সামনে দাড় করানো হবে। তখন পূন্যবান মানুষ আনন্দে থাকবে এবং পাপী ব্যক্তিগণ অপরাধী হয়ে কান্নায় অস্থির হবে তাঁদেরকে আবার পৃথিবীতে প্রেরণ করতে যেন পূণ্য কাজ করে আল্লাহর কাছে আসতে পারে। যদি আমরা এ কথাগুলো বিশ্বাস করতাম তবে তো দুনিয়ায় থাকা অবস্থায়ই পূণ্য অর্জনের চেষ্টায় রত থাকতাম। থাকি কি?
(৬) তগদীরের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাসঃ আমাদের তগদীর বা কপালে কি আছে তা আল্লাহই নির্ধারন করেন শুধু অল্প কিছু ক্ষেত্রে আমাদের স্বাধীনতা আছে। যদি এ বিশ্বাস আমাদের থাকতো তবে মন্দ কিছু ঘটলে আমরা দুঃখে আহাজারি করতাম না। সবকিছুতেই আল্লাহর সন্তুষ্টি খুঁজতাম। কিন্তু আমরা সকল কাজের জন্য নিজেদেরকে কৃতিত্ব দেই, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি কি?
(৭) বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাসঃ শেষ বিচারের দিন আল্লাহ আমাদের ভাল-মন্দ কাজের হিসাব নিবেন। ভাল কাজের জন্য জান্নাত বা চিরস্থায়ী শান্তির স্থান এবং মন্দ কাজের জন্য চিরস্থায়ী কষ্টের স্থান বা দোজখ। যদি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস থাকতো তবে কি আমরা মন্দ কোন কাজ করতাম দোজখ নিশ্চিত জেনেও?
[চলবে......]

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


