somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সমস্যাময় ইতিহাস শৈশব থেকে.......এখন পর্যন্ত । (১)

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ ভোর ৫:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমে চাইরটা কথাঃ

আমার ব্লগে যোগ দেয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল আমার জীবন ইতিহাস অন্তত কয়েকজনকে জানানো, যারা অন্তত আমার চেয়েও বেশি জ্ঞান রাখেন। এবং দ্বীতিয় কারন হচ্ছে কিছু জ্ঞান লাভ করা। এবং তৃতীয়ত টাইম পাস। অন্তত একজনের কষ্ট নিয়ে ব্লগারা হাসাহাসি করবেননা। হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানা যাবে।

অনেকেই দেখি ব্লগে অনেক আনন্দ বেদনা হাসি কান্না দরকারী বেদরকারী অনেক কিছুই শেয়ার করেছেন। আমিও চেষ্টা করব আমার কষ্ট বা আনন্দগুলো শেয়ার করার। যদিও বেশির ভাগই নষ্টালজিক কিন্তু তার পরেও কিছু আনন্দের কথাও থাকতে পারে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা একটা নোংরা জীবন বলতে পারেন। কাউকে বিরক্ত করা আমার উদ্দ্যেশ্য নয়। তারপরেও যদি কেউ বিরক্ত হন তবে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে কথা দিচ্ছি মিথ্যা বলবনা।

এটা মূলত আমার শিশু বয়সের সমস্যার কথা। নিষিদ্ধ বা সিদ্ধ। এখানে আমার পরিবারের অনেকর গল্পও থাকবে। এটা একটি নিম্নশিক্ষিত এবং নিম্নমধ্যবৃত্তের ইতিহাস সুতরাং দারিদ্র অপুষ্টি বা কিছুটা নোংরামী থাকতে পারে। অনেকগুলো ব্যাপার আমি এখন উপলব্ধি করতে পারছি।এগুলো নিয়ে আমার ধারণা গুলো পরে হয়ত আলাপ করা যেতে পারে। আমি কখনোই নীজেকে আড়াল বা প্রদর্শন করতে চাইনা। কিন্তু এই লেখাগুলো যাতে আমার ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব না ফেলে বা আমার বর্তমান জীবন কিছুটা উপকৃত হয় তাই এই ছদ্মনাম রাখলাম। (মানুষ-অ)। আমি সব সময়ই ভাল মানুষ হতে চেয়েছিলাম। আরো ভাল হতে চেয়েছিলাম এবং এখনো চাই। আমার লেখা পড়ে কেউ নিরাশ হবেন না। আমি ভাল আছি।

আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:-
বছর খানেক হয় আমি আবিস্কার করেছি যে, আমি বেচে আছি। নিশ্চিত করে বলতে পারি অনেকই আমার মত এতই ব্যস্থা থাকেন যে, বেচে আছেন কিনা তার খবর নেয়া হয়না। আমি একজন প্রবাসী। জন্ম ১৯৮৩ তে, বাংলাদেশের প্রধান এক শহরে, শৈশব কৈশর যৌবনের কিছু অংশ জন্মস্থানেই পার করা। শিক্ষাগত যোগ্যাতা তিনবারে এস.এস.সি। আরো সামান্য কিছু পড়ালেখা করেছি ........পরে জানবো।

শুরু করি......

আমার ছোট বেলার শারীরিক সমস্যাঃ
আমার জীবনের সবচাইতে প্রথম স্মৃতি দিয়ে। আমার বোন ঘোড়া সেজে আমাকে পিঠে নিয়ে খাটের উপর চড়ছিল, আমি হঠাৎ করে পড়ে যাই খাটের কার্নিশ মাথায় লাগে সম্ভবত আমার মাথা ফেটে যায়। সেই সময় সম্ভবত আমি হাটতে পারিনা। সেই বয়সের স্মৃতি সাধারণত স্বরন থাকেনা। কিন্তু বিস্মৃতি থাকে। (তারপর পরইই কিনা ঠিক বলতে পারছিনা হয়ত তারপরেও অনেকবার আমার মাথায় আঘাত পাই।) আমার মনে পড়েছে গলা থেকে মাথা র্পযন্ত মাথায় পট্টি বাধা ছিল আমার মা আমাকে 'মাছভাজা' খাইয়ে দিচ্ছিলেন কিন্তু চাবানোর সময় পট্টিটি বাধা দিচ্ছিল।

সত্যি কথা বলা শুরু করি। আমি বিছানায় শিশি করতাম। এবং বুঝতে পারতাম এতে আমার বাবা মা খুবই বিরক্ত হতেন। কিন্তু তারা তেমন একটা সচেতন ছিলেন না। পরবর্তীতে তার অবশ্য রবার ক্লথ এনেছিল কিন্তু ওটাতে শুতে গরম লাগত তাই আমি ওখান থেকে বের হয়ে শুতাম চিন্তা করতাম শিশি করবনা। কিন্তু করে ফেলতাম। অনেক বকাঝকা শুনতে হত। এর পর আমি আবিষ্কার করলাম। যদি শিশি এর উপর অনেকক্ষান শুয়ে থাকা যায় তবে ওটা শুকিয়া যায়। এটার কারনে উনার প্রায়ই টের পেতেন না। সেই সময়ের কথাও স্মরন থাকার কথা না। (এখনকার বাচ্চারা কতই না পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন)

তখন আমার বয়স সম্ভবত ৩/৪, আমার আরেকটা সমস্যা ছিল। আমি ঘুমথেকে উঠে চোখ খুলতে পারতাম না। চোখে ময়লা আসতো এবং চোখ জমাট বেধে যেতে। এটা আমার সবচাইতে বিরক্ত লাগত। আমার মা পানি দিয়ে চোখ মুছে দিলে আমি শান্তিমত চোখ খুলতাম। এই সমস্যা কতদিন ছিল আমার মনে নেই। (এই ব্যপারে কেউ কি কিছু জানেন?)

মায়ের কথা
এখন একটু আমার মায়ের কথা বলি। তিনি একজন জনম দুৎখি মানুষ ছিলেন। আমার মা একদম অজপাড়াগায়ের মেয়ে। তিনি মাত্র ক্লাস ফাইব পর্যন্ত পড়েছিলেন। মনেহয় অতটুকুও উনার জন্য কষ্টকর ছিল কারণ তখনকার সেই বিদ্যুৎ শুন্য গ্রাম বা সমাজ। পড়ালেখার ব্যাপারে উনি খুবই আগ্রহী ছিলেন উনি প্রায় সময় উনার কবিতা আবৃত্তি করে শোনাতেন। আমাদেরকেও পড়ালেখার ব্যপারে প্রাইয় উৎসাহ দিতেন।

যথা সম্ভব আমার মায়ের বাল্য বিবাহ হয়েছিল। আমার এই কষ্টগুলোর জন্য উনাকে কখনই দোষ দেয়া যায়না।

আমার বাবা প্রেমে ব্যর্থ হয়েছিল (সম্ভবত, অনেক কিছুই পরিবারের লোকজন গল্পগুজব করার সময় শুনেছি। বা হয়ত কোথাও থেকে জন্মাবার আগেই দেখেছি....)। সেই মহিলার পরিবারের সবাই রাজী ছিল কিন্তু লাইলির (ছদ্মনাম) মা রাজী না থাকার কারনে আমার বাবা হাবা হয়ে যেতে হয়েছে। তো এই মজনুকে লাইনে আনার জন্য আমার দাদী তার প্রিয় সৎ বোন (আপনের মতই, এক বাপ ভিন্ন মা ) অনুরোধে আমার মাকে বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসেন। আমার মা অনেক সুন্দর ছিল আর আমার বাবা কাউল্লা।

আমার মা (সম্ভবত) অনেকবার কান্না করে বলেছেন উনি বিয়ে করতে চাননা বা শহরে যেতে চানা না। আমি যতটা শুনেছি উনি একজনকে পছন্দ করতেন। যদিও পরিবারে এর কোনই গুরুত্ব ছিলনা।

বাবার কথা
মন্দহউক ভাল হউক বাবা আমার বাবা পৃথীবিতে বাবার মত আর আছে কেবা। অবশ্য এই গানটা শুনে আপনারা মনে করতে পারেন আমার বাবা একজন খারাপ মানুষ। আমি আমার বাবার উপর খানিকটা বিরক্ত তাই সম্ভবত তার ব্যাপারে এখানে নিরপেক্ষ থাকা কষ্ট হবে। আমার বাবা একজন উরন চন্ডি টাইপের মানুষ ছাত্রাবস্থায় তাকে স্কুলে খুজে পাওয়া কষ্ট কর হত। অবশ্য নতুন জায়গা ট্যেকনোলজি এই সব ব্যাপারে তার আগ্রহ ছিল। সে প্রাইয় ইলেকট্রনিক্স রিপায়ারিং এর দোকনে বসে থাকত সেগুলো কিভাবে ঠিক করে এগুলো দেখত। শেষ পযন্ত পলিট্যাকনিক্যল থেকে তিনি ডিপ্লোমা করেন তার প্রিয় বিষয়ের "ইলেট্রনিক্স" উপর। আমার বাবার জীবনও মেটামুটি কষ্টের। তিনি খামখেয়েলী ভূলমনের অধিকারী ছিলেন। তিনি জীবীকার জন্য একটি দোকান দেন, টিভি রেডিও রিপায়ারিং, অডিও ক্যাসেট বিক্রি ইত্যাদি ইত্যদি পাশাপাশি অনেক ব্যবসা করেছেন যেগুলো কোনটাই লাভ জনক হয় নাই।

আমার মা এবং বাবা এই দুই দুঃখি মানুষ মিলে তৈরী করেছেন আরেক দুঃখময় পৃথীবি।

আগেই বলেছি এই বিয়েতে আমার মায়ের মত ছিলনা। এখানে পরিবারের সিদ্ধান্তটাই ছিল আসল। আমার মায়ের তিন কবুল বলেন নি ....... এই বিয়ের ব্যপারে সম্ভবত আমার বড়মা জোর করে করিয়েছেন, বলেছেন মৌনতা সম্মতির লক্ষন। তারপরেও তা ছিল বাল্য বিবাহ। (তখন তো এত কানুন ছিলনা।) বড়মা মানে আমার মায়ের নানী এবং আমার নানী ও দাদী দুই বোন। আমার দাদী ছোট থাকতে উনার মা মারা যায়। আমার দাদীর বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। উনার ঘরেই আমার নানীর জন্ম। উনাকে আমরা "বড়মা" বলে ডাকতাম। বড়মা ছিলেন আবার আমার দাদার খালা। মহিলা প্রায় ১০০ বছরের উপর বেচেছিলেন।

কিন্তু আমার দাদীর যখন উঠিয়ে আনা হয় তখন আমার দাদীর বয়স ১৮ এর উপর ছিল। কিন্তু আমার অভাগা মা .... তিনি সম্ভবত সঠিক সময়ে সংসার শুরু করতে পারেননি।

দাদা আমার প্রিয় মানুষঃ
আমার দাদা আমার মতই তিন বার মেট্ট্রিক। কিন্তু অসম্ভব রকমের ভাল সরল ও সৎ মানুষ ছিলেন। পরে উনাদের নিয়ে আরো আলোচনা করব।

আবার আমার কষ্টে ফিরে যাই এই কষ্ট দুটি অমানবিক অলেক্ষনিয় তবুও লিখলাম যে কতটা কষ্ট সহ্য করে একটি শিশু বড় হতে পারে.....। যুদ্ধ বিদ্ধস্থ্য দেশে শিশুরা এর চাইতেও অনেক কষ্টে থাকে তারপরেও এই দুইটাই ছিল আমার জীবনের সবচাইতে কষ্টকর অভিজ্ঞতা (শৈশবের)। যেগুলো সরাসারি কারো সাথে শেয়ার করা হয়নি বা ......যায়না।

অন্ধকার ঘরের সমস্যা- ০১।
আমাদের খাওয়া দাওয়া একদম নিম্নমানের ছিল। সেটা তৈরি করতেও আমার মায়ের অনেক কষ্ট হত। এবং বজার করতে আমার বাবা প্রায়ই ভুলে যেতেন। আমার মা এবং ভাই, বেশিরভাগ সময় অসুস্থ্য থাকতেন।
আমার প্রচন্ড রকেমর কোষ্টকাঠিন্যহত; প্রচন্ড রকমের ভয় এবং কষ্ট হত। অনেক ভয়ঙ্কর কষ্ট। তবে তখনো আমি ফিল করতাম একদিন সুদিন আসবে......। আমাকে ডাক্তারের কাছে নেয়া হয় নাই। আমার বাবা সব কিছুই ভূলে যেতেন। নিকটস্থ ফার্মেসি থেকে বাবার সাথে নীজে গিয়ে এক ধরনের জেলর মত ঔষধ নিয়ে আসতাম। এটা ব্যবহারে অনেকটা ভাললাগত। আমার এই সমস্যা আমাকে অস্বাভাবিক বানিয়েছে। আমি সপ্তাহে ১/২ বার বড়-টয়লেটে যেতাম। শরীরে সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেও কিছই হত না। আমার পরিবারের কাছে কোনা কিছুরই তেমন গুরুত্ব ছিলনা। (সচেতন মা/বাবা অবশ্যই এই ব্যপারে খেয়াল রাখবেন বা রাখেন।) আমাদের বাথরুম মুল ঘর থেকে অনেক দুরে ছিল এবং সেখানে কোন আলো ছিলনা। রাতে এটা ভংঙ্কর ব্যাপর ছিল ওখানে যাওয়া। যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে ....একলা চলার মত মানসিক অবস্থা ছিলনা। আমার মা খুবই বিরক্ত হতেন উনাকে আমার সাথে যেতে বললে।

সমস্যা- ২।
আমার প্রচন্ড রকমের কৃমির সমস্যা হত। আমার বিশেষ জায়াগায় তারা কামরাত। আমার প্রচন্ড কষ্ট হত আর চুলকানি হত। আমার মা বিরক্ত হয়ে বলতেন, "খা আরো বেশি বেশি কইরা চিনি খা"। অবশেষে আমার বিরক্ত করার কারণে তিনি আমার আঙ্গুলে একটি কাপর মুড়িয়ে দিতেন এবং তাতে কেরোসিন দিয়ে দিতেন আমি আঙ্গুল দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে একটু পরিত্রান পাওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু খুবই দুঃখের ব্যপার ছিল। আমার মা ঐ সময় হাসতেন, শব্দ করেই হাসতেন। আমি তখনো বুঝতাম উনার এটা করা উচিত হচ্ছেনা। আমার মাকে প্রথম অন্তর থেকে ঘৃনা করার একটা কারণ। তখন ঠিকমত বুঝতে না পারলেও এটা বুঝতাম যে, আমার প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে। এগুলো মনে করে আমি অনেক কেদেছে ......... এখন আর চোখে পানি আসেনা। এখনতো মা বাবারা সন্তানদের প্রতি অনেক যত্ন নেয় তাইনা?

আরো আরো কত সমস্যা পার করে কখন আমার আত্মার মৃত্যু হয়েছিল জানিনা। কিন্তু আমার শরীরটা বেচে ছিল। এবং আমার মস্তিস্কও ভালভাবেই কাজ করছিল। তা না হলে আমি এগুলো মনে রাখলাম কি ভাবে?।

দুইটা সমস্যা একটা লাইফটাইম আরেকটা নাই।
দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা এক (যেটা এখন নাই):
সমস্যা আমার দুইটা দীর্ঘ্যস্থায়ী সমস্যা ছিল। একটা এখন নাই এটা একটা মজার ব্যাপার। আমা স্কিন ডিজিজ ছিল। কখন এইটা শুরু হইছে মনে নাই। তবে সম্ভবত আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন এইটা থেকে মুক্তি পাই। দীর্ঘ্য সময় আমি এগুলো কন্টিনিউ করেছি। এটা কখনো কমত আবার বাড়ত বিশেষ করে শিতকালে বেশি হত। কিন্তু একেবারেই ভাল হয়ে যেতনা। এটা একটা দুঃবিষহ ব্যাপার ছিল। রাতে ঘুমাতে পারতাম না। এগুলোতে পূজ/রক্ত হত এক ধরনের পানি বের হত। সবাই আমাকে পঁচা নামে ডাকত। হাতে, পায়ে, বুকে রানে মোটামুটি সব মিলিয়ে এক বর্গফুট থেকেও বেশি এলাকয় ছিল এর চাষ। আমাকে হ্যোমেওপ‌্যথিক ঔষধ খাওয়ানো হয়েছিল অনেকবার কিন্তু কাজ হয়নি। তার পর নিজস্ব ধারনায় বনাজী ঔষধ চিরতার পানি, নীম গাছের পাতা সীদ্ধ্য করে ক্ষতস্থানে ঢালা, পানি অনেক গরম থাকত। গড়ম আমার ভাল লগত কিন্তু অনেক সময় অসহ্য গরম থাকত। ভাল জায়গাও পুরে যেত। মোটামুটি কোন খরচ ছাড়া যে কোন পরামর্ষের চিকিৎসার গবেষনার বিষয় বস্তু ছিলাম আমি। আমার বাবা প্রয়ই এ্যসিড নিয়ে আসতেন তাতে নারিকেল তেল এবং পানি মিশিয়ে আমার ক্ষত স্থানে দিতেন। বলতেন "তোর এই ঘাতে যেই পোক (পোকা) আছে এগুলি এ্যসিডে মইরা শেষ হইয়া যাইব, তুই ভাল হইয়া যাবি।" আমার বাবা আমাকে অনেক যত্ন নিয়ে এই কাজ গুলো করতেন আমার খুবই ভাল লাগত। আমার বাবা ঘা ধোয়ার সময় আমার কষ্টের ব্যপারে খেয়াল রাখার চেষ্টা করতেন। ব্যাপারটা আমাকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে অনেক আরাম দিত । আর আমার মা আমার ঘা ধোয়ানের সময় খুবই বিরক্ত থাকতেন আমাকে প্রচন্ড গালাগালী করেতন অনেক সময় আমার ক্ষতস্থানে ব্যাথাও দিতেন। আমার দিকে বিলকুল খেয়াল রাখতেননা। আমার জীবনের যতগুলো গালাগাল শুনা সব আমি তাকে বলাতম, আমার এই ঘা ধোয়ার সময়। পরবর্তীতে আমাকে অনেক অনেক ডাক্তার দেখানো হল। কিন্তু ফলোআপ করা হতনা। কোন ডাক্তারের কাছে আমি দ্বীতিয় বাড় যাইনি। আমার বাবা বলত কোন প্রয়োজন নাই। দ্বীতিয়বার গেলে ফিস তো লাগবেই। এর থেকে ভাল নতুন ডাক্তার। সবচাইতে বড় ব্যাপার হজ্ছে কোন কোর্সই পুরোপুরি কম্পিলট করা হতনা। ক্যাপসুল কতগুলা দিত ৫০০এমজি এগুলো ৬/৮ ঘন্টা পর পর খেতে হত এগুলো দাম ছিল একটু বেশি। আমার বাবা প্রায়ই এগুলো আনতে ভুলে যেতেন। আমার মা প্রয়ই এই ব্যপরে ঝগরা করতেন। পরে অবশ্যই আমিই ঔষধ ক্ষেতে চাইতাম না। আমি যখন একটু বড় হই আমার ছোট ভাই জন্মায় আমার নীজের ঔষধ খাওয়ার দায়িত্ব পরে। আমি ঔষধ লুকি জমিয়ে রাখতাম তারপর অনেক দূরেগিয়ে ফেলে দিতাম। আরো পরে ডাক্তারের পরামর্শে প্রায় ২০ টা ইনজেকশনও নিতে হয়েছিল। এক জীবনে এত গুলো গুতা.........কষ্ট........। এই স্কিন ডিজিজ / ঘা, প‌্যাচরা আমার শৈশবটাই ফানা ফানা করে দিয়েছিল। আমি খেলতে পারতাম না। কারো সাথে মিশতে পারতাম না। মাঝে মাঝে যখন একদম কমে আসতে তখন আমি ঘুরতাম। আশেপাশের মাঠে গিয়ে খেলা দেখতাম এবং অপেক্ষায় থাকতার কেউ যদি আমাকে খেলায় নেয় বা বল যদি আমার কাছে আসে।

আমার মেজাজ খুব খিটিখিটে থাকত। সবাই আমার পিছেন বলত গরম গরম ঔষধ খেয়ে আমার ম্যজাজ এই রকম খিটখিটে হয়ে গেছে। এটা শুনার প্রতিক্রিয়া হিসাবে আমি আরো বেশি মেজাজ দেখাতাম। এই সমস্যার কারনে আমি নিয়মিত গোসল করতাম না। সমস্যাটাই সমস্যা বাড়িয়েছে। (আমার স্ক্রীন ডিজিজের মূল করণ ছিল অপরিষ্কার অপরিছন্ন পরিবেশ।)


লাইফ টাইম সমস্যাঃ
আমার আপাতত আর কোন সমস্যা নাই। এই টাই শেষ এবং এই টাই জটিলতর। আমার চোখে অনেক সমস্যা আছে। আমি একজন রাতকানা। আমি রাতে অনেক বেশি আলো না হলে অপরিচিত জায়গায় চলতে পারিনা। আর আমার পরিচিত এলাকাগুলো আমি এমনিতেই চোখ বন্ধ করে চলতে পারি। আমি রাতে চলাফেরা তেমন একটা করতামনা কিন্তু কোথাও বেড়াতে গেলে যেমন নানাবাড়ী বা অন্যন্য কোথাও অনেক সমস্যা হত। এটার কয়েকটা কারনের মধ্যে একটা প্রধান কারন শাক সবজি না খাওয়া। আর এই না খাওয়ার জন্য সবাই আমাকে দায়ী করে গালাগাল দেয় কিন্তু আমি এর জন্য দায়ী না। এই জন্য অশিক্ষাই দায়ী। যেহেতু সমস্যাটা আছে এটা নিয়ে পরে আরো আলোচনা হবে।


স্কুল সমস্যাঃ
আমি আমার মায়ের কাছে অ আ শিখি। পড়ে আমার দাদা কাছেও পরি। সকালে আমার র্ধমিয় বই পড়তাম ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে। দাদা প্রায়ই বেত দিয়ে মরাতেন।

যাই হোক একদিন আমি জানলাম আমাকে পড়েদিন স্কুলে দেওয়া হবে। মনের ভেতর খুবই অস্থিরতা কাজ করছিল। সেই দিন আমি আবিশ্বার করি 'সাইনপ‌্যানের' মধ্যে আরেকটি বড় তুলার কলম আছে রঙটা সম্ভবত সবুজ ছিল। স্কুলে হ্যাড মাষ্টার আমার সাথে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলেছিল, আমি অনেক ভয় পাচ্ছিলাম।
.......................................................................চলবে।

আমার সমস্যাময় ইতিহাস শৈশব থেকে .......এখন পর্যন্ত । (২)
আমার সমস্যাময় যন্ত্রনাময় ইতিহাস শৈশব থেকে .....(৩)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ ভোর ৫:৫৪
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×