১.
জয়িতাকে প্রথম যে দিন দেখেছিলাম, আর দশটা মেয়ের মত ওকেও মনে হয়েছিল কেবল’ই মেয়ে, মানুষ হিসেবে দেখিনি। আসলে ঐ উঠতি কৈশোরে আর কিছু মনে না আসাটাই হয়তো স্বাভাবিক। আর দশটা মেয়ের মতই দিব্যি ও ইশ্কুলে আসতো, যেতো, আর আমিও পারতোপক্ষে ওর সাথে কথা বলতামনা, যেমন বলতামনা আর দশটা মেয়ের সাথে। ছেলে বন্ধু, আর তাদের mindless আড্ডা, সেটাই তখন যথেষ্ট ছিল আমার জন্য। সূতরাং, তাকে আমার চোখে পড়েনি, কিংবা, বলা ভালো আমাকে তার চোখে।
২.
সেদিন খুউব বৃষ্টি হয়েছিল, আমি কোনমতে ছাতা’র নিচে নিচে সাইকেল’টা স্ট্যান্ড এ রেখে ক্লাস রুমে পা বাড়াচ্ছি, হঠাৎ দেখি বারান্দায় ভিজে চুপসে কাক হয়ে আছে মেয়েটা, দেখে খুউব অবাক হয়ে বললাম, “এতো ভিজেছো? জ্বর আসবেতো।” কিচ্ছু বলেনি উত্তরে, শুধু হেসেছিল একটু। কি আশ্চর্য্য, তারপর পুরো বর্ষাজুড়ে কেবল তার ভিজে চলা, আর আমার বলা, “এতো ভিজেছো, জ্বর আসবে তো”, তারপর, তার সেই হেসে চলা...
৩.
এভাবেই একদিন একটা চিঠি পেলাম, “তুমি আমাকে বৃষ্টিতে ভিজতে না করো কেন? বৃষ্টি যে আমার খুউব প্রিয়, বাসায়তো ভিজতে পারিনা, তাই ইশ্কুলে ভিজি। আমার কখনো জ্বর আসেনা...” এবার হাসার পালা আমার, আমি যে বৃষ্টি বড্ড পছন্দ করি, ওকে যে বড্ড হিংসে হয়... আমার মা যে ভিজলেই বড় বকবে... এটা কি ও জানে?
৪.
হঠাৎ করে আজ জয়িতা’কে খুউব মনে পড়ছে, আমরা খুউব ভালো বন্ধু ছিলাম, হঠাৎ করে পাওয়া আমার বন্ধু, প্রথম সে জন যার সাথে জন্ম আমার ভেতরের আমার... আমার চিন্তার... আমার চেতনার...
সেই চিঠিগুলো, শান্ত স্যার, সেই তর্ক, সেই uncultured আমি... পিছনে তাকিয়ে দেখি, আট বছর পরেও তারা দিব্যি আমায় অনায়াসে করে ফেলে nostalgic...
মানুষ কি সত্যি সব পিছে ফেলে আসতে পারে?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




