‘থ্রি ইডিয়টস’ দেখে কাল রাতে ফোন দিলো বন্ধু সনেট। বন্ধুত্বের টান জিইয়ে রাখতে কোনো হিন্দি সিনেমা কাজ করতে পারে -বিষয়টা দ্বিতীয়বারের মতো অনুভব করলাম। দু’টো ঘটনা ঘটলোও খুব কম সময়ের ব্যবধানে। এর আগে প্রথমবারের মতো অনুভবটাও করিয়েছিলেন বলিউডের পারফেকশনিস্ট আমির খান-ই। অনেকের অনেক আলোচনা সত্বেও বহুদিন না দেখা ছিলো ‘দিল চাহ্তা হ্যায়’ মুভি-টা। হঠাৎ সেদিন অলস সময়ে টিভি চ্যানেল দেখালো তিন বন্ধুর ওই কাহিনী। সেদিন আমিও খুব অনুভব করেছিলাম সনেট, আনন্দ, শামীম, ইমু আর এমিলকে।
আজ কথাগুলো নিয়ে লিখতে গিয়ে আরেকটা বিষয় মাথায় আসছে। ‘বন্ধুত্ব’ আর ‘তিন’ শব্দদু’টো ঘুরেফিরে বেশ ক’বারই এসেছে আমার জীবনে। ছোটবেলায় বন্ধু ইভানের কাছ থেকে নিয়ে পড়েছিলাম ‘বুদ্ধির ঝিলিক’ বইটা। ওই সময় সেবা প্রকাশনীর ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজ দারুন জনপ্রিয় ছোটদের মাঝে। তিন বন্ধুর সেই গল্পগুলো একটানা পড়েছি অনেক বছর। বলাই বাহুল্য, অনেকের মতো আমরাও তৈরি করেছিলাম আমাদের গোয়েন্দা দল; ইমু, ইভান, আমি ও পরবর্তীতে রঞ্জুর সঙ্গে। অবশ্য তারও আগে আনন্দ, জয় ও আমি মিলে গড়েছিলাম আরেকটি বাহিনী। তিনজনের নামের আদ্যাক্ষর মিলিয়ে সেটার নাম ছিলো ‘জ্যাক’। আর সমরেশ মজুমদারের অনন্য উপন্যাস ‘গর্ভধারিণী’ পড়ে আনন্দ তো মাঝে মাঝেই বলতো আনন্দ-সুদীপ-কল্যাণের কথা। সেক্ষেত্রে জয়িতা হিসেবে সুহৃদা জয়ন্তী তো ছিলোই। কৈশোরেই পড়েছিলাম আমার অন্যতম প্রিয় বই ‘থ্রি কমরেডস’। এরিক মারিয়া রেমার্কের ওই কালজয়ী সৃষ্টি এখনও ছাপিয়ে যায় অন্য সব অনুভূতিকে। কলেজ জীবনে সোহাগ-করবী-কল্লোল এ তিনের বন্ধুত্ব ছিলো অন্যদের আলোচনার বিষয়। আমরা নিজেরাও বেশ গর্ব করতাম বন্ধুত্বের ত্রয়ী হিসেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমনই ত্রয়ী গড়ে উঠেছিল উজ্জ্বল-এমিল-কল্লোল কিংবা সনেট-ফাহিম-সোহাগ মিলে।
স্নাতেকর পর যখন সব ছড়িয়ে পড়লাম, বন্ধু এমিল আর সনেটের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের ফলে গড়ে উঠেছিলো আরেকটা বন্ধুত্বের ত্রিভূজ। পেশার তাগিদে সে ত্রিভূজের তিন শীর্ষবিন্দু ছড়িয়ে পড়েছে আফগানিস্তান, কম্বোডিয়া আর বাংলাদেশে। থ্রি ইডিয়টস সেই বিন্দুগুলোকেই আরেকবার স্পষ্ট করে দিলো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




