somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাঝে মাঝে যদি তব দেখা পাই - ৪র্থ পর্ব

১৩ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[৪]
বিকালে লাবণীর দেয়া পাঞ্জাবীটা পরে কেমন যেন উশখুশ লাগছিল । মনে হচ্ছিল, পাঞ্জাবীটাও যেন বুঝে গেছে, আমি এটার যোগ্য না । পুরো এক ধরণের অস্বস্তি নিয়ে গিটারটা কাঁধে নিয়ে রুম থেকে বের হলাম । রিফাত ঘুমোচ্ছে । অর্ক বাইরে । ওর পাঁচ মিনিট এখনও শেষ হয় নাই ।

ফজল মামু’র দোকানটা আসলে ঠিক দোকান বলা যায় না । কি নামে বলা যায়, সেটা আমি নিজেও জানি না । শাহবাগ এর পি জি হাসপাতালটার পাশে, একটা বড় ধরণের চা-রুটি বেচার মেলা হয় । ফজল মামু সেখানকার বিক্রেতাদের মধ্যে একজন । শাহবাগ মোড়ের ঠিক পাশেই এ জায়গাটাতে যারাই গিয়েছেন , একবার হলেও তাদের চা এর তৃষ্ণা পাবেই । প্রতিদিনই বেশ ভিড় থাকে এদিকটায় । চা, সিগারেট এর সাথে রাজনীতি, মঞ্চ নাটক, গানের স্টেজ শো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলে অনবরত । আমি চুপচাপ এক কাপ চা নিয়ে বেঞ্চিতে বসে গেলাম ।
একটু পরই পিছন থেকে আমার চুলে টান অনুভব করতে লাগলাম । বুঝলাম, লাবণী ।
“তোকে তো ফাটাফাটি দেখাচ্ছে ।”
“থ্যাংকস ফর দ্য নাইস চাপা” নিরস মুখে উত্তর দিলাম আমি ।
“আরে না, সত্যি । এখন যদি তোর চুলগুলো বেণী করে দেয়া যায় । তাহলেই চলে । তোর ভাষায় ‘অছাম’ ।”
ভাগ্য ভালো চা-টা মুখে নিই নি তখন । নাহলে, বিষম খেতাম ।
“সারপ্রাইজটা কি?”
“আছে, আছে । চা শেষ কর আগে ।”
চা শেষ করে টি এস সি’র দিকে হাঁটা দিলাম । লাবণী একমনে বক বক করেই যাচ্ছে । বেশীরভাগই ক্লাস আর লেখাপড়া নিয়ে । আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে ওর কথা শুনে যেতে লাগলাম । ঢাকার অনেক জায়গাতেই গাছ-পালা তেমন দেখা যায় না । এখানে কিছু কিছু দেখা যায় । মাঝে মাঝে কাক, শালিক আর ঘুঘু ছাড়াও অন্য পাখি দেখছি । নাম জানা নেই । তবে ঢাকার প্রকৃতির তুলনায় মানুষজন বেশী আকর্ষণ করে । যেমন, চারুকলা গেট থেকে একটু এগিয়ে যে ছাউনিটা দেখা যায়, সেখানে বাজে দুর্গন্ধে বসা ই যায় না । অথচ, সেখানেও একজন মহিলা তার দুপাশে দু’টা বাচ্চাকে নিয়ে শুয়ে আছেন । মাঝেমাঝে অবাক হয়ে যেতে হয়, তাদের সহনশীলতা দেখে ।
হাঁটতে হাঁটতে টি এস সি মোড়ে পৌঁছে গেছি, আমি আর লাবণী । এই সময় লাবণী হঠাৎ করেই আমার দিকে তাকাল, “তোর গলায় গান শুনবো । গিটার নিয়ে শুরু কর ।”
“এই মাঝ রাস্তায়?” মনে মনে বললাম, মাইয়া কয় কি !
“মাঝ রাস্তা কই ? আচ্ছা চল, ওখানে বসার জায়গাটাতে ।”
আমি তারপরও গাই-গুই মেরে বলতে লাগলাম ... এই খোলা জায়গায় কেন... মানুষজন হাসাহাসি করবে... পরে কোনোদিন... । কিন্তু লাবণীর ক্যামিকেল রি-একশন এ ভরা মাথায় তা ঢুকল না । বাধ্য হয়ে আমাকে গান শুরু করতেই হল ।
“ভ্যান গগের ছবি, রিভালদির সুর, অলিভার স্টোনের মুভি আর আমার পাকা চুল,
রান্নাঘরের নিভানো চুলা, তোমার চুলে কৃষ্ণচূড়া,
লা...লা.. লা... ”
আমার গান শুনে লাবণীর ভালো লাগল নাকি খারাপ, কিছুই বুঝলাম না । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “ইরফু... ফাট্টাফাট্টি । তোর লেখা গান?”
এইবার আমার অবাক হওয়ার পালা । হা হয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “তু..তুই সুমনের গান শুনিস না?”
“সুমন কে?”
“অর্থহীনের সুমন । বেজ বাবা ।”
“অর্থহীন টা কি?”
এতক্ষণে আমি বুঝলাম, এই মেয়ের সাথে এই বিষয়ে কথা বলে লাভ নেই । গানই শুনে না ।
“কিছু না । বাদ দে ।… হাঁটবি নাকি বসেই থাকবি ?”
“হাঁটি... চল ।”
আবারও হাঁটতে লাগলাম আমরা । আমার হল, মানে মহসীন হল এর দিকে । তবে হল এখান থেকে এখনও অনেক দূর । লাবণী, আমি দু’জনই চুপচাপ । কিছুক্ষণ পর জুনিয়র ব্যাচের কিছু মেয়েকে দেখে, আমি লাবণীর দিকে একবার তাকিয়ে মেয়েগুলোর দিকে আড়চোখে তাকাতে লাগলাম । মেয়েগুলো আমাদের পার করে যাবার পর চুলে হ্যাঁচকা টান পড়লো আমার ।
“লুইচ্চা কোনখানের ...”
“হু, তোর কি । তুই কি চাস সারাজীবন ব্যাচেলর থেকে তোর সাথে ঘুরে বেড়াই ?”
“কেন? আমার সাথে ঘুরতে তোর খুব খারাপ লাগে?”
“সেইটা না । তুই মাঝে মাঝে যেই অত্যাচারগুলো করিস... উফফ”
“কি অত্যাচার করি ? হু ? ” চশমাটা ঠিকঠাক করে ঝগড়ার প্রস্তুতি নিতে লাগলো লাবণী ।
“এই যে, এখনও আমার চুল ধরে টানছিস । আমার ব্যথা লাগে না ?”
“তুই একটা বুইড়া, ধামরা তোর আবার ব্যথা লাগে কিভাবে...” আবার আমার চুল ধরে টানতে লাগল ।
“প্লীজ আমার চুল ছাড়... প্লীজ । যা, তুই ভাল । তুই লক্ষ্মী । তোর মত মেয়ে দুনিয়াতে আর নাই ...”
“সত্যি ? ঠিক তো ?” ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল হতচ্ছারী, দজ্জালনী ।
“হু হু ... কসম । ঐ সুন্দরী মেয়েগুলোর কসম ।”
লাবণী আমার চুল ধরে হাত ঝাড়তে লাগল, যেন বালু লেগেছিল । স্পষ্ট অপমান । আমি কি ছেড়ে দিব নাকি ! বললাম, “আহ । বাঁচলাম । জলহস্তীর হাত থেকে ।”
যা ভেবেছিলাম, তা-ই । আমার চুলের দিকে হাত গিয়ে লাবণী দেখে, আমি নিরাপদ দূরত্বে । আমি প্রায় দৌড়ের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছি । “ঐ দাঁড়া । তোর সবগুলো চুল যদি না ছিঁড়ি , তাহলে...” আমি ততক্ষণে দৌড় দিয়ে ফেলেছি । কিছুক্ষণ পরেই দেখি বুদ্ধিজীবী চশমা হাতে নিয়ে হাঁপাচ্ছে । আমিও থামলাম । গিটার কাঁধে নিয়ে রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি করা খুব ভাল কিছু না । অনেকেই তাকিয়ে আছে আমার দিকে । লাবণীর পাশে গিয়ে রাস্তার পাশে ফুটপাথে বসে গেলাম । হাঁপাতে হাঁপাতেই জিজ্ঞেস করলাম, “যাবি কোথায় ?”
লাবণীও হাঁপাতে হাঁপাতে উত্তর দিল, “কাঁটাবন।”
“ঐখানে কি কাজ ? খরগোশ কিনবি? ”
“ নাহ । তোকে বিক্রি করব । লেজকাটা বানর । দাম বেশী পাওয়ার কথা ।” উফফ... বুদ্ধিজীবীর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি মারতে ইচ্ছে করে ।
“তাহলে, রিকশা নেই ?”
“নাহ । হেঁটে যাব । তোর সাথে রিকশায় ওঠার কোন ইচ্ছা নাই আমার । আর, তুই না বললি, আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি । হেঁটে যাওয়াই ভালো ।”
আমার চোখ কপালে ওঠার মত অবস্থা । মাইয়া কয় কি !
“এতদূর হাঁটতে পারবি ?”
“পারব ।”
“তাহলে ওঠ ।”
“দাঁড়া ।” বলেই আমার চুল ধরে জোরে টান দিয়ে খিলখিল করে হেসে বলল, “এইবার যাওয়া যায় ।” বলেই হাঁটা শুরু করে দিল । এই মেয়ের মাথার স্ক্রু জন্মসূত্রে ঢিলা । তাই আমি শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে লাবণীর পিছু পিছু, ঘামতে ঘামতে হাঁটতে লাগলাম । হতচ্ছারী, দজ্জাল যদি আমাকে হাঁটানোর জন্যই নিয়ে আসত, তাহলে গিটারটা আনতে বলল কেন । সব মিলিয়ে আমার অবস্থা হল ভয়াবহ । তারপরও মাঝে মাঝে স্বস্তির মত কয়েকটা সুন্দরী মেয়েকে দেখা যেত । এটাই যা একটু ভাল দিক ।
হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে কাঁটাবন মোড়ে পৌঁছলাম । লাবণীর অবস্থা প্রায় খারাপ । জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বলছে, “সব তোর দোষ।” ইচ্ছে করলেই গলা কাঁপিয়ে ঝগড়া শুরু করে দিতে পারতাম, কিন্তু করলাম না । কিছুক্ষণ পরই আমার ক্লান্তির বদলে ভয় জায়গা পেতে লাগল মনে, যখন দেখলাম, লাবণী একটা দোকানে ঢুকে আমার দিকে হাত নাড়ছে । মুহূর্তের মধ্যে আমার চলে গেল পাঞ্জাবীর পকেটে । একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। অন্যদিন কার মত আজ শুধু পাঁচ টাকা নিয়ে বের হইনি । একশ’ টাকার একটা নোট আছে । ... লাবণী আইসক্রিম দেখছে । কোন আইসক্রিম নিলো দু’টা । আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম, টাকাটা লাবণী নিজেই দেয় কি না । কিন্তু, সেদিকে লাবণীর কোন ইচ্ছে আছে বলে মনে হল না । তাই আমিই পকেট থেকে নোটটা বের করে ইচ্ছে করেই মুচড়ে দোকানদারকে দিলাম । ... এর আগেও ভার্সিটির ক্যান্টিনে লাবণীর সাথে দেখা হলে, আইসক্রিম কিনে দিতে হত । সাধে সাধে কি আর মুটকি ডাকি !
“আইসক্রিমটা বেশ মজার, তাই না রে ? নতুন ফ্লেভার দিয়েছে বোধহয় ।”
মনে মনে ভাবছি, আমার কাছে পাঁচ টাকার বরফ যা, ত্রিশ টাকার কোনও তা । টাকা তো যায়, আমার পকেট থেকেই ।
লাবণী যেন আমার মনের কথা বুঝতে পেরেই বলল, “চিন্তা করিস না । তোর আর আমার জন্য এভাবে টাকা খরচ করা লাগবে না ।” কিছু না বলে শুধু ভুরু নাচালাম আমি ।
“বলেছিলাম না, আজ একটা সারপ্রাইজ আছে ?”
“হু । স্কলারশিপ-টিস্কলারশীপ পাইছিস নাকি ?”
“হ্যাঁ । এ স্কলারশিপ টু ফাদার-ইন-ল’স হাউজ ।”
“আমি ইংরেজি কম বুঝি । বাংলায় বল ।”
লাবণী একেবারে ভাবলেশহীন ভাবে আইসক্রিমে কামড় দিয়ে বলল, “আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ।”
কাশতে কাশতে প্রায় দম বন্ধ হয়ে যাবার মত অবস্থা হল আমার । কোনোমতে নিজেকে সামলে জিজ্ঞেস করলাম, “তোকে বিয়ে করবে কে ?” লাবণী এবার মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলতে লাগল, “কেন, আমার চেহারা কি খুব খারাপ ? আমার বিয়ে হতে পারে না ?”
মনে মনে ভাবলাম, “জেনে-শুনে জলহস্তী ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিবে কোন আহাম্মক !” মুখে বললাম, “হুমম... তা তো বটেই । বিয়ে তো হতেই পারে ।... এটাই তোর সারপ্রাইজ ?”
“হু । তুই খুশি হয়েছিস না ? তোকে আর টাকা ভাঙ্গিয়ে আমাকে আইসক্রিম খাওয়াতে হবে না , আমার সাথে সাথে লাইব্রেরীতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমোতে হবে না , সারা মার্কেট ঘুরে ঘুরে হয়রান হতে হবে না...” লাবণী হাসিমুখে কথাগুলো বললেও, ওর কণ্ঠে কেমন যেন একটা ‘মন খারাপ’ , ‘মন খারাপ’ ভাব ছিল । আমি কিছু না বুঝে লাবণীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম ।
“তোর কি বিয়েতে মত নেই ? জামাই পছন্দ হয় নাই ?”
“হবে না মানে ! ফাটাফাটি টাইপ ছেলে । বুয়েটে আর্কিটেকচার থেকে পাস করেছে দু’বছর আগে । পি,এইচ,ডি করতে যাবে, কিছুদিন পর । হুলস্থূল ব্যাপার ।”
আমি এবারে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললাম, “তাহলে তো সব কিছু ভালোই । তোর মুখ গোমড়া গোমড়া কেন ?”
“কই না তো...” বলেই হাসার চেষ্টা করল লাবণী । কিন্তু জোর করে হাসা হাসি ; মন থেকে নয়, বোঝাই যাচ্ছে । আমি কি বলব, কি করব, তা ও বুঝতে পারলাম না । বিমূঢ়ের মত বসে বসে আইসক্রিমটা শেষ করতে লাগলাম । কিছুক্ষণ পর লাবণীকে উঠে দাঁড়াতে দেখে আমিও দাঁড়ালাম । লাবণী আমার দিকে ফিরে বলল, “ইরফু, তোর কি একটুও খারাপ লাগছে না ?” আমি মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করলাম, “কি বিষয়ে ?”
“এই যে আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ।” আমি আবারও মাথা চুলকে ভাবতে লাগলাম, বিয়ে করা তো শুভ কাজ । মন খারাপ হবে কেন তাহলে । এতদিন আমাকে গাধার মত খাটানো শেষে এখন জামাইকে গাধার মত খাটাবে, সেইটা ভেবে আমার উলটো স্ফূর্তি স্ফূর্তি টাইপ লাগছিল । মন খারাপ হবে কেন, সেইটা আমার মাথার অ্যান্টেনাটা ঠিকভাবে ধরতে পারছিল না । আমি লাবণীর দিকে তাকিয়ে নির্দোষ ভাবে একটু হাসার চেষ্টা করতে লাগলাম । লাবণী আমার দিকে তাকিয়ে হতাশ ভাবে মাথা নেড়ে বলল, “আমারই দোষ ছিল । শুধু শুধুই...” কথাটা শেষ না করেই বলল, “অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে । তুই হলে চলে যা । আমার একটু শাহানার বাসায় যাওয়া লাগবে ।”
শাহানার বাসা এলিফেন্ট রোডের মোড়ের দিকে । আমি শাহবাগ মোড়ের দিকে হাঁটা শুরু করলাম । একটু হেঁটে পিছনে ফিরে দেখি, লাবণী এখনও দাঁড়িয়ে আছে । চোখ থেকে চশমাটা খুলে নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে । লাবণীর আচরণে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না আমি । আমি আবার হাঁটতে শুরু করলাম । আকাশের দিকে তাকালাম একবার । শেষ বিকেলের হলদে লাল একটা আভা । রাস্তা ভর্তি আজ অনেক সুন্দরী ললনা । কিন্তু আমার সেদিকে তাকাতে ইচ্ছে করছে না কেন যেন । হঠাৎই মন খারাপ হওয়া শুরু করল আমার । লাবণী কি কিছু বলতে চেয়েছিল ? কি বলতে চেয়েছিল ? আর বলল না-ই বা কেন ?
হোস্টেলে রুমে ঢুকেও মন খারাপ ভাবটা গেল না আমার । দিনের আলোর এখনও কিছুটা অবশিষ্ট আছে । জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম, একটু একটু মেঘ করছে আকাশে । মাঝে মাঝে বিদ্যুতও চমকাচ্ছে । আচ্ছা, এমন কি হতে পারেনা যে, লাবণী আমাদের এতদিনের বন্ধুত্বের স্মৃতিটা ভুলতে পারছে না, তাই হয়তোবা মন খারাপ ? হতে তো পারেই । ... কিন্তু মনের মাঝের খটকাটা যাচ্ছে না ।
হঠাৎ করে আমারও সব মনে পড়তে লাগল । টি এস সি তে আড্ডা, লাবণীর আমার চুল ধরে টানার অভ্যাসটা, লাবনীর এসাইনমেন্ট এনে লুকিয়ে রাখা, বকুল তলার আড্ডায় ওকে মুটকি বলে খেপানো ... স.........ব ।
আচ্ছা, লাবণীকে কি ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করব, ও কি বলতে চেয়েছিল ? ধুর... কেমন যেন দেখায় । পরে আবার নিজেকেই হাসির পাত্রে পরিণত হতে হবে ।
বাইরে ঝড় শুরু হয়ে গেছে । আমি পকেট এ যা কিছু ছিল সব বিছানার চাদরের নিচে রেখে দরজার দিকে যাওয়ার সময় অর্ক বলল, “এই ঝড়ের মাঝে কই যাস ?” আমি উত্তর দিলাম না । বেরিয়ে গেলাম । নিজেকে কষ্ট দিতে ইচ্ছে হচ্ছে । অনেক, অনেক... অনেএএএএক কষ্ট । আর সেদিনই প্রথম বৃষ্টির জলের সাথে আমার চোখের জল মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল । যেন দুঃখবিলাস !
(চলবে)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×