রাষ্ট্রকনডম
আখতারুজ্জামান আজাদ
এক রাজ্যে একটি অশীতিপর লম্পট আছে,যে একদা সর্বশক্তিমান ছিল।
লম্পটটি রাজ্যের প্রজাদের রিজিক বণ্টন করত,
রাজ্যের বৃষ্টিবাদল নিয়ন্ত্রণ করত,
দৈনিক ২৪টি অধ্যাদেশ নাজিল করত
এবং যার ইচ্ছা তার জান কবজ করত।
জুব্বা-হাফশার্ট-পেঙ্গুইনকোট নির্বিশেষে মুরিদ উপগ্রহেরা তাকে অনবরত তাওয়াফ করত।
সে চাইলেই যে কাউকে উপপত্নী বানাতে পারত,
অন্তর্বর্তীকালীন স্ত্রী কিংবা প্রেমিকা বানাতে পারত,
যে কাউকে দাঁড় করাতে পারত কিংবা শোয়াতে পারত।
লম্পটটি শুয়ে থাকলে তার মুখে কুকুরের হাড়ের মতো রক্ষিতার স্তন ঝুলত,
নগ্ন হলে দশ দিক থেকে দশ উপপত্নী তার শিশ্ন চুষত।
ধর্ষকটি কেবল নারীধর্ষণ করত না;
বহুশাখাবিশিষ্ট মহাশিশ্নটি দিয়ে-
সে নদীধর্ষণ করত,পাহাড়ধর্ষণ করত;
মসজিদধর্ষণ করত,আদালতধর্ষণ করত;
টেলিভিশনধর্ষণ করত,কবিতাধর্ষণ করত;
এমনকি মানিক মিয়া এভিনিউর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী দালানটিও ধর্ষণ করত!
৭০ কিংবা ৭০শ নয়,৭০লক্ষ শিশ্নের সমশক্তি ছিল তার মহাশিশ্নে!
একদিন,
যখন রাজ্যের সমস্ত নদী-পাহাড়-মসজিদ-আদালত-কবিতা বিদ্রোহ ঘোষণা করল,
উপগ্রহ-উপপত্নী-রক্ষিতারা প্রাসাদ ছেড়ে বেরিয়ে এল,
লম্পটের বীর্যোত্পাতে গোটা রাজ্য চিটচিটে হয়ে গেল,
লম্পটের মলমূত্রের পূতিগন্ধে গোটা বিশ্ব নাকে রুমাল চাপল,
আরবপ্রভুরা দিনার-দিরহাম-রিয়াল-খয়রাত বন্ধ করে দিল,
ঠিক তখনই,ঠিক তেমনই এক কুক্ষণে-
উনিশ শ আটাশি সালের নয়ই জুন,
লম্পটটি একটি ঐশী কনডম কুড়িয়ে পেল--রাষ্ট্রধর্ম!
বহুশাখাবিশিষ্ট মহাশিশ্নে মহাকনডমটি পরে
লম্পটটি আবার শুরু করল মহাধর্ষণযজ্ঞ!
কনডমটি পরায়
সে নিজে নিশ্চিন্ত-নির্বিঘ্ন-নিরোগ থাকল,
অধিক যোনি ধর্ষণ করতে পারল,
ধর্মশেয়ালগুলো অবাকবিস্ময়ে হুক্কাহুয়া করতে লাগল,
মরুভূমি থেকে জাহাজে জাহাজে পালে পালে মাদি দুম্বা আসতে থাকল।
লম্পটটির বয়স হয়েছে,
পৌনে দু পা কবরে গেছে,
জুব্বা-হাফশার্ট-পেঙ্গুইনকোটের যৌথ আক্রমণে কনডমটিও শিশ্নছাড়া হয়েছে।
কনডমটি ছিঁড়ে দুশো সত্তর টুকরা করে এখন পরে আছে ২৯ ডিসেম্বরের সেকুলার মোল্লারা!
সাধারণ কনডম ডিসপোজ্যাবল।
রাষ্ট্রধর্ম-রাষ্ট্রকনডম পার্পেচুয়াল,
এরা যুগে যুগে ঘুরে বেড়ায় শিশ্ন থেকে শিশ্নান্তরে...
ঢাকা,২৩জুন ২০১১
কাব্যগ্রন্থ : সামরিক কবি, বেসামরিক প্রেমিক
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৩